Advertisement
E-Paper

হাজির দিদির দূত, তৃণমূলে ‘রুদ্ধদ্বার’

গত মাসেই কেশপুরে এসেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আনন্দপুরে জনসভা করেছিলেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৩ ০৯:৪৯
‘রুদ্ধদ্বারে’ বৈঠক শাসকদলের।

‘রুদ্ধদ্বারে’ বৈঠক শাসকদলের। প্রতীকী চিত্র।

কেশপুরে ‘রুদ্ধদ্বার’ বৈঠক হল তৃণমূলের। বুধবার দুপুরে। হাজির থাকলেন দলের ‘যুযুধান’ পক্ষের নেতারা। হাজির থাকলেন ‘দিদির দূত’। বৈঠক শেষে ‘স্পিকটি নট’ দু’পক্ষের নেতারাই! এত চুপচাপ কেন, ‘দিদির দূত’ কী দাওয়াই দিলেন? বৈঠক শেষে এক নেতার মন্তব্য, ‘‘দল সব নজরে রেখেছে। কথা বলা একেবারে বারণ!’’ সব পক্ষের নেতাদের নিয়ে শীঘ্রই ফের এক বৈঠক হতে পারে বলে দলের এক সূত্রে খবর। বৈঠকটি কলকাতায় হতে পারে। পরের বৈঠকটি কোথায় হবে? কালীঘাটে, না ক্যামাক স্ট্রিটে? ওই নেতার জবাব, ‘‘জানি না। কোথায় হবে, এদিন জানানো হয়নি। পরে জানানো হবে।’’

গত মাসেই কেশপুরে এসেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আনন্দপুরে জনসভা করেছিলেন তিনি। কেশপুরে দল দ্বন্দ্বে জীর্ণ। অজানা নয় তাঁর। দলের কোন্দল ঠেকাতে সভা থেকেই কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন অভিষেক। কেশপুর অবশ্য থেকে গিয়েছে কেশপুরেই। কয়েকদিন আগেই দোগাছিয়ায় মারামারিতে জড়ায় তৃণমূলের দু’পক্ষ। জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন জাহাঙ্গীর খান সহ কয়েকজন। জাহাঙ্গীর দলের কেশপুর ব্লক সভাপতি। ঘটনায় শোরগোল পড়ে। অস্বস্তিতে পড়েন দলীয় নেতৃত্বও। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এ দিনের এই ‘রুদ্ধদ্বার’ বৈঠক। দলের এক সূত্রের দাবি, রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশেই বৈঠকটি হয়েছে।

বৈঠকে কী নিয়ে কথা হল? মন্ত্রী তথা কেশপুরের বিধায়ক শিউলি সাহার দাবি, ‘‘এদিন কেশপুরে দলের কোনও বৈঠক ছিল না। আমি দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচি করছি। এলাকায় ঘুরে ঘুরে। এদিন দিদির দূতদের নিয়ে বসেছিলাম।’’ তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুরের কো- অর্ডিনেটর অজিত মাইতির ব্যাখ্যা, ‘‘আমরা কয়েকজন মিলে বসেছিলাম। এটা সাংগঠনিক ব্যাপার। সংবাদমাধ্যমে বলার মতো নয়!’’ সামনে পঞ্চায়েত ভোট। অনুমান, ভোটের আগে দলের কোন্দলই মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে নেতৃত্বের। কোন্দলে রাশ টানতে তৎপর তাঁরা। দলের এক সূত্রে খবর, এদিনের ‘রুদ্ধদ্বার’ বৈঠকে ছিলেন তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুরের কো- অর্ডিনেটর অজিত মাইতি, বিধায়ক শিউলি সাহা, দলের ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি আশিস হুতাইত প্রমুখ। ডাকা হয়েছিল দলের ব্লক সভাপতি প্রদ্যোত পাঁজা, জাহাঙ্গীর খান সহ দলের তিন ব্লক সহ সভাপতিকে। পাশাপাশি ডাকা হয়েছিল দলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি সঞ্জয় পান, উত্তম ত্রিপাঠী প্রমুখকে। দলের এক নেতা শোনাচ্ছেন, ‘‘বৈঠকে দিদির একাধিক দূত ছিলেন। মনে হচ্ছে, ওঁদের একজনকে এর আগে অভিষেকদার অফিসেও দেখেছি।’’ অজিতের অবশ্য দাবি, ‘‘আমরাই আলোচনা করেছি। কলকাতার কেউ ছিলেন না।’’

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কেশপুরে দলের ‘যুযুধান’ পক্ষকে নিয়ে এই বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। দলের এক সূত্রে খবর, পঞ্চায়েতে তৃণমূলের রণকৌশল কী হবে, তা নিয়ে কিছু আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। ব্লক নেতাদের অঞ্চলওয়াড়ি দায়িত্ব বন্টন নিয়ে প্রাথমিক কথা হয়েছে। নেতৃত্বের তরফে স্পষ্ট করা হয়েছে, কাউকে বাদ দিয়ে দলের কাজ করা যাবে না। সবাইকে নিয়ে কাজ করতে হবে। এও স্পষ্ট করা হয়েছে, কেউ নিজের এলাকায় জিতেও অন্যের এলাকায় হারের ব্যবস্থা করলে তাঁর বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নেবে। এবং সে ব্যবস্থা যে কঠোর হবে, তা-ও স্পষ্ট করা হয়েছে। এ দিনের বৈঠকে ডাক পাননি ’৯৮- ২০০০ সালে কেশপুরের তৃণমূলের ‘রবিনহুড’ মহম্মদ রফিক। রফিক বলেন, ‘‘শুনেছি বৈঠক হয়েছে। তবে বৈঠকের ব্যাপারে আমায় কেউ কিছু জানায়নি।’’

Keshpur tmc meeting
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy