দেখা নেই পুবালি বাতাস আর ইলশেগুড়ি বৃষ্টির। তাই সমুদ্রেও দেখা মিলছে না ‘রুপোলি শস্য’র। জালে তেমন দেখা নেই অন্যান্য মাছেরও। এদিকে লাগাতার দাম বাড়ছে ডিজেলের। অথচ মরসুমেও সামুদ্রিক মাছের দেখা না মেলায় আশঙ্কায় মৎস্যজীবী থেকে ট্রলার মালিকেরা।
গত ১৫ জুন থেকে উঠে গিয়েছে মাছ ধরায় কেন্দ্র সরকারের ‘ব্যান পিরিয়ড’। সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছে কয়েকশো মাছ ধরার ট্রলার। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাঁচশ কেজির কম ইলিশ উঠেছ মৎস্যজীবীদের জালে। সপ্তাহ দুয়েক ধরে জালে ধরা পড়েছে শুধু চিংড়ি আর পমফ্রেট, ভোলা মাছ। দৈনিক চারশো থেকে সাড়ে চারশো টন মাছ দিঘা মোহনা বাজারে এসেছে বলে জানা গিয়েছে। অথচ গত বছর এমন সময় চিংড়ি এবং পমফ্রেট মাছ নিয়মিত পাঁচশো টন আমদানি হত বলে জানালেন মাছ ব্যবসায়ীরা। মাছের এ গেন আকালের জন্য সমুদ্রে বটম ট্রলিং অর্থাৎ মাটি আঁকড়ে জাল টানার পদ্ধতিকেই দায়ী করেছেন কেউ কেউ।
মৎস্য দফতর সূত্রে খবর, দিঘা এবং সংলগ্ন এলাকায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় সাড়ে তিন হাজার ট্রলার রয়েছে।যার মধ্যে হাজার দুয়েক ট্রলার শুধুমাত্র ইলিশের উপরে নির্ভর করে। বাকি ট্রলারগুলি আগামী সেপ্টেম্বর মাস থেকে সমুদ্রে মাছ ধরতে যাবে। এবছর দেড় হাজারের বেশি ট্রলার মরসুমের শুরু থেকেই ইলিশের সন্ধানে গভীর সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছিল। কিন্তু মাছ সে ভাবে না পাওয়ায় বহু ট্রলারমালিকই আর সমুদ্রে ট্রলার নামাতে চাইছে না বলে মৎস্যজীবী সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে। মাছের আকালের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জ্বালানি তেলের লাগাতার দাম বৃদ্ধি। যার ফলে ইতিমধ্যে ভর্তুকিতে পেট্রল এবং ডিজেল দেওয়ার দাবিও তুলেছেন মৎস্যজীবীরা। দিঘা ফিশারম্যান অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস বলেন, ‘‘প্রকৃতি এবার বিমুখ। সমুদ্রে ইলিশের দেখা মিলছে না। অন্যান্য সামুদ্রিক মাছও পাওয়া যাচ্ছে না। পমফ্রেট এবং চিংড়ির মতো যেসব মাছ পাওয়া যাচ্ছে সেগুলিরও দাম একেবারে নেই বললেই চলে। চিন, জাপান সহ বিদেশে ওইসব মাছ রফতানি আটকে গিয়েছে। তার উপর যোগ হয়েছে পেট্রল-ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে তাতে আগামী এক মাসের মধ্যে অনেকে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবেন।’’