Advertisement
০৬ মে ২০২৪
Jalangi River

জলঙ্গির স্বাস্থ্য ফেরাতে জেলায় কেন্দ্রীয় দল

গবেষকে দল জানাচ্ছেন, আপাত পর্যবেক্ষণে দেখা গিয়েছে নদীর গতিপ্রবাহ সংকটে। ধীরে ধীরে মজে যাচ্ছে জলঙ্গি। তাই পরিযায়ী মাছের দেখা তো মেলেই না। দেশীয় মাছও কম পাওয়া যাচ্ছে।

জলঙ্গি নদীর পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

জলঙ্গি নদীর পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তেহট্ট শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:০২
Share: Save:

জলঙ্গি নদীতে সমীক্ষা ও খুঁটিনাটি তথ্য সংগ্রহে এলেন কেন্দ্রীয় অন্তঃস্থলীয় মৎস্য গবেষণা কেন্দ্র থেকে চার সদস্যের দল। ওই দলে রয়েছেন বিজ্ঞানীও। মঙ্গলবার তেহট্ট খেয়াঘাট সংলগ্ন এলাকায় নদীবক্ষ থেকে জল, মাটি পরীক্ষার পাশাপাশি খুঁটিনাটি তথ্য সংগ্রহ শুরু করেন তাঁরা। পাশাপাশি নদী থেকে বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করে গবেষণা কেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষার পর তৈরি করা হবে রিপোর্ট। সেই রিপোর্ট প্রশাসনকে জানানো পর জলঙ্গির স্বাস্থ্য নিয়ে ও সার্বিক পরিস্থিতির রূপায়ণে পরিকল্পনা করা হবে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। কেন্ত্রীয় দলকে এই কাজে সহযোগিতা করছেন তেহট্টের জলঙ্গি নদী বাঁচাও কমিটির সদস্যরা।

কেন্দ্রীয় দলের সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা গিয়েছে, জলঙ্গি মুর্শিদাবাদ ও নদিয়ার বৃহৎ অংশ জুড়ে বিস্তৃত। নদিয়া জেলার প্রধান নদীও বটে। তবে এই নদীর স্বাস্থ্য বর্তমানে অত্যন্ত খারাপ। স্বাভাবিক স্রোত তথা গতিবেগ নদীতে নেই। বেশিরভাগ সময় দেশীয় মাছ থাকছে না। তাছাড়া একটা সময় পরিযায়ী মাছ যেমন ইলিশ, ভোলা, গলদা চিংড়ি সবই মিলত এই নদীতে। শুধু তাই নয়, জলঙ্গির মিষ্টি জলে ইলিশ ডিম পাড়ত। কিন্তু গত বেশ কয়েক বছরে এই সব মাছ দেখেনি জেলেরা। গবেষণাকারী দল ও জেলেরা জানিয়েছেন, বহু বছর আগে শুশুক তথা গাঙ্গেয় ডলফিনের বাসস্থান ছিল এই নদী। কেননা ওই প্রাণীর প্রিয় খাবার ইলিশ এই নদীতে মিলত।

গবেষকে দল জানাচ্ছেন, আপাত পর্যবেক্ষণে দেখা গিয়েছে নদীর গতিপ্রবাহ সংকটে। ধীরে ধীরে মজে যাচ্ছে জলঙ্গি। তাই পরিযায়ী মাছের দেখা তো মেলেই না। দেশীয় মাছও কম পাওয়া যাচ্ছে। নদী নিজস্বতা হারাচ্ছে বলে মাছের বাসস্থান কমছে। তাঁরা এও জানিয়েছেন, বেশ কয়েক মাস আগে তাঁরা ফরাক্কা থেকে ইলিশ মাছ ছেড়েছিলেন (ট্যাগ লাগানো)। নিম্ন গাঙ্গেয় অববাহিকায় থাকা নদীতে সে মাছের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, এমনকি মুর্শিদাবাদেও। কিন্তু জলঙ্গিতে সেই মাছ আসেনি। অর্থাৎ এই নদীর সার্বিক স্বাস্থ্য ঠিক নেই বলেই এমনটা হয়েছে বলে মত তাঁদের।

তিনদিন আগে মুর্শিদাবাদের হাসানপুর থেকে গবেষণা শুরু করেছেন কেন্দ্রীয় অন্তঃস্থলীয় মৎস্য গবেষণা কেন্দ্রের ওই বিজ্ঞানীরা। পুরো কর্মকাণ্ড প্রতিষ্ঠানের নির্দেশক বসন্ত কুমার দাসের তত্ত্বাবধানে ও নির্দেশনায় চলছে। সমীক্ষায় আছেন সৌরভ নন্দী, অর্ঘ্য কুনুই, শ্রেয়া রায়, পুনম মজুমদার প্রমুখ।

অভিযানের প্রজেক্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট অর্ঘ্য কুনুই বলেন, “নদীর অবস্থা ভাল নয়। নদী থেকে নমুনা সংগ্রহের কাজ চলছে। গবেষণার পর রিপোর্ট তৈরি করে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।” জলঙ্গি নদী বাঁচাও কমিটির সদস্যদের অন্যতম নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলেন, “নদীর আগের রূপ ফিরুক এটাই চাই। এই গবেষকদের রিপোর্ট দেখে প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নিলে জলঙ্গি নদী স্বাস্থ্য ফিরে পাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jalangi River
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE