Advertisement
০৪ মে ২০২৪
Jadavpur Student Death

মৃত পড়ুয়ার ছবি পুরসভার ফ্লেক্সে

ঘটনাটি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত পড়ুয়ার মামার বাড়ি এলাকায়। ওই বাড়ির কাছে রাস্তার পাশে পুরসভার পক্ষ থেকে একটি ফ্লেক্স টাঙানো হয়।

পুরসভার উদ্যোগে তৈরি হচ্ছে মৃত পড়ুয়ার নামে স্মৃতি উদ্যান। শুক্রবার।

পুরসভার উদ্যোগে তৈরি হচ্ছে মৃত পড়ুয়ার নামে স্মৃতি উদ্যান। শুক্রবার। ছবি: প্রণব দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রানাঘাট শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২৩ ০৮:৪৪
Share: Save:

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত ছাত্রের বয়স ১৮ বছরের কম। তাই আইন মেনে তার নাম-পরিচয়, ছবি কোনও ভাবেই প্রকাশ্যে আনা যায় না। রাজ্যের শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের তরফে ওই আপত্তি আগেই জানানো হয়েছিল। কমিশনের উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী পড়ুয়ার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এসে সংবাদমাধ্যমেও সেই বার্তা দেন। কিন্তু কমিশনের আপত্তি উপেক্ষা করে, আইনকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে খোদ পুরসভার তরফে টানানো ফ্লেক্সে দেখা গেল মৃত পড়ুয়ার ছবি। রীতিমতো বড় করে ব্যবহার করা হয়েছে মৃত পড়ুয়ার মুখের ছবি। রয়েছে কিশোরের নামও। শুক্রবার বিষয়টি সামনে আসতেই সমালোচনার মুখে পড়ে জেলার সংশ্লিষ্ট ওই পুরসভা।

ঘটনাটি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত পড়ুয়ার মামার বাড়ি এলাকায়। ওই বাড়ির কাছে রাস্তার পাশে পুরসভার পক্ষ থেকে একটি ফ্লেক্স টাঙানো হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে— ‘এই স্থানের সৌন্দর্যায়ন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হল।’ ওই ফ্লেক্সে মৃত ছাত্রের ছবি ছাপা হয়েছে। এ ছাড়া, ফ্লেক্সের নীচে পুরপ্রধান, উপপ্রধান ও পুরসভার সদস্যের নাম ব্যবহার করা হয়েছে। তা নিয়েই তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন স্থানীয়েরা। অনেকেই জানাচ্ছেন, মৃত পড়ুয়ার স্মৃতিরক্ষায় পুরসভা উদ্যোগী হতেই পারে। কিন্তু সেক্ষেত্রে পকসো আইনের পরিপন্থী মৃত পড়ুয়ার ছবি প্রকাশ করা কোনও ভাবেই কাম্য নয়। পাশাপাশি, ওই ফ্লেক্সে পুরসভার প্রধান, উপপ্রধান ও স্থানীয় পুর সদস্যের নাম ব্যবহার করারও প্রয়োজন ছিল না।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত পড়ুয়ার মামার বাড়ির প্রবেশ পথের কিছু আগে রাস্তার পাশে এক ফালি জমি রয়েছে। পুরসভার অধীনে থাকা ওই জমির উপরে একটি পরিত্যক্ত কংক্রিটের অংশ ছিল। শুক্রবার সকাল থেকেই ওই কংক্রিটের অংশ ভেঙে ফেলে, তা পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়। ওই কাজ শুরুর আগে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুরসভার তরফে মৃত ছাত্রের স্মৃতিরক্ষায় বড় করে ওই ফ্লেক্স টাঙানো হয় বলে অভিযোগ।

প্রসঙ্গত, গত ১৩ অগস্ট রবিবার মৃত পড়ুয়ার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন রাজ্যের শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের প্রতিনিধি দল। ওই দিনই কমিশনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়, কোনও ভাবেই মৃত পড়ুয়ার নাম-পরিচয়, ছবি প্রকাশ্যে আনা যাবে না। অথচ, তার পরেও পুরসভার পক্ষ থেকে ওই ফ্লেক্সে কেন ব্যবহার করা হল মৃতের ছবি?

সংশ্লিষ্ট পুরপ্রধান বলেন, ‘‘স্থানীয় মানুষের আবেগকে মর্যাদা দিয়েই মৃত ছাত্রের স্মৃতির উদ্দেশে সৌন্দর্যায়নের কাজ করা হচ্ছে। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। আইনি জটিলতা রয়েছে বা আইন লঙ্ঘিত হয়, এমন কোনও কাজ পুরসভার পক্ষ থেকে করা হবে না।’’

এই বিষয়ে শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুরসভা নিয়ম না মেনে ওই ফ্লেক্স টাঙিয়েছে। মৃত কিশোরের স্মৃতির উদ্দেশে কিছু করতে হলেও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়ে করতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ranaghat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE