E-Paper

ব্রাত্যর বৈঠক, মারপিট ছাত্রদের

তিনতলায় শিক্ষামন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অমিয়কুমার পান্ডা, বন প্রতিমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা, জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল ও জেলার বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষদের নিয়ে বৈঠক করছিলেন তিনি।

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:১১
মারপিট দেখে অজ্ঞান ছাত্রী। শিক্ষামন্ত্রীর পাশ দিয়ে স্ট্রেচারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র

মারপিট দেখে অজ্ঞান ছাত্রী। শিক্ষামন্ত্রীর পাশ দিয়ে স্ট্রেচারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র ranjan pal

নয়া বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে বৈঠকে ব্যস্ত শিক্ষামন্ত্রী। একতলায় শুরু হল ছাত্রদের মধ্যে মারপিট। তা দেখে জ্ঞান হারালেন এক ছাত্রী। মারপিটের ঘটনা গড়াল থানা পুলিশ পর্যন্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃত্ব কার দখলে থাকবে তা নিয়ে টিএমসিপির অন্দরের দ্বন্দ্বের জেরেই এ দিনের মারামারি বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, সব ঘটনার রিপোর্ট নেবেন তিনি।

ঝাড়গ্রাম সাধু রামচাঁদ মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয়ে শুক্রবার এসেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনতলায় শিক্ষামন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অমিয়কুমার পান্ডা, বন প্রতিমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা, জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল ও জেলার বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষদের নিয়ে বৈঠক করছিলেন তিনি। বৈঠক চলাকালীন একতলায় পড়ুয়াদের সঙ্গে আলাপচারিতা করছিলেন জেলা টিএমসিপির সভাপতি বিশ্বনাথ মাহাতো। সেই সময় প্রতিবাদ জানান টিএসিপির প্রাক্তন জেলা সহ-সভাপতি অনুনয় ভট্টাচার্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন বিভাগের চতুর্থ সেমিস্টারের পড়ুয়া অনুনয়ের বক্তব্য ছিল, এখানে কোনও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করা যাবে না। এর প্রতিবাদ করেন তাঁরই সহপাঠী আনন্দ বারি, টিএমসিপির গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকের সহ-সভাপতি। শুরু হয় গোলমাল। মারপিট। আনন্দ গোষ্ঠীর সাঁওতালি বিভাগের মার্শাল হাঁসদাকে নামে এক ছাত্রকে মারধর করা বলে অভিযোগ। মার্শাল পরে থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

দু’পক্ষের মারপিট দেখে অজ্ঞান হয়ে পড়ে ভূগোল বিভাগের এক ছাত্রী। শিক্ষামন্ত্রী বৈঠক শেষে বেরোনোর পরই তাঁর সামনে স্ট্রেচারে করে ওই ছাত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয়। একতলার মারপিটের খবর অবশ্য তিনতলা পর্যন্ত পৌঁছতে সময় লেগেছে। ব্রাত্য পরে বলেন, ‘‘ছাত্রদের মধ্যে মারামারি হওয়া উচিত নয়। আমি রিপোর্ট নেব। এ সব বরদাস্ত করা হবে না।’’

এই বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএমসিপির সংগঠন তৈরি হয়নি। প্রাক্তন টিএমসিপির জেলা সভাপতি আর্য ঘোষের অনুগামী হলেন অনুনয়। অন্যদিকে, জেলা টিএমসিপির সভাপতি বিশ্বনাথ মাহাতোর অনুগামী হলেন আনন্দ। বিশ্ববিদ্যালয়ের রাশ কার হাতে থাকবে তা নিয়ে দু’জনের মধ্যে ঠান্ডা লড়াই চলছিল।

আর্য টিএমসিপির জেলা সভাপতি থাকাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাশ অনুনয় নিজের হাতে রেখেছিলেন। কিন্তু গত ২০ মার্চ টিএমসিপির নতুন তালিকা অনুযায়ী আর্য ও অনুনয় এই দু’জনেই টিএমসিপির কোনও পদে নেই। যদিও টিএমসিপির জেলা কমিটি গঠন এখন হয়নি। এদিকে বিশ্বনাথ নতুন জেলা সভাপতি হওয়ার পর আনন্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাশ নিজের হাতে টানতে চাইছেন।

অনুনয় বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও রাজনৈতিক সংগঠনের ইউনিট হয়নি। কিছু বহিরাগত এসে পড়ুয়াদের নজরদারি করছিল। প্রতিবাদ করতে গিয়ে মার খেয়েছি।’’ জেলা টিএমসিপির সভাপতি বিশ্বনাথ মাহাতো বলেন, ‘‘ছাত্র সভাপতি হিসেবে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম। কেন বহিরাগত বলেছে জানি না।’’ আর আনন্দ বলেন, ‘‘জেলা টিএমসিপি সভাপতি পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলছিল। তখন মার্শাল ও আমাকে মারধর করে অনুনয়।’’ উপাচার্যের বক্তব্য, ‘‘এটা একেবারেই বিচ্ছন্ন ঘটনা।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bratya Basu Jhargram

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy