ভাঙড়ের হিংসা নিয়ে সরব নওশাদ সিদ্দিকি। —ফাইল চিত্র।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সামনে ধর্নায় বসলেন ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্বে তাঁর দল ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)-এর প্রার্থীরা হিংসার শিকার হচ্ছেন এই অভিযোগে কমিশনারের পদক্ষেপের আশ্বাস পেতে বৃহস্পতিবার তিনি ধর্নায় বসেন। পরে রাত ৯টা নাগাদ কমিশনার রাজীব সিংহ অফিসের ভিতরে নওশাদকে ডেকে নিয়ে কথা বলার পর ধর্না কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন ভাঙড়ের বিধায়ক।
পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পেশ করা নিয়ে রাজ্য জুড়ে অশান্তির প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার কমিশনের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছিল বিরোধীরা। শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের দাবিতে বিকেল থেকেই নির্বাচন কমিশনে বিক্ষোভ দেখান সিপিএম ও আইএসএফ নেতৃত্ব। উপস্থিত ছিলেন বিমান বসু, মহম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তী-সহ বাম নেতারা। সঙ্গে ছিলেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদও। এর পর কমিশনারের সঙ্গে দেখা করতে যান বিমান ও নওশাদ। বাইরে বেরিয়ে তিনি বলেন, “সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কমিশনারের পদক্ষেপের আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত যাব না।” এর পরেই ধর্নায় বসে পড়েন। ধর্না চলাকালীন তিনি বলেন, “ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি। কাশীপুর, ভাঙড় এলাকায় যে সব আইএসএফ কর্মীরা মনোনয়ন জমা দিয়েছেন, তাঁদের বাড়িতে পুলিশ যাচ্ছে। কর্মীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।”
বিকেলের দিকে কমিশনের অফিস থেকে একটি গাড়িকে বাইরে বার হতে দেখে কমিশনারের গাড়ি ভেবে সেটিকে ঘিরে ধরেন নওশাদ এবং আইএসএফ কর্মীরা। কিন্তু পরে জানা যায়, ওই গাড়িতে কমিশনার ছিলেন না। পরে রাত ৯টা নাগাদ কমিশনার রাজীব সিংহ অফিসের ভিতরে নওশাদকে ডেকে নেন। সেই কথাবার্তার পরেই ধর্না তুলে নেন ভাঙড়ের বিধায়ক।
পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন শুরু হওয়ার পর থেকেও তপ্ত ভাঙড়। গত মঙ্গলবার থেকেই ভাঙড়-১ ও ২ ব্লকে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। মুহুর্মুহু বোমা পড়ে। চলে গুলিও। তৃণমূল এবং আইএসএফ দুই দল দাবি করেছে, তাদের দলের এক জন করে কর্মী নিহত হয়েছেন বৃহস্পতিবারের সংঘর্ষে। জখম হয়েছেন বেশ কয়েক জন। তার প্রেক্ষিতে কমিশনের দফতরের সামনে বিক্ষোভে শামিল হয়ে রাজ্যের পুলিশমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন নওশাদ। ঘটনাচক্রে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী। নওশাদ বলেন, ‘‘আমাকে টার্গেট করে হামলা চালানো হচ্ছে। এর আগেও আমি রাজ্য সরকারের কাছে নিরাপত্তা চেয়েছি, কিন্তু পাইনি। এ বার আমি নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রের দ্বারস্থ হব।’’
বুধবারই ভাঙড়ের পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতার সঙ্গে কথা বলতে নবান্নে গিয়েছিলেন নওশাদ। কিন্তু মমতার সঙ্গে তাঁর দেখা হয়নি। পরে তিনি বলেছিলেন, ‘‘উনি (মুখ্যমন্ত্রী) রাজ্যের অভিভাবক। তাই ওঁর কাছেই গিয়েছিলাম। কিন্তু উনি ব্যস্ত আছেন।’’ এর পর বৃহস্পতিবার আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভাঙড়। মমতা যদিও সেখানে বিশৃঙ্খলা এবং প্রাণহানির ঘটনার জন্য বৃহস্পতিবার আইএসএফকেই দায়ী করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy