Advertisement
০২ মে ২০২৪
Illegal Arms Recovery

বহরমপুরে কেন এত আগ্নেয়াস্ত্র!

বাড়ির লোকজন ঘরের দরজা ভেঙে দেখেন দীপায়নের দেহ রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তাঁর বুকে একটি গুলি লেগেছে। আর দেহের পাশে পাইপগানটি পড়ে রয়েছে।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

সামসুদ্দিন বিশ্বাস
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৭:৩২
Share: Save:

গুলিবিদ্ধ এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার করল বহরমপুর থানার পুলিশ। বুধবার সকালে তাঁর বাড়ির ঘরের দরজা ভেঙে গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার করে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম দীপায়ন হালদার (৪৫)। তিনি পেশায় রং মিস্ত্রি। তাঁর বাড়ি বহরমপুরের বলরমাপুর কলোনিতে। পুলিশ মৃতদেহের পাশ থেকে একটি পাইপগান উদ্ধার করেছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, দীপায়ন নিজের বুকে গুলি করে আত্মহত্যা করেছেন। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, কীভাবে, কোথা থেকে তাঁর হাতে বেআইনি অস্ত্র তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

মৃতের আত্মীয় রাকেশ হালদার জানান, ৯ বছর সংসার করার পরে বছর খানেক আগে দীপায়নের স্ত্রী নমিতা তাঁকে ছেড়ে চলে যান। সম্প্রতি তাঁদের ডিভোর্স হয়েছে। তখন থেকেই মানসিক অবসাদে ছিলেন। এদিন সকালে ডাকাডাকি করেও ঘর থেকে না ওঠায় দরজা ভেঙে দেখে যায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কখন ঘটনা ঘটেছে? তাঁর দাবি, ‘‘আমরা জানতে পারিনি। তবে রাতেই ঘটনা ঘটেছে। বুধবার সকালে আমরা জানতে পারি।’’

বাড়ির লোকজন ঘরের দরজা ভেঙে দেখেন দীপায়নের দেহ রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তাঁর বুকে একটি গুলি লেগেছে। আর দেহের পাশে পাইপগানটি পড়ে রয়েছে।

জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বহরমপুর শহর লাগোয়া চালতিয়া এলাকায় আততায়ীর গুলিতে তৃণমূল নেতা সত্যেন চৌধুরী খুন হয়েছেন। গত ৩১ জানুয়ারি বহরমপুর শহর লাগোয়া মুর্শিদাবাদ থানার আমানিগঞ্জ চরদিয়াড় ঘোষপাড়ায় দুষ্কৃতীদের গুলিতে শ্যামবাবু রায় এক তৃণমূল কর্মী খুন হন। এবারে বহরমপুর শহরের অদূরে বলরামপুরে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যার ঘটনা সামনে এসেছে। প্রায় প্রতিদিনই জেলাজুড়ে বেআইনি অস্ত্র উদ্ধার করছে পুলিশ। তার পরেও দুষ্কৃতীদের হাতে এত বেআইনি অস্ত্র আসছে কী করে সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

তবে জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, প্রায় প্রতিদিনই বেআইনি অস্ত্র, গুলি, বোমা, বন্দুক উদ্ধার হচ্ছে। গত ১৫ দিনে মুর্শিদাবাদ জেলায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে অন্ততপক্ষে ১৩টি বেআইনি অস্ত্র, ৮৬ রাউন্ডগুলিসহ ৯ জন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রায় দু’কুইন্টাল বিস্ফোরক উদ্ধার হয়েছে।

সূত্রের খবর, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি জেলা পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ রানিতলা থানা এলাকা থেকে দুজনকে গ্রেফতার করে। তাদের কাছে থেকে ৩ টি আগ্নেয়াস্ত্র, ৬ টি ম্যাগাজিন এবং দশ হাজার জাল টাকা উদ্ধার করেছে। ১৩ ফেব্রুয়ারি বহরমপুর থেকে এক মহিলা গ্রেফতার হয়। তার কাছে থেকে ৬৫ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। গত ১০ ফেব্রুয়ারি বেলডাঙা, সাগরপাড়া, খড়গ্রাম ও রানিনগর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছে থেকে ৪টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। সেদিন বহরমপুর থানার পুলিশ সাত ধরনের ২০২ কেজি বিস্ফোরক সহ এক জনকে গ্রেফতার করেছে। ৯ ফেব্রুয়ারি দৌলতাবাদ, মুর্শিদাবাদ, ভগবানগোলা ও জলঙ্গি থানার পুলিশ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের হেফাজত থেকে ৪ টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৮ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে। সেদিন ডোমকল থানার পুলিশ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের কাছে থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও দু’রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। গত ৫ ফেব্রুয়ারি রানিনগর থানার পুলিশ এক জনকে গ্রেফতার করেছে। একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও এক রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Berhampore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE