Advertisement
E-Paper

একতরফা ভোটে জোট আত্মরক্ষার

মিছিলের সামনে সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য তথা বিধায়ক রমা বিশ্বাস। তাঁর পিছনে লালঝান্ডার পাশে বিজেপির পতাকা। যা দেখে হতভম্ব এক সিপিএম কর্মী বলেই ফেলেছিলেন, “শেষ পর্যন্ত রমাদি!”

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৮ ০১:২০

প্রথমে সোশ্যাল মিডিয়ায়, তার পরে কাগজে ছড়িয়ে পড়েছিল ছবিটা।

মিছিলের সামনে সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য তথা বিধায়ক রমা বিশ্বাস। তাঁর পিছনে লালঝান্ডার পাশে বিজেপির পতাকা। যা দেখে হতভম্ব এক সিপিএম কর্মী বলেই ফেলেছিলেন, “শেষ পর্যন্ত রমাদি!”

সিপিএমের বড় নেতারা যতই অস্বীকার করুন, গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে বিজেপির সঙ্গে দলের কর্মীদের একটা সমঝোতা যে হয়েছেই, তা চাপা থাকছে না। তেহট্ট মহকুমার একাধিক জায়গায় সিপিএম এবং বিজেপি প্রার্থীর নামে এক সঙ্গে দেওয়ালও লেখা হয়েছে।

সিপিএমের জেলা সম্পাদক সুমিত দে-র দাবি, “ভোটারদের বিভ্রান্ত করতে এবং আমাদের কালিমালিপ্ত করতে বিজেপিই ওই সব দেওয়াল লিখেছে।” সত্যিই তাই? হাওয়া কিন্তু বলছে, করিমপুর-১, পিপুলবেড়িয়া, জমশেরপুর, শিকারপুর, রহমতপুর, তেহট্টের ছিটকা, কানাইনগর, বেরাই-১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এখন সিপিএম-বিজেপির মধ্যে সমঝোতার কথা গাঁয়ের ছেলেপিলেরাও জানে।

কোথাও সোজা সমর্থন, কোথাও সামনে ‘নির্দল’ প্রার্থীকে শিখণ্ডী খাড়া করে একযোগে সমর্থন। দেওয়ালে ‘বিজেপি ও বাম মনোনীত নির্দল প্রার্থী।’ ভাবে নওদা ব্লকের রাইপুরে পঞ্চায়েত সমিতির ৮ নম্বর আসন বা স্থানীয় মধুপুর পঞ্চায়েতের ১৯ নম্বর আসনে বিজেপির নির্দল প্রার্থীকে ভোট দিতে বলছে সিপিএম। শমসেরগঞ্জের বাসুদেবপুরে ভরতপুরে গুন্দরিয়া ও আমলাই পঞ্চায়েতেও কংগ্রেস, সিপিএম, বিজেপির মধ্যে আঁতাঁতের কথা শোনা যাচ্ছে। বাড়ি-বাড়ি প্রচারে সেই বোঝাপড়ার কথা জানানো হচ্ছে। হাঁসখালির রামনগর-বড়চুপড়িয়া ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের অনেকে আসনেই বিজেপির প্রার্থী আছে, সিপিএমের নেই। আবার উল্টোটাও আছে।

এ রকম নজির অনেক।

সিপিএমের মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য এবং সুমিত দে দু’জনেই বলছেন, তৃণমূল এবং বিজেপি দু’টি দলই তাদের শত্রু। তাদের কারও সঙ্গে সমঝোতা করার প্রশ্নই নেই। বিজেপির মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ ও বিজেপির নদিয়া (উত্তর) সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মহাদেব সরকারও কার্যত তেমনই দাবি করছেন। তাঁদের দাবি, পুরোটাই তৃণমূলের অপপ্রচার।

গাংনাপুরে মাঝেরগ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় সিপিএমের নদিয়া জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য রমা বিশ্বাসের মিছিলে পদ্মের উপস্থিতি তো দেখাই গিয়েছে। সেটাও অপপ্রচার?

সুমিতের ব্যাখ্যা, “ওটা পরিকল্পিত মিছিল ছিল না। দুই দলের প্রার্থীরাই আক্রান্ত হয়েছিলেন। এলাকার মানুষ মিছিল বার করেন। বিধায়ক হিসেবে উনি তাতে সামিল হন।’’ রমা নিজেও বলেন, “ওটা আক্রান্তদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ছাড়া কিছু নয়।” যা শুনে তৃণমূলের জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তের টিপ্পনী, “নদিয়াতে এই জোটটা আগে থেকেই ছিল। এ বার ভোটে সেটা নানা ভাবে ফুটে বের হচ্ছে।”

আর, মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেসের সভাপতি আবু তাহের খানের ব্যাখ্যা, ‘‘এখন যা পরিস্থিতি তাতে নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখতে যে যেখানে পারছে তৃণমমূলকে আটকানোর চেষ্টা করছে। এর মধ্যে নীতি-আদর্শ খুঁজতে যাওয়া ঠিক হবে না।’’

West Bengal Panchayat Elections 2018 BJP CPM
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy