একটা নির্বাচন সবে শেষ হল। এর মধ্যেই ফের মুর্শিদাবাদ পুরসভায় ক্ষমতায় ফিরে আসার পথ তৈরির কাজ শুরু করে দিলেন প্রদেশ কংগ্রস সভাপতি অধীর চৌধুরী।
দিন বারো আগে মুর্শিদাবাদ পুরবোর্ড গঠন করে কংগ্রেস। তাই লালবাগের মানুষকে ‘অভিনন্দন’ জানাতে স্থানীয় আস্তাবল মাঠে সোমবার জনসভা করে কংগ্রেস। তৃণমূল এই পুরসভাটি পাওয়ার খুব আশা করেছিল। কারণ এখানে দলের দায়িত্বে ছিলেন তৃণমূল জেলা সভাপতির মান্নান হোসেনের ছেলে সৌমিক হোসেন। ভোটের দিন ‘বহিরাগত’ হওয়ায় অধীর চৌধুরী এলাকায় ঢোকার জন্য জেলা প্রশাসনের অনুমতি না পেলেও, মান্নান হোসেন কিন্তু গোটা এলাকাই দাপিয়ে বেড়িয়েছিলেন। তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। ষোল আসনের মুর্শিদাবাদ পুরসভায় তৃণমূল পেয়েছে ১টি, বি জে পি ২টি এবং বামফ্রন্ট ৩টি আসন। বাকি ১০টি আসন পেয়ে পুরবোর্ড গড়েছে কংগ্রেস।
এই জয়ের কারণেই এমন ঘটা করে ‘অভিনন্দন সভা’ ডেকেছিলেন অধীর। রীতিমতো খোশমেজাজে ছিলেন অধীর। বক্তৃতার মধ্যে সকলকে চা-বিস্কুট খাওয়ানোর প্রতিশ্রুতিও দেন। তবে সদ্য নির্বাচিত কাউন্সিলরা যাতে দুর্নীতি না করেন, তার উপর বারবার জোর দেন অধীর। তার জন্য প্রকাশ্য জনসভা থেকে কার্যত তাঁদের শপথ করিয়ে নেন অধীর। তিনি বলেন, ‘‘মানুষ আপনাদের ক্ষমতায় বসিয়েছে। ক্ষমতায় বসে এ-দিক ও-দিক (অসৎ পথ) করবেন না।’’ জনগণ যেমন ক্ষমতায় আনেন, তেমনই ক্ষমতা কেড়েও নেন, তা দলীয় কাউন্সিলরদের মনে করিয়ে দেন অধীর।
কাউন্সিলরদের অধীরের পরামর্শ, ‘‘যা পারবেন মানুষকে সেটাই বলবেন। না পারলে সেটাও বলবেন। কেন পারবেন না, সেটাও বুঝিয়ে বলবেন।’’ পুরসভায় আয় ও ব্যয়ের সঠিক হিসাব প্রতি বছরে এক বার প্রতিটি ওয়ার্ডের আমজনতাকে ডেকে সেই ওয়ার্ডে সভা করে বুঝিয়ে দিতে বলেন অধীর। তারপরেই এক কাউন্সিলরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘‘কি বাপি, করবে তো?’’ মঞ্চে অধীর চৌধুরীর পাশে বসে-থাকা বাপি, অর্থাৎ সদ্য-নির্বাচিত পুরপ্রধান বিপ্লব চক্রবর্তী, সম্মতিসূচক ঘাড় নাড়েন।
এ দিনের সভায় মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি শিলাদিত্য হালদার, স্থানীয় বিধায়ক শাঁওনী সিংহ রায় ও বহরমপুর পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য- সহ বিভিন্ন নেতা বক্তব্য রাখেন। ‘সি’ ক্যাটাগরির পুরসভা হওয়ার কারণে সরকারি আর্থিক অনুদান কম পায় এই পুরসভা। তার ফলে প্রত্যাশিত উন্নয়ন করা যায় না বলে বিভিন্ন বক্তার দাবি। তাঁরা বহরমপুর, লালবাগ (মুর্শিদাবাদ) ও জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ নিয়ে মোট তিনটি পুরসভা একত্রে করে কর্পোরেশন গড়ার দাবি তোলেন। বস্তুত পক্ষে, ওই তিনটি পুরসভার একটির সীমান্ত থেকে অন্যটির সীমান্তের দূরত্ব বড় জোর এক-দু’কিলোমিটার।
এ দিন বিকেল পাঁচটা নাগাদ শুরু হওয়ার কথা হলেও, সাড়ে ছ’টায় সভা শুরু হয়। প্রবল গরমেও মাঠে ছিলেন প্রায় হাজার দশেক লোক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy