আদিবাসী নেগাচারী কুড়মি সমাজের জেলা মহিলা সম্মেলন। —নিজস্ব চিত্র।
জাতিসত্তার দাবি আদায়ে এ বার মহিলা ব্রিগেড কুড়মিদের। ঝাড়গ্রাম জেলায় এই প্রথম কোনও কুড়মি সংগঠনের মহিলা শাখা গঠিত হয়েছে বলে দাবি আদিবাসী নেগাচারী কুড়মি সমাজের ‘মহামোড়ল’ (রাজ্য সভাপতি) অনুপ মাহাতোর।
মঙ্গলবার ঝাড়গ্রাম ব্লকের বালিভাসা চকের মুক্তমঞ্চে সম্মেলনের মাধ্যমে গঠিত হয়েছে নেগাচারী কুড়মিদের ৫১ জনের মহিলা জেলা কমিটি। মহিলা শাখার জেলা সভানেত্রী পদে কৌশল্যা মাহাতো ও জেলা সম্পাদক পদে খুকুমণি মাহাতোকে মনোনীত করা হয়। কুড়মিদের জাতিসত্তার দাবিতে ১৩ ফেব্রুয়ারি কলকাতার রানি রাসমণি রোডে জমায়েত ও নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে আদিবাসী নেগাচারী কুড়মি সমাজ। তবে কয়েক মাস ধরে কুড়মি সংগঠনগুলির যৌথ কমিটি ‘দৌওদিয়াকে খৌওসিয়া’ থেকে সরে এসে পৃথক কর্মসূচি করছেন অনুপরা। তা নিয়ে জল্পনাও রয়েছে।
মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদার গাড়িতে হামলার মামলার চার্জশিট থেকে অনুপের নাম বাদ পড়ায় লোকসভা ভোটের আগে নেগাচারী কুড়মিদের অবস্থান নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। তবে এ দিন মহিলা সম্মেলনের মঞ্চ থেকে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে অনুপ জানান, জাতিসত্তার দাবি জোরদার করতেই সংগঠনের মহিলা ব্রিগেড গড়া হয়েছে। মহিলাদের ঝাড়গ্রাম গ্রামীণ ব্লক কমিটিও গঠিত হয়েছে। ঝাড়গ্রাম ব্লকের সভানেত্রী পদে মেনকা মাহাতো ও ব্লক সম্পাদক পদে অপর্ণা মাহাতোকে সর্বসম্মতিক্রমে মনোনীত করা হয়। ঝাড়গ্রাম গ্রামীণ ব্লক মহিলা কমিটির সদস্য ৩১ জন। মহিলা শাখার জেলা সভানেত্রী কৌশল্যা মাহাতো বলছেন, ‘‘এরপর সব ব্লকেই মহিলা কমিটি হবে। জাতিসত্তার অধিকারের দাবিতে মহানগরীর পথে হাঁটবেন জঙ্গলমহলের কুড়মি মা, কাকি, বহিনরা।’’
এ দিন সম্মেলনে জেলার বিভিন্ন এলাকার কুড়মি মহিলারা এসেছিলেন। অনুপ জানান, ‘‘এরপর সম্মেলন করে ছাত্র ও যুবদেরও কমিটি গড়া হবে। সবাইকে একত্রিত করে আমাদের আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করাই লক্ষ্য। যাতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কানে আমাদের কথা পৌঁছয়।’’ আদিবাসী নেগাচারীদের অবস্থান প্রসঙ্গে অনুপ বলছেন, ‘‘আমাদের যদি রাজ্য সরকারের সঙ্গে বোঝাপড়া থাকত তাহলে কলকাতায় অবস্থান আর নবান্ন অভিযানের ডাক দিতাম না। আমাদের মূল দাবি, অবিলম্বে রাজ্যকে সিআরআই জাস্টিফিকেশন রিপোর্ট দিল্লিতে পাঠাতে হবে।’’ অনুপের আরও দাবি, ‘‘মন্ত্রীর গাড়িতে হামলার সময় আমি যে ঘটনাস্থলে ছিলাম না, সেটা তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় চার্জশিট থেকে আমার নাম বাদ গিয়েছে। তারপরও কেউ কেউ রাজ্যের শাসকদলের সঙ্গে আমাদের জড়িয়ে দিচ্ছেন।’’ আদিবাসী নেগাচারী কুড়মি সমাজের ‘জগ মহামোড়ল’ (রাজ্য সহ-সভাপতি) ফুলকা মাহাতো এবং সংগঠনের উপদেষ্টা স্বপন মাহাতোও বলছেন, ‘‘যাঁরা সামাজিক আন্দোলনের নামে বোঝাপড়ায় অভ্যস্ত, তাঁরাই কুৎসা করছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy