আবু তাহের। ফাইল চিত্র
পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়ার (পিএফআই) সম্মেলনের প্রধান বক্তা হিসেবে মুর্শিদাবাদে দলের সাংসদ আবু তাহের খানের নাম থাকায় অস্বস্তিতে পড়েছিল তৃণমূল। দু’দিন আগে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতে সেই অস্বস্তি কাটাতে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে আবু তাহের জানিয়েছিলেন, ‘‘আমার অনুমতি ছাড়াই পিএফআই তাদের ব্যানার, পোস্টারে নাম লিখেছে।’’ সে দিন তিনি আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। শনিবার বহরমপুর থানায় আবু তাহের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগ পাওয়ার পরে বিজেপি নেতা রাহুল সিংহ, একটি সর্বভারতীয় বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের আধিকারিক, পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া এবং অন্যদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি, মানহানি, শান্তিভঙ্গে প্ররোচনা দেওয়া-সহ মোট ১৫টি ধারায় বহরমপুর থানার পুলিশ মামলা করেছে। সূত্রের খবর, দলের কাছে সমালোচনার মুখে পড়ে অস্বস্তি কাটাতে আবু তাহের খান মামলা করেছেন।
রবিবার সন্ধ্যায় আবু তাহের বলেন, ‘‘আমার অনুমতি ছাড়া নাম ছাপিয়ে আমার ভাবমূর্তিকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। তাই থানায় অভিযোগ করেছি।’’ বিজেপি নেতা রাহুল সিংহ এই ঘটনায় কী ভাবে যুক্ত হলেন? উত্তরে আবু তাহের বলেন, ‘‘আমি থানায় অভিযোগ করেছি। এর বেশি কিছু এখন বলব না।’’
মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার অজিত সিংহ যাদব বলছেন, ‘‘শনিবার সাংসদের অভিযোগ পেয়েছি। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা করে তদন্তও শুরু হয়েছে।’’ পিএফআইয়ের বিরুদ্ধে এখন মামলা কেন? এত দিন ওই সংগঠন জেলায় কাজ করলেও পুলিশ চুপ করে বসেছিল কেন? পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘ওই সংগঠন তো নিষিদ্ধ নয়। সম্মেলন করতে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই দেখে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। অন্য দিকে, শনিবার নির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়ার পরেই মামলা করা হয়েছে।’’
পিএফআইকে নিষিদ্ধ করার জন্য সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশ সরকার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সুপারিশ করেছে। এই পরিস্থিতিতে রবিবার বহরমপুরের ভাকুড়িতে পিএফআই-এর সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। তাতে তৃণমূলের সাংসদ আবু তাহের খান, তৃণমূল বিধায়ক নিয়ামত শেখ উপস্থিত থাকবেন বলে ব্যানার, পোস্টার ছাপিয়ে প্রচারও শুরু হয়েছিল। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই তা নিয়ে বিজেপির রাজ্যের সহ পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন টুইট করেন। এর পরেই হইচই শুরু হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, এ বিষয় নিয়ে বিজেপি নেতা রাহুল সিংহও সরব হন।
এ দিকে রবিবার ওই সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও পুলিশ অনুমতি না দেওয়ায় সম্মেলন হয়নি। পিএফআইকে সম্মেলন করতে না দেওয়ার প্রশ্নে বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী সরব হন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে গত শুক্রবার ফেসবুকে অধীর পোস্ট করেন— ‘‘যোগী-রাজ্যে পিএফআই নামক সংগঠন বাতিল করা হচ্ছে, এখনও অবশ্য কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে আইন অনুযায়ী বাতিল হয়নি। কিন্তু বাংলার দিদি কেন পিএফআইকে কিছু করতে দেবেন না? যোগী যা ভাবে আজ, ‘দিদি’ কি ভাবে কাল!’’
অন্যদিকে পিএফআইয়ের রাজ্য সভাপতি হাসিবুল ইসলাম রবিবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘‘কী মামলা হয়েছে জানি না। খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে বলব।’’ এ দিন হাসিবুল দাবি করেন, ‘‘আবু তাহের সঙ্গে দেখা করে তাঁর অনুমতি নিয়েই বক্তা তালিকায় নাম রাখা হয়েছিল।’’ রাহুল সিংহের বিরুদ্ধে মামলার প্রসঙ্গে বিজেপির মুর্শিদাবাদ দক্ষিণ জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ বলছেন, ‘‘বিষয়টি আমার জানা নেই। আমরা খোঁজ নিয়ে পরে জানাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy