Advertisement
E-Paper

Dead Body: ঘরে স্ত্রীর রক্তাক্ত দেহ,রেললাইনে পড়ে স্বামী

দেবাশিসের মা রবিবার হাসপাতালে বসে কখনও বলেছেন, কী হয়েছে তিনি কিছুই জানেন না। ঘরের মধ্যে মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলেন। আবার কখনও বলেছেন, রেললাইনে ছেলের সঙ্গে ঘুরতে গিয়েছিলেন। কখনও আবার তাঁর মুখে শোনা গিয়েছে, ‘‘যখন ছেলে হাত দিয়ে মারছিল বৌমাকে আমি তখন ঘুমিয়েছিলাম।” তিনিও জানান, ছেলে-বৌমার মধ্যে মাঝে-মধ্যেই অশান্তি হত। তবে কী নিয়ে অশান্তি হত তিনি বলতে পারেননি।

সৌমিত্র সিকদার, সীমান্ত মৈত্র 

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২২ ০৭:৪৯
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

মাত্র মাস দুয়েক আগে বিয়ে হয়েছিল তাঁদের। পাড়ায় নির্বিবাদী, ভদ্র বলে পরিচিত তরুণ দম্পতি বেশি মেলামেশা করতেন না, একটু চুপচাপই থাকতেন বলে জানিয়েছেন প্রতিবেশীরা। শনিবার সকালে ও বিকেলে নদিয়ার চাকদহে দু’টি আলাদা জায়গায় তাঁদের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারের পরে সেই প্রতিবেশী এবং পরিজনেরা কার্যত হতবাক।

শনিবার সকালে চাকদহ স্টেশনের কাছে রেললাইনের ধারে কাঁচড়াপাড়া রেল ওয়ার্কশপের কর্মী দেবাশিস রায়ের (৩৫) মৃতদেহ মেলে। রাতেই চাকদহে তাঁদের ভাড়াবাড়ির একটি ঘরে মেলে তাঁর স্ত্রী বর্ণালী রায়ের রক্তাক্ত দেহ। মাথা থেঁতলানো ছিল। ঘরের মধ্য থেকে একটি রক্তাক্ত লোহার রডও উদ্ধার হয়েছে।

দেবাশিসের মা নীহারবালা রায়কেও শনিবার সকালে আহত অবস্থায় চাকদহ স্টেশনের কাছে রেললাইনের ধারে পড়ে থাকতে দেখা যায়। রেলপুলিশ তাঁকে প্রথমে চাকদহ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ও পরে সেখান থেকে কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে ভর্তি করে। তাঁর মাথার পিছনে আঘাত রয়েছে। তিনি কিছুটা অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছেন।

পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, পরিবারে অশান্তির কারণে দেবাশিস স্ত্রী-কে খুন করে নিজে আত্মঘাতী হয়েছেন। রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এই নিয়ে কেউ অভিযোগ দায়ের করেননি বলে জানা গিয়েছে। বর্ণালীর মৃতদেহ কল্যাণী পুলিশ মর্গে এবং দেবাশিসের মৃতদেহ রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রের খবর, উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগর থানার পাল্লা বাজার সংলগ্ন বারুইপাড়ায় নিজেদের বাড়ি ছেড়ে আট মাস হল চাকদহ শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের লালপুরে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকছিলেন দেবাশিস ও তাঁর মা। মাস দুয়েক আগে চাকদহ থানার নারিকেলডাঙার বাসিন্দা বর্ণালী ঘোষের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। বর্ণালী একটি বেসরকারি বিএড কলেজের তৃতীয় সিমেস্টারের ছাত্রী ছিলেন। পরিবার সূত্রের খবর, বিয়ের কিছু দিন পর থেকেই পাল্লা বাজারের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার জন্য বর্ণালীকে চাপ দিতে থাকেন দেবাশিস। এই নিয়ে মাঝে-মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি হতে থাকত। তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিল বর্ণালীর পরিবার।

রবিবার বর্ণালীর বাবা দিলীপকুমার ঘোষ অভিযোগ করেন, ‘‘দেবাশিসের বাড়ির লোকেরা ওকে প্ররোচিত করেছে। চাকদহ ছেড়ে পাল্লায় চলে আসতে বলেছে। অথচ, বিয়ের আগে ওরা চাকদহে বাড়ি ভাড়া করেছে দেখেই বিয়ে দিয়েছি। মেয়ে বিএড করছিল। ভবিষ্যতে চাকরি করার ইচ্ছা ছিল। ওদের বুঝিয়েছিলাম যে এই টানাপড়েনে পরিণতি ভয়ঙ্কর হবে।’’

শনিবার সকাল এবং বিকালেও তিনি মেয়েকে ফোন করেছিলেন। কিন্তু মোবাইল বেজে গিয়েছে। এর পরে তাঁরা দেবাশিসের ভাড়া বাড়িতে এসে দেখেন, দরজা বন্ধ। বাইরের থেকে গ্রিলে তালা দেওয়া। পিছনের জানালা দিয়ে মোবাইলের আলোয় দেখেন, বর্ণালী মেঝেতে পড়ে রয়েছে। মেঝে রক্তে ভেসে যাচ্ছে।

দেবাশিসের মা রবিবার হাসপাতালে বসে কখনও বলেছেন, কী হয়েছে তিনি কিছুই জানেন না। ঘরের মধ্যে মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলেন। আবার কখনও বলেছেন, রেললাইনে ছেলের সঙ্গে ঘুরতে গিয়েছিলেন। কখনও আবার তাঁর মুখে শোনা গিয়েছে, ‘‘যখন ছেলে হাত দিয়ে মারছিল বৌমাকে আমি তখন ঘুমিয়েছিলাম।” তিনিও জানান, ছেলে-বৌমার মধ্যে মাঝে-মধ্যেই অশান্তি হত। তবে কী নিয়ে অশান্তি হত তিনি বলতে পারেননি।

(সহ প্রতিবেদন: অমিত মণ্ডল)

dead body Couple Death Chakdaha
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy