কলেজে সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা চলাকালীন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) দুই গোষ্ঠীর মারামারিতে উত্তেজনা ছড়াল খড়্গপুর কলেজে। শুক্রবার বিকেলে ওই ঘটনার পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
শহর টিএমসিপির সভাপতি ও সহ-সভাপতির মধ্যে কোন্দলের জেরে দুই নেতার অনুগামীদের মধ্যে প্রথমে বচসা পরে হাতাহাতি বাধে। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাদনা বরুণ চন্দ্রশেখর বলেন, “একটা গোলমাল হয়েছিল। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।”
খড়্গপুর কলেজের টিচার ইন চার্জ অচিন্ত্য চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “কলেজের বাইরে অন্য কাজে রয়েছি। আমাকে এই বিষয়ে কেউ কিছু জানায়নি।” বারবার শিক্ষাঙ্গনে কেন এমন ঘটছে? টিএমসিপি-র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি বলেন, “ভুল বোঝাবুঝি থেকে এই ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় নেতাদের সমস্যা মেটাতে বলেছি।”
গত জানুয়ারিতে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা পায় টিএমসিপি। তবে মাস কয়েক হল সংসদে ভাঙন ধরেছে। অভিযোগ, শহর টিএমসিপি সভাপতি রাজা সরকার ও সহ-সভাপতি হায়দার আলি খানের মধ্যে কোন্দল শুরু হয়েছে। যদিও হায়দার নিজেকে সহ-সভাপতি বলে দাবি করলেও তাঁকে ওই পদ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে দাবি রাজার। গত ২৩ অগস্ট কলেজের প্রেক্ষাগৃহে মদ্যপ অবস্থায় হায়দারকে দেখা যায় বলে অভিযোগ ওঠে। ফের শিক্ষক দিবসে সংস্কৃত বিভাগের এক অধ্যাপককে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে হায়দারের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগ রাজার অনুগামীরা পরিকল্পিত ভাবে করেছে বলে হায়দারের পাল্টা দাবি।
কলেজের তিন দিন ব্যাপী সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় দিন ছিল শুক্রবার। অভিযোগ, বিকেলে হায়দারের বিরুদ্ধে ওঠা আগের অভিযোগ নিয়ে হায়দার অনুগামী প্রথম বর্ষের পড়ুয়া শান্তনু পাত্রকে কটূক্তি করেন রাজা। শান্তনু সে কথা হায়দারকে জানালে কলেজ গেটের কাছে জমায়েত হয় হায়দারের দল। রাজা গেটের কাছে গিয়ে হায়দারকে সংস্কৃত শিক্ষকের কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানালে শুরু হয় গোলমাল। দু’পক্ষেরবচসা থেকে হাতাহাতি বাধে।
শহর টিএমসিপি সভাপতি রাজার অভিযোগ, “দলেরই কেউ কেউ অসামাজিক কাজে যুক্ত হচ্ছেন। শিক্ষক দিবসের ঘটনায় হায়দারকে ক্ষমা চাইতে বলেছিলাম। কিন্তু ওরা উল্টে আমাকে মারধর করেছে। এমনকী মহিলা কমন রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত জয়ন্তী দাস-সহ ছাত্রীদের উপরও চড়াও হয়েছে।” অভিযোগ উড়িয়ে পাল্টা মারধরের অভিযোগ এনেছেন হায়দার। ঘটনায় কলেজে শিক্ষার পরিবেশ নিয়ে সরব হয়েছে ছাত্র সংগঠনগুলি। শহর ছাত্র পরিষদের সভাপতি অরিত্র দে-র অভিযোগ, কলেজে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী নানা অসমাজিক কাজে জড়িয়ে পড়ায় পড়াশোনার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy