Advertisement
E-Paper

বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়ায় চিন্তিত ব্যবসায়ীরা

রাজ্যের নয়া নিয়মে দোকানে বেচা কেনা  প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে বহরমপুরের বস্ত্র ব্যবসায়ীদের অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০২১ ০৬:৫৮
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

চলতি মাসের ১৬ তারিখ থেকে করোনা সংক্রমণ রুখতে রাজ্য জুড়ে জারি হয়েছে কঠোর বিধি নিষেধ। রাজ্যের নয়া নির্দেশে জুন মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত সকাল সাতটা থেকে দশটা পর্যন্ত আনাজ বাজার, বেলা বারোটা থেকে তিনটে পর্যন্ত সোনার দোকান, কাপড়ের দোকান সহ জরুরি ও নিত্য প্রয়োজনীয় দোকান খোলা রাখার সময় নির্ধারিত হয়েছে। দুপুর দু’টো পর্যন্ত খোলা রয়েছে ডাকঘর, ব্যাঙ্কও।

কিন্তু রাজ্যের নয়া নিয়মে দোকানে বেচা কেনা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে বহরমপুরের বস্ত্র ব্যবসায়ীদের অভিযোগ। এক প্রতিষ্ঠিত বস্ত্র ব্যবসায়ী বলেন “ সকাল দশটার পর এমনিতেই মানুষের আনাগোনা কম তার উপর পুলিশি ধরপাকড়ে মানুষ বাড়ির বাইরে বেরোতে ভয় পাচ্ছেন। ফলে শিকেয় উঠেছে বিক্রি।” এই অবস্থায় সময়ের পরিবর্তন করার লিখিত আবেদন জানিয়েছে বহরমপুর ক্লথ মার্চেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন।

সংগঠনের দাবি অনুযায়ী, শুধুমাত্র বহরমপুর শহরে ছোট বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে কমপক্ষে ছয় থেকে সাড়ে ছয় হাজার কর্মী যুক্ত আছেন। এই অবস্থায় বিক্রি বন্ধ হয়ে গেলে তাঁরা কর্মচারীদের বেতন দিতে পারবেন না। রোজগারহীন হয়ে পড়বেন ওই মানুষগুলো। অসহায় হবেন পরিবারের লোকেরা, সে কথাও লিখিতভাবেই জেলাশাসককে জানিয়েছেন সংগঠনের সম্পাদক বিষ্ণু দত্ত। তিনি বলেন, “কোভিড ১৯ এর কারণে দীর্ঘ এক বছর আমরা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্থ, তারপর আবার এই বছরও একই পরিস্থিতি। আমাদের অনুরোধ সময়ের পরিবর্তন করে সকাল ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হোক।” তাঁদের বক্তব্য, যে ভাবে সময় নির্দিষ্ট করা হয়েছে গোটা রাজ্যের জন্য, তাতেই পরিকল্পনায় সম্ভবত গলদ থেকে গিয়েছে। রাজ্যের সর্বত্র মানুষ এক রকম ভাবে বাজার করেন না। কলকাতা বা তার আসেপাশে মানুষের আনাজ বাজার থেকে শুরু করে অন্য জিনিসপত্রের কেনাকাটার যেমন অভ্যাস, মোটামুটি সেই ভাবেই সময় নির্দিষ্ট করা হয়েছে। কিন্তু মফসসল বাজার বসে দেরি করে। ওঠেও দেরি করে। সেখানকার মানুষের অভ্যাস তেমনই। সেই রীতি মেনে যদি এক এক জায়গার জন্য এক এক রকম করে বাজারের সময় স্থির করা হত, পুলিশ সে দিকে অঞ্চল ভিত্তিক ভাবে নজরও রাখতে পারত।

খুবই সমস্যায় পড়েছেন হকাররা। তাঁরা পাড়ায় পাড়ায় ফেরি করার জন্য মাত্র তিন ঘণ্টা সময় পাচ্ছেন দিনে। কিন্তু সকাল সাতটায় বহরমপুরের মতো শহরের তেমন করে ঘুমই ভাঙে না। তাই জিনিসপত্র কেনাকেটার জন্য আরও বেলা পর্যন্ত ছাড় চান। ব্যবসায়ী অভিজিৎ চক্রবর্তী বলেন, “পরপর দু-বছর ইদেও ব্যবসা হয় নি। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের না খেতে পেয়ে মরতে হবে।” দিন চারেক আগে এক খাগড়ার এক তরুণ ব্যবসায়ী হতাশাগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যা করায় বহরমপুরের ব্যবসায়ীদের মধ্যে আরও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে বলেও দাবি করেছেন সংগঠনের নেতারা। মুর্শিদাবাদ জেলা দোকান কর্মচারী সমিতির যুগ্ম সম্পাদক মহাদেব দাস বলেন, “যে সময় দোকান খোলা রাখতে বলা হচ্ছে তখন খরিদ্দারই তো আসছে না। আর বেচাকেনা না হলে মালিকও পয়সা পাবে না। বহু কর্মচারীর এখনও বেতন হয়নি।” এই অবস্থায় দোকান খোলার সময় পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে জেলাশাসকের কাছে তাঁরাও আবেদন জানাবেন বলে জানান মহাদেব। এই বিষয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সিরাজ দানেশ্বর। তিনি বলেন, “আমরা সময় বদলানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। এটা রাজ্য সরকারের বিষয়।”

COVID-19 coronavirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy