প্রতীকী ছবি।
কার্নিভাল কোভিড হাসপাতালে বেড়েই চলেছে মৃতের সংখ্যা। নদিয়া জেলায় করোনাভাইরাসে যত জনের মৃত্যু হয়েছে তার একটা বড় অংশই কল্যাণীর এই হাসপাতালে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। বরং সেই অর্থে কৃষ্ণনগরের গ্লোকাল কোভি় হাসপাতালের অবস্থা অপেক্ষাকৃত সন্তোষজনক। কার্নিভালে কেন এত মৃত্যু ঘটছে তা পর্যালোচনা করার পাশাপাশি প্রয়োজনে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের সিদ্ধান্তে নেওয়া হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। যদিও কার্নিভালের চিকিৎসকদের পাল্টা দাবি, তাঁদের তরফে কোনও গাফিলতি নেই। পরিকাঠামোর অভাবেই অনেক রোগীকে বাঁচানো যাচ্ছে না।
বস্তুত, প্রথম থেকেই করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা করা নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও কল্যাণী জেএনএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মধ্যে টানাপড়েন চলছে। গোড়ার দিকে কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসা করায় নারাজ ছিলেন জেএনএম হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। অনেক বাগবিতণ্ডার পরে ঠিক হয়, সপ্তাহে চার দিন জেএমএম হাসপাতালে আর তিন দিন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা কার্নিভালে চিকিৎসা করবেন। সেই মতো ‘ডিউটি রস্টার’ তৈরি হয়।
কিন্তু করোনায় মৃত্যু রুখতে অনেকটাই ব্যর্থ হয়েছে কার্নিভাল। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা পর্যন্ত নদিয়া জেলায় করোনায় ঘোষিত মৃত্যু ১৮৩। মৃতদের মধ্যে জেলার বাইরে পরীক্ষা বা চিকিৎসা হয়েছে এমন রোগী এবং জেলা ও মহকুমা হাসপাতালের আইসোলেশন ওায়ার্ডে ভর্তি থাকা ৩১ জন রয়েছেন। বাকি ১৫২ জনের মধ্যে গ্লোকালে মৃত্যু হয়েছে ৫৫ জনের, আর কার্নিভালে ৯৭ জনের। কার্নিভাল সূত্রে আরও একটি পরিসংখ্যান পাওয়া যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা পর্যন্ত সেখানে ১২৪৬ জন ভর্তি হয়েছেন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন ১০৪৯ জন। আর মারা গিয়েছেন ১২৭ জন, যার মধ্যে ৩০ জন অন্য জেলার। এত মৃত্যুর পিছনে একাধিক কারণ খুঁজে পাযা যাচ্ছে বলে দাবি কর্তাদের। সেই কারণগুলি নির্মূল করতে একাধিক পদক্ষেপ করাও শুরু হয়েছে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু তার পরেও মৃত্যু কমানো যাচ্ছে না। বুধবার জেলায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁরা সকলেই কার্নিভালে ভর্তি ছিলেন বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
প্রথম থেকেই চিকিৎসা পরিষেবা সংক্রান্ত বিষয়ে দু’টি হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছিল। সম্প্রতি গ্লোকালে কর্তব্যরত শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের দু’জন ও কার্নিভালে কর্তব্যরত এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে ‘শো-কজ়’ করা হয়। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, কার্নিভালে কর্তব্যরত জেএনএম হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আছে। কিন্তু জেএমএম হাসপাতালের চিকিৎসকরা ‘পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়’-এর অধীন। তাই জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সরাসরি পদক্ষেপ করতে পারছেন না। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের বিষয়ে তিনি জেএনএম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে একাধিক বার চিঠিও দিয়েছেন। স্বাস্থ্যকর্তাদের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের পদস্থ কর্তারাও বিষয়টি নিয়ে বৈঠক করে কড়া বার্তা দিয়েছেন। সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছেন স্বয়ং জেলাশাসকও। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, কার্নিভালে গাফিলতির ঘটনায় অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করার জন্য রাজ্যের কাছে সুপারিশ করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy