—প্রতীকী চিত্র।
রাতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কংগ্রেস নেতাকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য চাপাচাপির অভিযোগ উঠল ওসি-র বিরুদ্ধে।
সোমবার মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপারের কাছে এই মর্মে লিখিত অভিযোগ করেন কংগ্রেসের নবগ্রাম ব্লক সভাপতি তথা অন্যতম জেলা সম্পাদক মির বাদাম আলি। নবগ্রাম থানার ওসি সুব্রত সিকদার অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, দলে নিজের গুরুত্ব বাড়াতেই মিথ্যে অভিযোগ করছেন বাদাম। এর প্রতিবাদে ১৪ সেপ্টেম্বর নবগ্রাম থানা ঘেরাও করার ডাক দিয়েছে কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর টিপ্পনী, ‘‘উর্দির আড়ালে পুলিশই এখন তৃণমূলের নেতা!’’
পুলিশের ‘দলদাস’ হয়ে ওঠার অভিযোগ এ রাজ্যে নতুন নয়। বাম আমলে সরাসরি দলবদলে দালালির অভিযোগ না থাকলেও নানা ভাবে রাজনৈতিক প্রভুদের তুষ্ট রাখার চেষ্টা ছিল পুলিশের একটা মহলে। তৃণমূল সরকার আসার পরে তা বেড়েছে বই কমেনি বলে অভিযোগ। এক পুলিশ সুপার তো মুখ্যমন্ত্রীকে ‘জঙ্গলমহলের মা’ বলেও অভিহিত করেছিলেন।
জঙ্গিপুর কেন্দ্রের সাংসদ, প্রণবপুত্র অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের নবগ্রাম বিধানসভা এলাকার প্রতিনিধি বাদাম আলির অভিযোগ, গত ২৯ অগস্ট রাত ১টা নাগাদ ওসি তাঁকে ফোন করে বাড়ির বাইরে আসতে বলেন। সেই ফোন পেয়ে তিনি বাইরে এলে ওসি তাঁকে নিয়ে কাছেই একটি কালভার্টের উপরে গিয়ে বসেন। তার পরে তৃণমূলের এক জনকে সেখানে ডেকে নেন। বাদামের কথায়, ‘‘ওসি আমায় তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন। আমি মুখ বুজে থাকি। পরে তিনি আমাকে নিয়ে এসে বাড়ির সামনে নামিয়ে দিয়ে যান।’’
ঘটনার সপ্তাহখানেক পর কেন এই অভিযোগ তুলছেন?
বাদাম আলির বক্তব্য, ‘‘পরের দিন সকালেই ফোনে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে সব জানাই। তিনি তখন জেলার বাইরে ছিলেন। জেলায় ফিরে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করবেন বলে জানান। তাই তখনই পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করিনি।’’ সুব্রত সিকদার অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে পাল্টা বলেন, ‘দলের ভিতরে মির বাদাম আলির অবস্থা ভাল নয়। তাই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ তুলে, নাটক করে উনি দলে নিজের গুরুত্ব বাড়াতে চাইছেন।’’
নবগ্রামের ওসি-র বিরুদ্ধে অবশ্য শুধু এ-ই নয়, আরও নানা অভিযোগ রয়েছে কংগ্রেসের। জেলা পরিষদের সদস্য তথা জেলা কংগ্রেসের সম্পাদক ধীরেন্দ্রনাথ যাদবের অভিযোগ, ‘‘উনি এই এলাকা থেকে কংগ্রেসটা তুলে দেওয়ার ঠিকা নিয়েছেন। তৃণমূলে না গেলে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিচ্ছেন।’’
নবগ্রামের রসুলপুর অঞ্চল কমিটির সদস্য, ঝুলনপুরের সামসুদ্দিন শেখকে ১৫ অগস্ট পুলিশ গ্রেফতার করে। বাদাম আলির দাবি, ‘‘তৃণমূলে না-যাওয়ায় বেআইনি অস্ত্র রাখা ও ডাকাতির মিথ্যা মামলায় তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে।’’
অধীরের দাবি, ‘‘তৃণমূলের রাজত্বে পদোন্নতি ও কায়েমি স্বার্থে পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা সরাসরি নেতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। নবগ্রামের ওসি এমনই এক জন তৃণমূল নেতা।’’ পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, ‘‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy