চাপড়ায় ভূমি সংস্কার দফতরের সামনে গ্রামবাসীরা। নিজস্ব চিত্র।
গোটা জমিটাই যেন বেমালুম লোপাট হয়ে গিয়েছে। চোখের সামনে জমি পড়ে থাকতে দেখা গেলেও সরকারি নথিতে নাকি তার অস্তিত্বই নেই! যার সুযোগে এলাকার প্রভাবশালীদের একাংশ সেই জমিতে বসবাসকারীদের উঠে যাওয়ার জন্য হুমকি দিতে শুরু করেছে বলে গ্রামবাসীদের দাবি। মঙ্গলবার ওই জমিতে বসবাসকারীরা চাপড়া ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করে অভিযোগের কথা জানান। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক।
চাপড়া ব্লকের বৃত্তিহুদা গ্রাম পঞ্চায়েতের হুদা গ্রামে জলঙ্গির পাড়ে নদীর ধার পাড়ার ৩২৫ নম্বর দাগে একটি খাস জমিতে প্রায় ৪০টি পরিবার দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছে। ওই পরিবারগুলির দাবি, বাম আমলে ওই খাস জমিতে তাঁদের পাট্টা দেওয়া হয়েছিল। জমির পরিমাণ প্রায় তিন একর। প্রত্যেককে প্রায় দশ থেকে বারো কাঠা করে জমি দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ, সম্প্রতি পাশের এলাকার বেশ কয়েকজন তাঁদেরকে জমির নতুন মানচিত্র দেখিয়ে জমি ছেড়ে চলে যেতে বলে। কারণ, সেই মানচিত্র অর্থাৎ এলআর (ল্যান্ড রিফর্ম)-এ ওই জমির কোনও অস্তিত্বই নেই।
ওই জমিতে বসবাসকারী জসীম মণ্ডল বলেন, ‘‘পুরনো ম্যাপ বা আরএস(রিভিশনাল সেটেলমেন্ট)-এ তিন একর জমি আছে। সেই জমিতে আমরা প্রায় ৪০টি পরিবার দীর্ঘদিন ধরে বাস করছি। বাম আমলে আমাদের পাট্টা দেওয়া হয়েছিল। এখন কিছু লোক এসে জমির নতুন মানচিত্র দেখিয়ে বলছে, সেখানে নাকি মাত্র ১৬ শতক জমি দেখানো রয়েছে। অর্থাৎ আমাদের কোনও জমিই নেই।” তাঁর প্রশ্ন, ‘‘জমি গেল কোথায়? কারা নিল সেই জমি?’’ এভাবে কাউকে তাঁরা জমি কেড়ে নিতে দেবেন না।” স্থানীয় বাসিন্দা তথা বৃত্তিহুদা পঞ্চায়েতের আইএসএফ সদস্য হেবল বিশ্বাস বলেন, “এতটা জমি কী ভাবে উবে গেল! পুরনো মানচিত্রে আছে অথচ নতুন মানচিত্র নেই বলে দাবি করা হচ্ছে। আমরা বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দফতরে জানিয়েছি। আশা করছি প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখে সংশোধন করবে।” শুধু হুদা গ্রামেই নয়। ব্লক অফিস সূত্রে জানা গিয়েছে একই ঘটনা ঘটেছে চাপড়া ব্লকের মহৎপুরের ১ ও ১০ নম্বর দাগ ও হাতিশালা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১ ও ২ নম্বর দাগেও।
চাপড়া ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক গোকুল মণ্ডল অবশ্য বলছেন, “চূড়ান্ত মানচিত্র এখনও প্রকাশ করা হয়নি। সেটা প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত এই বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারব না।” তাঁর দাবি, ‘‘হেতু এখনও জমির চূড়ান্ত মানচিত্র প্রকাশ হয়নি তাই ওই মানচিত্র আসল নয় বলেই আমাদের ধারণা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy