নিখোঁজ যুবকের বিকৃত দেহ মিলল ধানজমিতে। গত সোমবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন সুদীপ বসু (৩৬) নামে ওই যুবক। পাঁচ দিন নিখোঁজ থাকার পর শনিবার সন্ধ্যায় চন্দ্রকোনা রোডের সাতবাঁকুড়া সংলগ্ন নতুনপাড়া এলাকায় ধানজমি থেকে সুদীপবাবুর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মৃতের বাড়ি চন্দ্রকোনা রোডের বিলা গ্রামে। পুলিশের অনুমান, দুষ্কৃতীরা সুদীপকে খুন করে ধানজমিতে দেহ পুঁতে দেয়। শনিবার স্থানীয় বাসিন্দারা দুর্গন্ধ পান। পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে করে ময়না-তদন্তের জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে পাঠায়। এ দিন রাতেই চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার ধৃতদের গড়বেতা আদালতে তোলা হলে বিচারক পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিজের গ্রামেই সুদীপবাবু এক ডেকরেটরের দোকানে কাজ করতেন। তাঁর বছর দশেকের একটি ছেলেও রয়েছে। মৃতের স্ত্রী সবিতা বসুর অভিযোগ, “আমার স্বামীর সঙ্গে কারোর কোনওদিন গণ্ডগোল হয়নি। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁকে কেন খুন করা হল কেন-বুঝতে পারছি না। আমার এখন কী হবে জানিনা।” সবিতাদেবী বলেন, “গত সোমবার বিকেলে কাজ সেরে ও বাড়িতে ফিরে আসে। প্রতিদিনের মতো এ দিনও সন্ধ্যায় ও বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু রাতেও বাড়ি না ফেরায় আমরা খোঁজখবর শুরু করি। মঙ্গলবার সকালে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করি।” তাঁর কথায়, “পরে জানতে পারি ওই দিন রাত দশটা পর্যন্ত গ্রামেরই চার বন্ধুর সঙ্গে আমার স্বামী ছিল। ওই চারজনের নামেই আমি পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছি।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রতিদিন কাজ সেরে ওই যুবক মদ্যপান করে বাড়ি ফিরতেন। ওই রাতেও স্থানীয় একটি দোকান থেকে মদ কিনে ওই মাঠেই মদ খাচ্ছিলেন সুদীপবাবু। পুলিশ জানতে পেরেছে, দিন কয়েক আগেও ওই যুবক দু’শো টাকার বিনিময়ে ধৃতদের মধ্যে কোনও এক জনের কাছে নিজের সাইকেলটি বন্ধক রেখেছিলেন। পুলিশের অনুমান, মদের ঠেকে ওই সাইকেল নিয়ে রাতে তাঁদের মধ্যে বচসাও হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, সুদীপবাবুর মাথায় ও পেটে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। শনিবার দেহ উদ্ধারের পরই দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবিতে সরব হয় স্থানীয় বাসিন্দারা। এ দিন রাতেই সবিতাদেবী বিলা গ্রামেরই বাসিন্দা রাজেন মুর্মু, গোপাল হাঁসদা, রাজু বেরা ও লিভা মুর্মুর নামে স্বামীকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে এ দিনই ওই চার জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, তদন্তে খুনের বিষয়ে পুলিশ নিশ্চিত হলেও দুষ্কৃতীরা কেন তাঁকে খুন করল, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy