সদর শহর বহরমপুর থেকে মেরেকেটে কয়েক কিলোমিটার দূরে ফাঁকা রাস্তার ধারে ওঁত পেতে থাকা দুষ্কৃতীদের খপ্পরে পড়লেন চার মোটরবাইক আরোহী। বৃহস্পতিবার রাতে বহরমপুর-হরিহরপাড়া রাজ্য সড়কের মাঝে জনাকয়েক হাঁসুয়াধারী দুষ্কৃতী ওই বাইক আরোহীদের পথ আটকায়। হাঁসুয়া দেখিয়ে তারা মোটরবাইক-টাকা পয়সা ও মোবাইল দিতে বলে। বাইক আরোহীরা রুখে দাঁড়ালে দুষ্কৃতীরা হাঁসুয়া দিয়ে তাঁদের এলোপাথারি কোপাতে থাকে। সংজ্ঞা হারিয়ে রাস্তাতেই পড়ে যান তাঁরা। অভিযোগ, এরপর দুষ্কৃতীরা একটি মোটরবাইক, কয়েক হাজার টাকা ছিনতাই করে চম্পট দেয়। কাটাবাগান-কুমড়োদহ ঘাটের মাঝামাঝি জায়গার এ দিনের ঘটনায় আতঙ্কে এলাকার মানুষ। ফাঁকা রাস্তায় কেন পুলিশ টহল দেয় না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। অবশ্য শুক্রবার সকাল থেকে ‘বোধদয়’ হয় পুলিশ। এ দিন ওই রাস্তায় পুলিশকে টহল দিতে দেখা যায়। যা দেখে কেউ কেউ বলছেন, ‘‘আসলে চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে।’’
রাতভর অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকার পর সকালে পুলিশ এসে জখমদের উদ্ধার করে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। জখম আব্দুল মান্নান মণ্ডল, আব্দুল কালাম ও তাঁর স্ত্রী রহিনা বিবি এবং গৌতম বিশ্বাসকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অবস্থার ক্রমশ অবনতি হওয়ায় কালামকে কলকাতার হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আব্দুল কালাম তাঁর স্ত্রী রহিনাকে নিয়ে বহরমপুরে চিকিৎসকের কাছে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে দুষ্কৃতীদের খপ্পরে পড়েন। গৌতমবাবু আব্দুল মান্নান কাজ সেরে বহরমপুর থেকে বাড়ি ফেরার পথে দুষ্কৃতী-হামলার মুখে পড়ে। পুলিশ জানিয়েছে, জখমেরা হরিহরপাড়ার খিদিরপুর কলোনি এলাকার বাসিন্দা।
কাটাবাগান থেকে কুমড়োদহঘাট—দেড় কিলোমিটারের এই রাস্তার ধারে কোনও জনবসতি নেই। সন্ধ্যা হলেই সুনসান ওই রাস্তার দখল নেয় দুষ্কৃতীরা। মাঝে-মধ্যেই লোকজন দুষ্কৃতী হানার মুখে পড়েন। এলাকার লোকজনের দাবি, পুলিশকে একাধিকবার বিষয়টি লিখিত ভাবে জানানোও হয়েছে। সন্ধ্যার পর ওই রাস্তায় পুলিশি টহল দেওয়ার আর্জি জানিয়ে লিখিত আবেদনও করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশের কোনও হেলদোল নেই। এ দিনের ঘটনায় তা প্রমানিত হল। স্থানীয় স্বরূপপুরের বাসিন্দা হাসিবুল ইসলাম জানান, দিনকয়েক আগেই কয়েকজন সব্জি ব্যবসায়ীকে মারধর করে সাইকেল ছিনতাই করে দুষ্কৃতীরা। কিন্তু পুলিশের কোনও হেলদোল নেই। বহরমপুরের আইসি শৈলেনকুমার বিশ্বাস অবশ্য বলেন, ‘‘ওই রাস্তায় নিয়মিত পুলিশ টহল দেয়। বিশেষ কারণে এ দিনই পুলিশ টহল দেয়নি। তবে এখন থেকে ওই রাস্তার দিকে নজর থাকবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy