Advertisement
০৪ মে ২০২৪
WB Panchayat Election 2023

জেলায় কংগ্রেস প্রার্থীর জয়ে কি বাইরন মডেল?

ফরাক্কার বাসিন্দা আসিফ বিদায়ী জেলা পরিষদে মুর্শিদাবাদের একমাত্র কংগ্রেসের সদস্য ছিলেন। সকলেই শাসক দলে ভিড়লেও তিনি কংগ্রেস ছাড়েননি।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র। Sourced by the ABP

বিমান হাজরা
জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২৩ ০৯:৩২
Share: Save:

পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলায় কংগ্রেস প্রার্থীদের জয়ে ফের বাইরন মডেল মাথাচাড়া দেবে। দলবদলুদের যে রকম ঢালাও ভাবে প্রার্থী করা হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিস্ফোরক হয়ে উঠলেন রাজ্য যুব কংগ্রেস সহ-সভাপতি আসিফ ইকবাল।

ফরাক্কার বাসিন্দা আসিফ বিদায়ী জেলা পরিষদে মুর্শিদাবাদের একমাত্র কংগ্রেসের সদস্য ছিলেন। সকলেই শাসক দলে ভিড়লেও তিনি কংগ্রেস ছাড়েননি। এমনকি তার কাকা মইনুল হকের অনুরোধও অগ্রাহ্য করে রয়ে গেছেন কংগ্রেসেই। গত বছর রাজ্য যুব কংগ্রেসের নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করে সংগঠনের সহ-সভাপতি হয়েছেন। মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের একমাত্র সেই সদস্যকেই এ বারে মনোনয়ন দেয়নি কংগ্রেস। অবশেষে জেলায় কংগ্রেসের পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুললেন তিনি। তাই নয়, সরাসরি তার বিস্ফোরক দাবি, “দলের কোনও কথা বাইরে বলা ঠিক নয়। আমি তা কখনও বলিওনি। কিন্তু গত ৫ বছর জেলা পরিষদের একমাত্র সদস্য হওয়া সত্ত্বেও জেলার নেতারা যে ভাবে আমাকে উপেক্ষা করেছেন, অসম্মান করেছেন তাতে আর মুখ না খুলে থাকতে পারলাম না। এ ছাড়া কোনও পথ নেই। এ জেলার বা রাজ্যের যিনি সর্বোচ্চ নেতৃত্ব তাঁকেও আমি বলেছি সব কথা। কিন্তু কোনও সুরাহা পাইনি। দলে এ রকম বহু ভাল রাজনৈতিক যুবককে এ ভাবেই উপেক্ষা করা হয়েছে। তাঁদের রাজনৈতিক কেরিয়ার শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। যেহেতু আমি মনোনয়ন পাইনি তাই আমাকে ঘিরে জল্পনা যে আমি দল ছাড়ছি। কিন্তু তা ছাড়ছি না। যেহেতু আমি এখন রাজ্য যুব কংগ্রেসের নির্বাচিত সহ-সভাপতি, তাই আমাকে সেখান থেকে সরাবার ক্ষমতা জেলার নেতাদের নেই। তাই কংগ্রেসে আছি, কংগ্রেসেই থাকব। আমি মনোনয়ন পাব ভেবে মনোনয়ন দাখিল করেছিলাম। মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময় দেখি বহু পুরনো দিনের প্রকৃত কংগ্রেস কর্মী তাঁরাও প্রতীক পাননি। রাতারাতি যাঁরা তৃণমূল থেকে দলে এসেছেন তাঁদের প্রতীক দেওয়া হয়েছে।” তিনি বলেন, “ফরাক্কায় জেলা পরিষদে এমন প্রার্থীকে টিকিট দিয়েছে দল যিনি প্রাক্তন বিধায়ক মইনুল হক তৃণমূলে যাওয়ার দিনই সেই দলের ঝান্ডা ধরে দল ছেড়েছিলেন। দু’দিন আগে তিনি ফের কংগ্রেসে যোগ দেন। দল তাকে প্রার্থী করেছে। আর এক জনকে জেলা পরিষদে টিকিট দিয়েছে কংগ্রেস, সে কবে তৃণমূল ছাড়ল কেউ জানে না। আর একটি আসনে কংগ্রেসের যুব সভাপতিকে টিকিট না দিয়ে এমন এক জনকে জেলা পরিষদে কংগ্রেসের প্রার্থী করা হয়েছে যে চার দিন আগে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছে। যাঁর বাড়িতে তৃণমূলের সদস্যও রয়েছে। এটা ফরাক্কার চিত্র।” আসিফের প্রশ্ন, “ভোটে যারা জিতবে তারা কি দলে থাকবে? সাগরদিঘিতে যাকে বিধানসভায় টিকিট দেওয়া হল তিনি কোনওদিন কংগ্রেস করেননি। কোনওদিন কংগ্রেসের সঙ্গে মিছিলে হাঁটেননি, কংগ্রেসকে জানেনও না। সে কংগ্রেসে থাকবে না এটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু যিনি তাকে দলের টিকিট দিলেন স্থানীয় কংগ্রেস কর্মীদের আপত্তি উপেক্ষা করে তিনি কি জানতেন না তাঁকে? কিসের ভিত্তিতে তাকে টিকিট দেওয়া হয়? সেই একই ঘটনা ঘটতে চলেছে পঞ্চায়েতেও। জেতাবে কংগ্রেস, পরে তারা চলে যাবে তৃণমূলে। কংগ্রেসের মধ্যে থেকে যে সব দালালরা এসব করছেন তাঁদের বিরুদ্ধে লড়াই জরুরি। ফেসবুকে সমর্থন নয়, কংগ্রেসকে বাঁচাতে হলে যারা মনোনয়ন দেওয়া নিয়ে দালালি করেছে তাদের সরাতে হবে পশ্চিমবাংলা থেকে। কংগ্রেসের সমর্থন আছে, কিন্তু কংগ্রেসকে এ জেলায় এবং এ রাজ্যে শক্তিশালী করা যাচ্ছে না এদের জন্য। দলের মধ্যে এই আবর্জনাদের সরাতে হবে, না হলে কংগ্রেস মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না। রাজ্যে সব দল ৪০ হাজারের বেশি প্রার্থী হয়েছে, সেখানে কংগ্রেসের প্রার্থী মাত্র ১৪ হাজার। এক জনের হিটলারি মনোভাবে দলের এই অবস্থা।”

জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত দাস বলেন,“কংগ্রেসে কে টিকিট পাবে, কে পাবে না এটা দলীয় ব্যাপার। যারা প্রকৃত কর্মী তারা কেউ প্রার্থী হওয়ার জন্য কংগ্রেস করে না। শুধু বাইরন কেন, আবু তাহের, শাওনি সিংহ রায়, অপূর্ব, আশিস মার্জিত সহ বহু বাইরনকে নিয়েই তৃণমূলের জন্ম হয়েছে মুর্শিদাবাদে। দল যখন যাকে মনে করবে তাঁকে কাজে লাগাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE