Advertisement
E-Paper

জেলার প্রথম ইংরাজি মাধ্যম মাদ্রাসা হচ্ছে কেশপুরে

পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রথম ইংরাজি মাধ্যম মাদ্রাসাটি তৈরি হচ্ছে কেশপুরে। ইতিমধ্যে তার অনুমোদন দিয়েছে রাজ্য সরকার। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রস্তাবিত সরকারি মাদ্রাসাটি তৈরির জন্য প্রায় তিন একর জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে এক কোটি টাকা বরাদ্দও করা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, “কেশপুরে একটি ইংরাজি মাধ্যম মাদ্রাসা তৈরি হবে। ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় অনুমোদন মিলেছে।”

বরুণ দে

শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:৩৩
এই জমিতেই তৈরি হবে মাদ্রাসা।  —নিজস্ব চিত্র।

এই জমিতেই তৈরি হবে মাদ্রাসা। —নিজস্ব চিত্র।

পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রথম ইংরাজি মাধ্যম মাদ্রাসাটি তৈরি হচ্ছে কেশপুরে। ইতিমধ্যে তার অনুমোদন দিয়েছে রাজ্য সরকার। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রস্তাবিত সরকারি মাদ্রাসাটি তৈরির জন্য প্রায় তিন একর জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে এক কোটি টাকা বরাদ্দও করা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, “কেশপুরে একটি ইংরাজি মাধ্যম মাদ্রাসা তৈরি হবে। ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় অনুমোদন মিলেছে।”

সংখ্যালঘু দফতরের জেলা আধিকারিক বিশ্বরঞ্জন মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছিল সদর ব্লকে এই মাদ্রাসা তৈরি হবে। পরে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে কেশপুরকে এই প্রকল্পের জন্য বাছা হয়। বিশ্বরঞ্জনবাবুর কথায়, “এই প্রথম জেলায় ইংরাজি মাধ্যম মাদ্রাসা তৈরি হতে চলেছে। এর ফলে, মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নতিই হবে।” জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র বলেন, “রাজ্য সরকার মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নে সব রকম চেষ্টা করছে। এই উদ্যোগ তার মধ্যে অন্যতম।” একই মত কেশপুরের বিডিও মহম্মদ জামিল আখতারের। তাঁর কথায়, “এর ফলে মাদ্রাসা শিক্ষার আরও প্রসার হবে।”

ইংরেজি মাধ্যম মাদ্রাসা তৈরির পরিকল্পনা শুরু হয়েছিল কয়েক বছর আগে। তবে বিষয়টি পরিকল্পনাস্তরেই রয়ে গিয়েছিল। জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, গত ১৮ সেপ্টেম্বর কেশপুরে ইংরেজি মাধ্যম মাদ্রাসা তৈরির জন্য অনুমোদন চেয়ে জেলা থেকে সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরে এক চিঠি পাঠানো হয়। ১৩ নভেম্বর সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতর থেকে চিঠি দিয়ে অনুমোদনের কথা জানানো হয়। এরপরই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ শুরু হয়। প্রস্তাবিত মাদ্রাসাটি তৈরি করবে পূর্ত দফতর। গত ২০ নভেম্বর চিঠি দিয়ে পূর্ত দফতরে বিষয়টি জানানোও হয়েছে। প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই মাদ্রাসায় প্রথম শ্রেণি থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত পড়াশোনা হবে। লেখাপড়ার সুযোগ পাবে ছ’শো পড়ুয়া। ছাত্র ও ছাত্রীদের জন্য আলাদা হস্টেলের ব্যবস্থাও থাকবে। দু’টি হস্টেল মিলিয়ে থাকতে পারবে ১২০ জন (৬০ জন ছাত্র, ৬০ জন ছাত্রী)।

পশ্চিম মেদিনীপুরে মোট ১৯টি মাদ্রাসা রয়েছে। এর মধ্যে ১৩টি হাই মাদ্রাসা। ৩টি সিনিয়র মাদ্রাসা এবং ৩টি জুনিয়র মাদ্রাসা। চলতি বছর জেলার ৯৩৩ জন মাদ্রাসা পরীক্ষা দিয়েছিল। এর মধ্যে ৩৭৭ জন ছাত্র, ৫৫৬ জন ছাত্রী। গত বছর ৮২২ জন মাদ্রাসা পরীক্ষা দিয়েছিল। এর মধ্যে ৩১৫ জন ছাত্র। ৫০৭ জন ছাত্রী। অর্থাত্‌, গত বছরের থেকে এ বছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে।

কেশপুরের চেচুড়া মৌজায় প্রস্তাবিত এই মাদ্রাসা গড়ে ওঠার কথা। এখানে বেশ কিছুটা সরকারি জমি রয়েছে। তার মধ্যেই প্রায় তিন একর জায়গা সরকারি মাদ্রাসাটি তৈরির জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। মাদ্রাসা শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী সমিতির জেলা সম্পাদক মির্জা আজিবুর রহমান বলেন, “আজকের দিনে ইংরেজি শিক্ষার গুরুত্ব রয়েছে। ইংরেজি শিখলে সহজে চাকরির সুযোগ আসে। আজকের দিনে ইংরেজি শেখাটা খুবই জরুরি।” আজিবুর রহমান সাহেব এলাহিয়া হাইমাদ্রাসার সহ-শিক্ষক।

পাঁচবেড়িয়া-লোহানিয়া হাইমাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক সৈয়দ জামালউদ্দিন বলেন, “বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়তে হলে পড়ার খরচ বেশি পড়ে। সাধ থাকলেও অনেকের সাধ্য থাকে না। অনেক পরিবারই ওই খরচ বহন করতে পারে না। সরকারি ইংরেজি মাধ্যম মাদ্রাসায় গরিব পরিবারের ছেলেমেয়েও পড়তে পারবে। রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগটা সত্যিই ভাল।” বনপুরা ইএনইউ সিনিয়র মাদ্রাসার সহ-শিক্ষক আব্দুল কাদের মণ্ডলের কথায়, “আজকের দিনে ইংরাজি শেখা থাকলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা সহজ হয়।”

শহরের ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষিত ছাত্রছাত্রীরা এমনিতেই অনেক বেশি সুবিধে পায়। শুধু শহর নয়, শহরতলির অলিগলিতেও এখন আধুনিক শিক্ষার নানা কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। এই পরিস্থতিতে ইংরাজি মাধ্যম মাদ্রাসাও জরুরি। জেলার এক হাইমাদ্রাসার সহ-শিক্ষকের কথায়, “জেলায় ইংরেজি মাধ্যম মাদ্রাসা খুবই দরকার। একাংশ অভিভাবক ছেলেমেয়েদের ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনার কথা ভাবেন। কেশপুরে প্রস্তাবিত মাদ্রাসাটি গড়ে উঠলে এঁদের স্বপ্নপূরণ হবে।”

madrasah keshpur english medium first barun dey medinipur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy