শীতলপাটিতে ঝরা আম শুকোনো হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র
আচার না প্রচার, শ্যাম না কুল! কোনটা ছেড়ে কোনটা রাখবেন তা নিয়ে আতান্তরে পড়েছেন ওঁরা।
আম আর আমজনতার টানাপড়েনে দিন কাটছে নদিয়ার সুতপা রায়চৌধুরী, নার্গিস বিবি কিংবা মুর্শিদাবাদের নুরবানু বিবিদের।
এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী ওঁরা। কিন্তু সময়টা যে বৈশাখ মাস। কালবৈশাখী আর কাঁচা আমের ভরা মরসুম। একটা কালবৈশাখী মানেই ঝাঁকে ঝাঁকে হিমসাগর-ল্যাংড়া- গোলাপখাস-চৌসা ঝরে পড়ছে মাটিতে। কোনটা ফেটে চৌচির, কোনটা আবার অক্ষত। ঝড়ে খসা ওই আমই নার্গিস নুরবানু সুতপা হাসিনার হাতের গুনে বদলে যাচ্ছে জিভে জল আনা আমসত্ত্ব-আচারে। তাই বৈশাখী রোদ্দুরটা প্রতি বারের মতো এ বারও আমচুর আচারকে একেবারে ব্রাত্য করতে পারছেন না প্রার্থীরা। আর সে জন্য প্রচারের মাঝেও কিঞ্চিৎ সময় তুলে রাখছেন তাঁরা। এমনকী প্রচারে তা নিয়েও যাচ্ছেন, ‘চেখে দেখুন না!’
নবদ্বীপের স্বরূপগঞ্জ পঞ্চায়তের ১৭৮/১৭৯ নম্বর বুথের তৃণমূল প্রার্থী সুতপা বলেন, “এক দিকে পরিবার অন্য দিকে বৃহত্তর পরিবার। গরমকালে বাড়ি সকলের জন্য আমের আচার করব না এটা হয়, আবার ভোটের প্রচারও তো আছে— অনেক সময় তাই হাতে তৈরি আমসত্ত্ব নিয়েই প্রচারে বেরিয়েছি।’’
শিয়রে ভোট, কিন্তু মুর্শিদাবাদ লালগোলার বাহাদুর পুর পঞ্চায়েতের মল্লিকপুর ২ নম্বর গ্রাম সংসদের তৃণমূল প্রার্থী হাসিনা বিবি বৈশাখের দুপুরগুলো বিশেষ করে ঝড়ের পরের তিন-চারটে দুপুর আমজনতা নয়, সরাসরি আম নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকছেন। আসলে আমচুর আচার তৈরিতে তাঁর খ্যাতি এলাকা জোড়া। স্বামী সারজেমান শেখের আমবাগান আছে। তাই বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ এই দু’মাস বরাবরই আমচুর-আমসত্ত্ব আচার নিয়ে মেতে থাকেন হাসিনা। এ বার তার সঙ্গে জুড়েছে ভোট। হাসিনা বিবি রসিকতা করে বলেন, “দিনের বেলা আচার আর রাতের বেলা প্রচার। এ ভাবেই সামাল দিচ্ছি!’’ কখনও কখনও তৈরি আচার নিয়েও রাস্তায় নামছেন তিনিও। কথা বলে মনে হচ্ছিল ভোটের থেকে তিনি বরং আচার আমচুরের জন্য বেশি চিন্তিত।
তাঁর মাথায় ঘুরছে, কোন আমে আমচুর আর কোন আমে আমসত্ত্ব— সেই চিন্তাই না কাল হয়! হাসিনা ভাবছেন উল্টো— ‘‘দেখুন না ওই আমচুরেই প্রতিপক্ষকে কাৎ করে দেব!’’
(তথ্য অনল আবেদিন ও দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy