সাগরদিঘির হরহরি গ্রাম কন্টেনমেন্ট জ়োন। দেওয়া হচ্ছে ব্যারিকেড। নিজস্ব চিত্র
গোষ্ঠী সংক্রমণ রুখতে হরিহরপাড়ার শ্রীপুর নামুপাড়া গ্রামকে কন্টেনমেন্ট জ়োন হিসেবে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে দিয়েছে প্রশাসন। পাশাপাশি দুই গ্রাম পীরতলা ও পাড়াগ্রাম গ্রামকে বাফার জ়োন হিসেবে বাঁশের ব্যারিকেড করে ঘিরে দিয়েছে প্রশাসন। বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটার পর থেকে লকডাউন মানা হচ্ছে। এলাকার লোকজনের কিছু প্রয়োজন থাকলে পুলিশ তার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। শমসেরগঞ্জের রতনপুর, ধুলিয়ান পুরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ড, সাগরদিঘির হরহরিপাড়ায়ও বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পরে ধীরে ধীরে লকডাউন শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য প্রায় দুই সপ্তাহ আগে তামিলনাড়ু থেকে হরিহরপাড়ায় ঘরে ফেরেন এক পরিযায়ী শ্রমিক। হোম কোয়রান্টিনে না থেকে গ্রামে অবাধে স্বাভাবিক কাজকর্ম ও ঘোরাঘুরি করেন। দিন কয়েক আগে তাঁর করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। যাঁদের সঙ্গে তিনি মেলামেশা করেছিলেন এ রকম কয়েক জনের লালারস সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে। মঙ্গলবার রাতে প্রথম আক্রান্তের মা, ভাই ও এক বন্ধুর করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট আসে। সে দিন রাতেই তাঁদের বহরমপুর কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। তাঁরা গ্রামে অবাধে মেলামেশা করায় গোষ্ঠী সংক্রমণের সন্দেহ করছে স্বাস্থ্য দফতর। ফলে শ্রীপুর গ্রামকে কন্টেনমেন্ট জ়োন হিসেবে এবং পার্শ্ববর্তী পীরতলা ও পাড়াগ্রাম গ্রামকে বাফার জ়োন করেছে প্রশাসন। ফলে বিপাকে পড়েছেন গ্রামের বাসিন্দারা।
গ্রামের মানুষের বক্তব্য, সকলে আরও একটু সচেতন হলে এই বিপাকে পড়তে হত না। গ্রামের অধিকাংশ মানুষই কৃষিজীবী। আর খেতে চলছে চাষের কাজ। কন্টেনমেন্ট জ়োন হিসেবে হওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে চাষের কাজ। খেতের আনাজ হাটে নিয়ে যেতে পারছেন না চাষিরা।
তবে সব থেকে বিপাকে পড়েছেন গ্রামের দুগ্ধ চাষিরা। গ্রামে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়তেই চাষিদের কাছ থেকে দুধ কেনা বন্ধ করেছে গোয়ালা এবং দুগ্ধ সমিতি। ফলে দুধ ফেলে দিতে বাধ্য হচ্ছেন দুগ্ধ চাষিরা। গ্রামের বাসিন্দা নওসাদ সেখ বলছেন, ‘‘ঘরে ফেরার পর কোয়রান্টিনে থাকলে গোটা গ্রামের মানুষকে ভুগতে হত না। মাঠের কাজ, আনাজ, দুধ বিক্রি সবই তো বন্ধ হয়ে গেল। আমাদের চলবে কী করে?’’
যদিও গ্রামে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পৌঁছে দিচ্ছেন হরিহরপাড়া থানার পুলিশ কর্মী, আধিকারিকেরাই। বিডিও পূর্ণেন্দু স্যানাল বলছেন, ‘‘আমরা সাধারণ মানুষকে অনুরোধ করছি, বাড়িতে থাকুন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy