Advertisement
E-Paper

লটারি জেতেইনি আমাদের মফিজুল, বোঝাতে নাকাল মা

লটারিতে কোনও টাকা পায়নি মফিজুল। পাড়া পড়শি থেকে শুরু করে আত্মীয় স্বজনদের এই কথা বোঝাতে এখন রীতিমত জেরবার অবস্থা মালদহের কালিয়াচকের উত্তর লক্ষ্মীপুরের জহরদিটোলা গ্রামের দিনমজুর পরিবারটির।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৬ ০২:২১
ছেলের বাড়ি ফেরার প্রতীক্ষায় মফিজুলের মা। —নিজস্ব চিত্র।

ছেলের বাড়ি ফেরার প্রতীক্ষায় মফিজুলের মা। —নিজস্ব চিত্র।

লটারিতে কোনও টাকা পায়নি মফিজুল। পাড়া পড়শি থেকে শুরু করে আত্মীয় স্বজনদের এই কথা বোঝাতে এখন রীতিমত জেরবার অবস্থা মালদহের কালিয়াচকের উত্তর লক্ষ্মীপুরের জহরদিটোলা গ্রামের দিনমজুর পরিবারটির।

শুক্রবারও মফিজুল হকের বাড়িতে অচেনা কাউকে দেখলেই ভিড় জমিয়েছেন পাড়া পড়শিরা। আর জানতে চেয়েছেন মফিজুলই কি লটারি কেটে কোটিপতি হয়েছে? গ্রামবাসীদের এমন প্রশ্নের মুখে অস্বস্তিতে পড়ছেন মফিজুল হকের পরিবারের সদস্যরা। মফিজুলের দাদা হাফিজুল শেখ বলেন, ‘‘প্রথম দিন গ্রামবাসীদের কাছ থেকে কোটিপতির দাদা এই কথা শুনতে খুবই ভালো লাগছিল। এখন আর ভাল লাগছে না। কারণ আমার ভাই লটারিতে কোনও টাকা পায়নি।’’

তাঁর অভিযোগ, গ্রামের মানুষ থেকে শুরু করে নিকট আত্মীয় কেউই সত্যিটা মানতে রাজি নন। টাকা পাওয়ার ঘটনায় মফিজুলের নাম জড়াল কি ভাবে, তা নিয়ে তদন্তের দাবি করেছেন মফিজুলের পরিবার। হাফিজুল বলেন, ‘‘কেরলের ছেলে লটারিতে টাকা পেয়েছেন। আমার ভাই থাকে মুম্বই। তারপরেও আমার ভায়ের নাম জড়াল। এখন ভয় হচ্ছে ভাই এর কোনও ক্ষতি না হয়ে যায়। প্রয়োজনে পুলিশের দ্বারস্থ হব।’’

এ দিন সকালে মুম্বই থেকে ফোনে মফিজুল বলেন, ‘‘সবাই ভাবছে আমি টাকা পেয়েছি। আমার নাম কি ভাবে ছড়াল তার তদন্ত হওয়া উচিৎ।’’ এই বিষয়ে মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে।

কালিয়াচক ২ ব্লকের উত্তর লক্ষ্মীপুর গ্রামপঞ্চায়েতের জহরদিটোলা গ্রামে বৃদ্ধা মা রুমেলা বেওয়া ও দুই দাদাকে নিয়ে একটি ঝুপড়িতে বসবাস করেন মফিজুল হক। বাবা আবেদ আলি মারা যাওয়ার পর একাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে ছেড়ে দিতে হয় মফিজুলকে। দুই দাদা তৌফিজুল ও হাফিজুল হকের মতো গত জানুয়ারি মাসে মুম্বই এর এফএমসি ফুড মার্কেটে শ্রমিকের কাজ করতে যান তিনি। সম্প্রতি খবর ছড়ায় কেরলে ৫০ টাকা দিয়ে লটারি কেটে কোটি টাকার পুরস্কার পেয়েছেন মফিজুল। যা এখন পুরো জেলার চর্চার বিষয়।

জহরদিটোলা গ্রামের মানুষের মুখে মুখে এখন ঘুরছে কোটি টাকার গল্প। অনেকে আবার রসিকতা করে মফিজুলের দাদাদের বলছেন ভোজ খাওয়ানোর ভয়ে টাকা পাওয়ার বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন তাঁরা। পড়শি মহিলা সাহেলা বিবি, সামিমা বিবিরা হাসতে হাসতে বলেন, ‘‘মফিজুল সর্ম্পকে আমাদের দেওর। আমাদেরকে ভোজ খাওয়াবে না বলেই চেপে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।’’

অনেকে আবার বলছেন, ‘‘প্রাণের ভয় সবার থাকে। তাই হয়তো তাঁরা টাকার কথা প্রকাশ্যে আনতে চাইছেন না।’’ এই পরিস্থিতিতে রুমেলা বেওয়া চাইছেন তাঁর ছেলে ঘরে ফিরে আসুক। মাস দুয়েকের মধ্যে অবশ্য বাড়ি ফিরবেন বলে জানান মফিজুল হক।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy