E-Paper

পুলিশে নিয়োগের ছ’শো আবেদনপত্র সমেত গ্রেফতার ২

রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কৃষ্ণগঞ্জ থানা এলাকার বাসিন্দা শান্তনু পাল ও অর্পণ মিত্র বুধবার রানাঘাট স্টেশনের কাছে রেললাইন পার হচ্ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২৪ ০৮:১৮
চাকরি পরীক্ষার ছয়শো আবেদন পত্র সহ যুবককে গ্রেফতার করেছে রেল সুরক্ষা বাহিনী। বৃহস্পতিবার রানাঘাটে।

চাকরি পরীক্ষার ছয়শো আবেদন পত্র সহ যুবককে গ্রেফতার করেছে রেল সুরক্ষা বাহিনী। বৃহস্পতিবার রানাঘাটে। ছবি: সুদেব দাস।

রানাঘাট স্টেশনের কাছে রেললাইন পারাপারের সময় সন্দেহভাজন দুই যুবককে বুধবার দুপুরে আটক করেছিল আরপিএফ। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় কলকাতা পুলিশ ও রাজ্য পুলিশে নিয়োগের ছ’শো আবেদন পত্র। মাস কয়েক আগে মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জেও এমনই একটি চক্রের হদিস পেয়েছিল মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ। তারই প্রেক্ষিতে শুক্রবার ট্রানজিট রিমান্ডে ওই দুই যুবককে মুর্শিদাবাদে নিয়ে যাওয়ার জন্য রানাঘাটে রেল আদালতে হাজির হয় সেখানকার পুলিশ আধিকারিকরা। কিন্তু ট্রানজিট রিমান্ডের আবেদন খারিজ করে ধৃতদের জামিন মঞ্জুর করেন রেল আদালতের বিচারক অরিজিৎ মণ্ডল। বিষয়টি জানাজানি হতেই আইনজীবী ও পুলিশ মহলে শোরগোল পড়েছে।

রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কৃষ্ণগঞ্জ থানা এলাকার বাসিন্দা শান্তনু পাল ও অর্পণ মিত্র বুধবার রানাঘাট স্টেশনের কাছে রেললাইন পার হচ্ছিল। তাদের গতিবিধি দেখে সন্দেহ হওয়ায় আরপিএফ শান্তনু ও অর্পণকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। তাদের কাছে থাকা ট্রলি ব্যাগ থেকে উদ্ধার হয় কলকাতা পুলিশ ও রাজ্য পুলিশের চাকরির ছ’শো আবেদন পত্র। এছাড়াও পাওয়া যায় বেশ কিছু নথিপত্র। তারপরেই দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়।ধৃতেরা পুলিশকে জানিয়েছে, দমদমের বাসিন্দা দিলীপ দাসের সঙ্গে মাসকয়েক আগে তাদের পরিচয় হয়। দিলীপ টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন সরকারি চাকরি পাইয়ে দেয়। সেইমত শান্তনু ও অর্পণ ৬ জন চাকরি প্রার্থীর হয়ে দিলীপের সঙ্গে যোগাযোগ করে। প্রার্থী পিছু চার লক্ষ টাকা করে দিলীপের সঙ্গে তাদের চুক্তি হয়। দিলীপ ওই আবেদনপত্র ভর্তি ট্রলিব্যাগ শান্তনু ও অর্পণকে রাখতে দিয়েছিল।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত মে মাসে মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে এ ধরনের একটি চক্রের হদিস পাওয়া যায়। সেই ঘটনার সঙ্গে রানাঘাটের ঘটনার অনেক মিল রয়েছে। তাই খবর পেয়ে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশের একটি দল বৃহস্পতিবার রানাঘাট রেল আদালতে হাজির হয়। ধৃতদের ট্রানজিট রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়। কিন্তু রেল সুরক্ষা বাহিনীর হয়ে কোনও আইনজীবীকে এদিন রেল আদালতে দেখা যায়নি। পরে ধৃতদের জামিন মঞ্জুর করা হয়।

ধৃত শান্তনু ও অর্ণবের আইনজীবী রাজা বন্দোপাধ্যায় বলেন, "আমার দুই মক্কেলকে জিয়াগঞ্জ বা মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ গ্রেফতার করেনি। ট্রানজিট রিমান্ডে নেওয়ার ক্ষেত্রে যে আইনি প্রক্রিয়া রয়েছে, তা মেনে পুলিশের তরফে আদালতে আবেদন করা হয়নি। তাই ওই আবেদন খারিজ হয়েছে।" ওই আইনজীবীর দাবি, "প্রতারণা, জালিয়াতি, নথিপত্র নকল করা, বিশ্বাসভঙ্গ ইত্যাদি অভিযোগ আমার মক্কেলদের বিরুদ্ধে আনা হলেও মামলায় এ ধরনের কোনও ধারার উল্লেখ ছিল না।’’

প্রশ্ন উঠছে ছ’শো আবেদন পত্র সহ দুই যুবককে গ্রেফতার করা হলেও কেন সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা করা হল না? তাহলে কি সর্ষের ভেতরেই ভূত লুকিয়ে! নাকি নেপথ্যে রয়েছে অন্য কারণ। বিষয়টি নিয়ে রানাঘাটের দায়িত্বে থাকা রেল সুরক্ষা বাহিনীর আধিকারিকেরা কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Ranaghat arrest

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy