এখান থেকেই বার্নপুরে ওড়ার কথা প্রধানমন্ত্রীর হেলিকপ্টারের। তারই মহড়া। বৃহস্পতিবার, বালির জুটমিল মাঠে। — নিজস্ব চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরসূচিতে থাকা সবক’টি জায়গা ও তাঁর যাতায়াতের পথ পুরোটাই ঘুরে দেখলেন তাঁর সুরক্ষার দায়িত্বে থাকা স্পেশ্যাল প্রোটেকশন গ্রুপের (এসপিজি) অফিসারেরা। তবু শনিবার রাতে কোন পথে নিরাপদে মোদীকে রাজভবনে ফিরিয়ে আনা যাবে, তা নিয়ে বৃহস্পতিবারও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন লালবাজারের কর্তারা।
কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, আইপিএল-এর ম্যাচ থাকায় ইডেন গার্ডেন্স এলাকা দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কনভয়ের যাতায়াতে আপত্তি তুলেছে এসপিজি। কারণ হিসেবে কলকাতা পুলিস অফিসারদের তাঁরা বলেছেন, নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী ওই দিনের ম্যাচ শেষ হওয়ার কথা রাত সওয়া আটটায়। অন্য দিকে, নজরুল মঞ্চ ও রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠান শেষে রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ রেড রোড ধরে রাজভবনে ঢোকার কথা প্রধানমন্ত্রীর। কলকাতা পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘ওই সময়টা নিয়েই সমস্যা দেখা দিয়েছে।’’ লালবাজার সূত্রের খবর, সাধারণত প্রধানমন্ত্রীর মতো ভিভিআইপি অতিথিরা রাজভবনে ঢোকেন দক্ষিণ গেট দিয়ে (সেটাই প্রোটোকল বা প্রথা)। ইডেনে খেলা শেষ হলে হাজার হাজার দর্শক ওই এলাকারই বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করবেন। ফলে প্রধানমন্ত্রীর যাত্রাপথ মসৃণ হবে না। ঝুঁকি থাকছে তাঁর নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও। বিকল্প হিসেবে প্রথা ভেঙে রাজভবনের উত্তর গেট দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কনভয় ঢোকানোর কথা ভাবা হচ্ছে বলে পুলিশকর্তারা জানান।
প্রধানমন্ত্রীর সফরে প্রথম দিনের এই জট কাটতে বুধবারের মতো এ দিনও দফায় দফায় এসপিজির সঙ্গে বৈঠক করেন কলকাতা পুলিশের কর্তারা। সমাধানসূত্র মেলেনি বলেই লালবাজার সূত্রের খবর। তবে পুলিশ সূত্রের খবর, ম্যাচ শেষ হওয়া ও কনভয়ের যাতায়াতের সময় মিলে যাওয়া এড়াতে শনিবার ইডেনে দর্শকদের জন্য কোনও অতিরিক্ত বিনোদনের অনুষ্ঠান করা যায় কি না, তা নিয়ে উদ্যোক্তাদের সঙ্গে কথা চলছে। তবে এ দিন লালবাজারের কর্তারা এ বিষয়ে কিছু বলতে চাননি।
প্রশাসন সূত্রের খবর, দু’দিনের কলকাতা সফরের দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ আগামী ১০ মে, রবিবার সকালে প্রথমে দক্ষিণেশ্বর মন্দির ও পরে বেলুড় মঠে যাওয়ার কর্মসূচি রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। বেলুড় মঠ দর্শন সেরে বালি জুটমিল মাঠ থেকেই হেলিকপ্টারে বার্নপুরে যাওয়ার কথা মোদীর। সে জন্য বৃহস্পতিবার দুপুরে হাওড়া সিটি পুলিশের সঙ্গে বালির ওই মাঠটি পরিদর্শন করেন এসপিজি-র প্রতিনিধিরা। পরীক্ষামূলক ভাবে বায়ুসেনার একটি হেলিকপ্টারও ওই মাঠে নামানো হয়।
এ দিন বেলুড় মঠ, দক্ষিণেশ্বরেও যান এসপিজি-র অফিসারেরা। রবিবার সকাল ৭টা নাগাদ রাজভবন থেকে বেরিয়ে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, বিটি রোড ধরে দক্ষিণেশ্বরে এসে পুজো দেওয়ার কথা মোদীর। পরে বালি ব্রিজ হয়ে জিটি রোড ধরে যাওয়ার কথা বেলুড় মঠে। মন্দির দর্শন সেরে ফের জিটি রোড ধরেই তিনি চলে যাবেন বালি জুটমিল মাঠে।
পুলিশ সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রীর যাতায়াতের সময়ে বালি ব্রিজ, বালি খাল থেকে বেলুড় মঠ পর্যন্ত জিটি রোডের দু’ধারে ব্যারিকেড করে আটকে দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই জিটি রোড মেরামতির কাজ শুরু করেছে পূর্ত দফতর।
বেলুড় মঠে। স্বামী বিবেকানন্দের ঘরে কিছুক্ষণ সময় কাটাবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় সূত্রের খবর, এ জন্য রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সাধারণ সম্পাদক স্বামী সুহিতানন্দকে ফোন করে অনুমতি চাওয়া হয়েছে। ঘরটি সাধারণত বন্ধই থাকে। প্রধানমন্ত্রী নিজে ইচ্ছাপ্রকাশ করায় তাঁর জন্য ওই ঘর খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেলুড় মঠ।
২০১৩ সালের এপ্রিলে কলকাতা সফরে এসেও ওই ঘরে কিছুক্ষণ কাটিয়েছিলেন মোদী। তখন অবশ্য তিনি প্রধানমন্ত্রী হননি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম বার এ শহরে এসে শনিবারই রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রেসিডেন্ট স্বামী আত্মস্থানন্দকে দেখতে রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার কথা তাঁর। থাকতে পারেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy