দিনভর সকলেই জানতেন, অমিত শাহ আসছেন। শুক্রবার হেলিকপ্টার নামিয়ে হল মহড়াও। শেষে সফর বাতিল। মায়াপুরে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য
নাগরিকত্ব আইন নিয়ে কোনও স্পষ্ট বার্তা অমিত শাহ দেন কি না সেই অপেক্ষায় ছিলেন অনেকেই। মতুয়া গড় ঠাকুরনগরে তাঁর সফরের আগে সে দিকেই তাকিয়ে ছিল নদিয়ার দক্ষিণাংশের রাজনৈতিক মহল। রাজনৈতিক লাভক্ষতির হিসাব কষছিল বিজেপি-তৃণমূল দু’পক্ষই। আপাতত সবই মুলতুবি রইল।
নদিয়ার দক্ষিণের একটা বড় অংশ মতুয়া-অধ্যুষিত। রানাঘাট লোকসভার পাশাপাশি বনগাঁ লোকসভারও একাংশ এখানেই। এই এলাকায় মতুয়া ভোট নির্বাচনে নির্ণায়ক ভূমিকা নেয়। কৃষ্ণগঞ্জ, রানাঘাট উত্তর-পূর্ব, রানাঘাট দক্ষিণের মতো বিধানসভাও মতুয়া-প্রধান। গত লোকসভা ভোটে রানাঘাট এবং বনগাঁর মত মতুয়া-প্রধান আসন হাতছাড়া হয় তৃণমূলের। সম্প্রতি রানাঘাটে সভা করতে এসে নাগরিকত্ব নিয়ে মতুয়াদের বার্তা দিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি বলে যান, মতুয়া ভাই বোনেরা সবাই এমনিতেই এ দেশের নাগরিক। তৃণমূলপন্থী মতুয়া সংগঠনও জানিয়েছে, তারা চায় নিঃশর্ত নাগরিকত্ব। সেদিন তৃণমূল নেত্রী সভায় বিজেপির নাম না করেই বলেন, ‘যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে এ দেশে আছেন তাঁদের আবার কী নাগরিকত্বের মোয়া খাওয়াবেন?’ জানান, মতুয়ারা এমনিতেই দেশের নাগরিক।
কাজেই জেলার বিজেপি নেতারা চাইছিলেন, ঠাকুরনগরের সভায় মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়া নিয়ে স্পষ্ট কোনও ঘোষণা করে যান অমিত শাহ। অন্যথায় মতুয়াদের ভোট রক্ষা করা সমস্যার হবে। বিজেপিপন্থী মতুয়া সংগঠনের তরফে এর আগেই অমিত শাহের কাছে নাগরিকত্ব আইন দ্রুত কার্যকর করার দাবি-সহ মতুয়া সমাজের উন্নয়নের জন্য একাধিক দাবি লিখিত ভাবে পাঠানো হয়েছে। শনিবারের সভায় এই নিয়ে শহ মুখ খুলতে পারেন বলে আশায় ছিলেন তাঁরা। বিজেপি-পন্থী মতুয়া সংগঠনের নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি মুকুটমণি অধিকারী বলেন, “আমাদের দাবিগুলি আগেই লিখিত ভাবে পাঠিয়েছি। নাগরিকত্ব আইন দ্রুত কার্যকরের দাবি যেমন আছে, তেমনি মতুয়া সমাজের উন্নয়নের জন্যও নানা দাবি আছে। অমিত শাহ এসে তা পূরণ করবেন, মতুয়া এবং উদ্বাস্তু সমাজ এই আশায় ছিল।”
শাহের সভা না হওয়ায় আপাতত স্বস্তিতে তৃণমূল-পন্থী মতুয়া সংগঠন। তাদের জেলা সভাপতি প্রমথরঞ্জন বসুর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী আমাদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়ে গিয়েছেন। আমরা নিঃশর্ত নাগরিকত্বের পক্ষে। এখন বিজেপি নেতারা আসছেন ভুল বোঝাতে। অমিত শাহ এসেই বা নতুন কী বলতে পারতেন?”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy