Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
স্বাস্থ্য দফতর বলছে, দরকার নেই
Coronavirus

নিজেরা কিনে মাস্ক পরছেন ডাক্তারবাবুরা

একই জেলায় দুই সরকারি হাসপাতালে দু’রকম নিয়ম কেন তার ব্যাখ্যা স্বাস্থ্যকর্তারা দিতে পারেননি। মাস্ক আদৌ জরুরি কিনা, তা নিয়ে সঠিক কোনও প্রচার অভিযানও সরকারি তরফে নেই।

শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিজেরই কিনে আনা মাস্কের উপরে সেলোটেপ জড়িয়ে বসলেন চিকিৎসক। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য ও প্রণব দেবনাথ

শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিজেরই কিনে আনা মাস্কের উপরে সেলোটেপ জড়িয়ে বসলেন চিকিৎসক। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য ও প্রণব দেবনাথ

মনিরুল ইসলাম ও সুদীপ ভট্টাচার্য
কল্যাণী ও কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২০ ০২:৪৩
Share: Save:

করোনা প্রতিরোধে মাস্ক পরা উচিৎ কিনা তা নিয়ে বিভ্রান্ত এবং দ্বিধাবিভক্ত চিকিৎসক মহলও।

কৃষ্ণনগর জেলা হাসপাতালে যেখানে স্বাস্থ্য দফতর চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার এখনও সরবরাহ করেনি, সেখানে কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সকলের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ মাস্ক ও স্যানিটাইজার দিয়েছেন। এই মেডিক্যাল কলেজ স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাভুক্ত।

একই জেলায় দুই সরকারি হাসপাতালে দু’রকম নিয়ম কেন তার ব্যাখ্যা স্বাস্থ্যকর্তারা দিতে পারেননি। মাস্ক আদৌ জরুরি কিনা, তা নিয়ে সঠিক কোনও প্রচার অভিযানও সরকারি তরফে নেই। ফলে সাধারণ মানুষের বিভ্রান্তি আরও বেশি। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেছেন, ‘‘আমরা চিকিৎসকেরা কেউ মাস্ক পরছি না। সরকারি ভাবে তা হাসপাতালে কাউকে দেওয়াও হচ্ছে না। কারণ, এর প্রয়োজন নেই। যখন তা প্রয়োজন মনে করা হবে‌ তখন দেওয়া হবে।’’তাঁকে বলা হয়, মঙ্গলবারই কৃষ্ণনগর জেলা হাসপাতালের আউটডোরে বেশির ভাগ চিকিৎসককে মাস্ক পরে থাকতে দেখা গিয়েছে। সরকারি ভাবে মাস্ক না পেয়ে তাঁরা নিজেরা কিনে নিয়েছেন। চিকিৎসক হয়েও তাঁরা কেন তা হলে মাস্ক প্রয়োজন বলে মনে করছেন? এতে সিএমওএইচের জবাব, ‘‘যে যার মতো করছেন। এতে আমাদের কোনও হাত নেই। ব্যক্তিগত ইচ্ছা।’’আবার কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজের সুপার অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘আমরা হাসপাতালের সব চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীকে মাস্ক দিচ্ছি। আউটডোরে এত রোগী আসেন। তাঁদের দেখার সময় ডাক্তারদের মাস্ক পরে থাকা দরকার।’’তিনি আরও জানান, আজ বুধবার বা বৃহস্পতিবার থেকে হাসপাতালে একটা আলাদা আউটডোর খোলা হবে। সেখানে সর্দি, কাশি, জ্বর নিয়ে আসা রোগীদের পাঠানো হবে। সেখানে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক হবে।মঙ্গলবার জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজের আউটডোরে গিয়ে দেখা গেল, অসংখ্য রোগী। এত ভিড়ে রোগীদের সঙ্গে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করা যাচ্ছে না। নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে তাঁদের বার বার হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হচ্ছে। শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে আবার চিকিৎসকদেরই মাস্ক ও স্যানিটাইজার কিনতে হচ্ছে। এ দিন একাধিক চিকিৎসককে দেখা গেল, মাস্ক শক্তপোক্ত ভাবে নাকে-মুখে আটকে রাখতে তা সেলোটেপ দিয়ে মুখের সঙ্গে লাগিয়ে রেখে কাজ করছেন। অনেকে যতটা সম্ভব রোগীকে কম স্পর্শ করছেন। অস্থি বিভাগের চিকিৎসক অঞ্জন সেনগুপ্ত বলেন, "মাথায় ক্যাপ, মুখে মাস্ক পরে যতটা সম্ভব নিজেকে নিরাপদ রাখার চেষ্টা করছি"। আবার মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সব সময় মাস্ক পরে থাকা স্বাস্থ্যকর নয়। তবে ১ মিটার দূরত্ব রেখে রোগীকে পরীক্ষা করছি"। তথ্য সহায়তা: সুস্মিত হালদার

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Doctors
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE