Advertisement
E-Paper

পুকুরেই এ বার মিলবে সমুদ্রের সিলভার পমপানো

বাঙালির হেঁশেলে এবার নতুন অতিথি হিসেবে জায়গা করে নিতে চলেছে ‘সিলভার পমপানো’। পমফ্রেট মাছের একটি নতুন প্রজাতি ‘সিলভার পমপানো’ মূলত সমুদ্রে পাওয়া যায়। রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগম এবার তাজপুর সৈকতের কাছে আলমপুরে পুকুরে সমুদ্রের নোনা জল ভর্তি করে কৃত্রিমভাবে এই মাছ চাষের পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করেছে।

সুব্রত গুহ

শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৪ ০১:২০
বাঙালির পাতে পড়ার অপেক্ষায়। —নিজস্ব চিত্র।

বাঙালির পাতে পড়ার অপেক্ষায়। —নিজস্ব চিত্র।

বাঙালির হেঁশেলে এবার নতুন অতিথি হিসেবে জায়গা করে নিতে চলেছে ‘সিলভার পমপানো’।

পমফ্রেট মাছের একটি নতুন প্রজাতি ‘সিলভার পমপানো’ মূলত সমুদ্রে পাওয়া যায়। রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগম এবার তাজপুর সৈকতের কাছে আলমপুরে পুকুরে সমুদ্রের নোনা জল ভর্তি করে কৃত্রিমভাবে এই মাছ চাষের পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করেছে। রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, “মৎস্য দফতরের উদ্যোগে ইতিমধ্যেই পুকুরের মিষ্টি জলে রুই, কাতলা ও মৃগেল মাছের উৎপাদন বাড়ানোর কাজ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি রাজ্যের পুকুরে নোনাজলের মাছ চাষ করে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি করার লক্ষ্যেই নিগম এই উদ্যোগ নিয়েছে।”

আলমপুরে মৎস্য নিগমের নিজস্ব খামারে ইতিমধ্যেই এক হেক্টর জমিতে পুকুর খনন করে তাতে সমুদ্রের নোনাজল ভরার প্রাথমিক কাজ শেষ হয়েছে। শীঘ্রই তামিলনাড়ুর মান্দাপাম থেকে নিয়ে আসা প্রায় ১০ হাজার সিলভার পমপানো মাছের চারা ওই পুকুরে ছাড়া হবে। রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগমের জেনারেল ম্যানেজার (কারিগরি) বিজনকুমার মণ্ডল জানান, চলতি মার্চ মাসেই পুকুরের জলে ‘সিলভার পমপানোর’ চাষ শুরু করা হবে। আলমপুরে নিগমের মৎস্য খামারে ইতিমধ্যেই পরীক্ষামূলকভাবে বাগদা ও গলদা চিংড়ির বিকল্প ভেনামী চিংড়ি চাষ করা হয়েছিল। বতর্মানে ভেনামী চিংড়ি শুধু রাজ্যে নয়, দেশ-বিদেশেও রমরমিয়ে বিক্রি ও রফতানি হচ্ছে।

রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, সিলভার পমপানো সমুদ্রের পমফ্রেট মাছেরই একটি নতুন প্রজাতি। সবর্প্রথম ইন্দোনেশিয়া ও তাইওয়ানে পমফ্রেটের মতই সুস্বাদু ও পুষ্টিকর এই মাছ কৃত্রিমভাবে চাষ শুরু হয়। ভারতে ‘সেন্ট্রাল মেরিন ফিশারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউট’ এই মাছের কৃত্রিম চাষ নিয়ে ২০০৮ সালে গবেষণা শুরু করে। তামিলনাড়ুর মান্দাপামে পুকুরে সমুদ্রের নোনা জল ভর্তি করে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কৃত্রিমভাবে এই মাছের চাষ করা হয়। ওই সংস্থার তত্বাবধানে ২০১১ সালে মান্দাপামে কৃত্রিমভাবে ‘সিলভার পমপানো’র ডিম ফোটানো সম্ভব হয়। ডিম থেকে চারা ফোটার মাত্র সাত-আট মাসের মধ্যেই একটি ‘সিলভার পমপানো’ মাছের ওজন চারশো থেকে পাঁচশো গ্রাম হয়। বাজারে প্রতি কিলোগ্রাম চারশো টাকারও বেশি দামে এই মাছ বিকোচ্ছেও দেদার।

সম্প্রতি কলকাতায় রাজ্য মৎস্য দফতরের সঙ্গে সেন্ট্রাল মেরিন ফিশারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে মৎস্য দফতর ওই ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে পুকুরে ‘সিলভার পমপানো’ মাছ চাষ করার পাইলট প্রকল্প শুরু করার উদ্যোগ নেয়। মৎস্য নিগমের আলমপুর মৎস্য খামারের প্রকল্প আধিকারিক সুজিতকুমার সরকার বলেন, “সিলভার পমপানো চাষের জন্য নির্ধারিত পুকুরে জলের গভীরতা কমপক্ষে দেড় মিটার হতে হবে। জলে লবনাক্ততার পরিমাণ হতে হবে ১৫-২৫ পিপিটি (পার্টস পার থাউজেন্ডস)।” তিনি জানান, প্রাথমিক ভাবে এক হেক্টর এলাকা জুড়ে পুকুর খনন করে তাতে সমুদ্রের নোনাজল ভর্তি করার প্রাথমিক কাজ শেষ হয়েছে। সিলভার পমপানোর চাষ শীঘ্রই শুরু হবে।

আর মাত্র কিছু দিনের অপেক্ষা। তারপরেই বাঙালির রসনা তৃপ্তির জন্য বাঙালির পাতে হাজির হতে চলেছে সিলভার পমপানো।

subrata guha kanthi fish pomfret
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy