প্রতীকী ছবি।
প্রামাণ্য নথিপত্র হাতের নাগালে না-থাকায় বিভিন্ন মামলায় স্কুলশিক্ষা দফতরের কর্তাদের মাথা হেঁট হয়েছে আদালতে। মান বাঁচাতে তাই এ বার প্রযুক্তির হাত ধরছে দফতরের কমিশনারেটের আইন বিভাগ।
বিকাশ ভবনের এক কর্তা জানান, স্কুলশিক্ষা দফতরের বিরুদ্ধে আদালতে কেউ মামলা করলে সাধারণত তার দেখাশোনার দায়িত্ব কমিশনারেটের আইন বিভাগের উপরে বর্তায়। মামলার নথি সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সরকারের বক্তব্য কী, তা ঠিক করে ওই বিভাগই। কিন্তু প্রশাসনিক ঢিলেমিতে সেই নথিপত্র জোগাড় করতেই অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায় বলে অভিযোগ। ফলে আদালতে মুখ পোড়ে দফতরের।
সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে ‘সার্থক’ নামে একটি পোর্টাল চালু হয়েছে। সেখানে প্রতিদিন সমস্ত রিট আবেদন আপলোড করা হয়। সেখান থেকে তথ্য নিয়ে স্কুলশিক্ষার সঙ্গে যুক্ত লোকজনকে জানিয়ে দেওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। তাতে আছেন সব জেলার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল পরিদর্শক, প্রতিটি জেলা শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান, স্কুলশিক্ষা দফতরের যুগ্মসচিব পদমর্যাদার কর্তা এবং আইন বিভাগের কর্তারা।
আইন বিভাগের কর্মীরা স্কুলশিক্ষা সংক্রান্ত কোনও মামলার হদিস পেলেই সেই নথি ডাউনলোড করে ওই হোয়াটাসঅ্যাপ গ্রুপে পোস্ট করেন। সংশ্লিষ্ট জেলা স্কুল পরিদর্শক সেই নথি দেখে নেন। প্রয়োজনীয় নথি পাঠান ওই গ্রুপেই। বিকাশ ভবনের কর্তাদের সঙ্গে এই ভাবে যোগাযোগ হওয়ায় দ্রুত নথি সংগ্রহের কাজ শেষ হয়। কোনও জেলা আদালতে মামলা হলে জেলা স্কুল পরিদর্শকের অফিস থেকে ওই গ্রুপে তা পাঠানো হয় একই ভাবে। পুরনো নথি সংগ্রহের কাজও শুরু হয়েছে বিকাশ ভবনে।
এত দিন দফতরের বিরুদ্ধে জেলার কোনও স্কুলের শিক্ষক হাইকোর্টে মামলা করলে সেই খবর প্রথমে পৌঁছত বিকাশ ভবনে। সেটাও আদালতে মামলা দাখিল করার বেশ কয়েক দিন পরে। তার পরে বিকাশ ভবন থেকে মামলার আবেদনকারীর জেলায় স্কুল পরিদর্শকের অফিসে যেত সেই ফাইল। ফাইল পৌঁছনোর পরে মামলাকারীর অভিযোগ সংক্রান্ত তথ্য খুঁজে পেতে এবং সংশ্লিষ্ট জেলা স্কুল পরিদর্শকের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সেগুলি সময়মতো আদালতে পেশ করতে অনেকটা সময় লেগে যেত। তথ্য না-পাওয়ায় আদালতের কাছে সময় চাইতে গিয়ে ভর্ৎসনার মুখে পড়তেন স্কুলশিক্ষা দফতরের কর্তারা। বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, অতিরিক্ত সময় ব্যয় হয়ে যাওয়ার পরেও তথ্য দাখিল করতে না-পারায় সরকার পিছু হটতে বাধ্য হতো। প্রযুক্তিকে বরণ করে নেওয়ায় তার কল্যাণে এই সমস্যার খানিকটা সুরাহা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy