E-Paper

বিশ্ববঙ্গ থেকে মুর্শিদাবাদ পেল না কিছুই

গত ২১ ও ২২ নভেম্বর কলকাতায় বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন সেক্টরের ২৯ জন ব্যবসায়ী উদ্যোগী উপস্থিত হয়েছিলেন।

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:২০
বিশ্ববঙ্গ বানিজ্য সম্মেলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বিশ্ববঙ্গ বানিজ্য সম্মেলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

জেলায় ভাগীরথী-গঙ্গা পদ্মার মতো জলপথ রয়েছে। তেমনই রেলপথ, সড়কপথ রয়েছে। সে সব পথের ধারে শিল্পের জন্য পর্যাপ্ত জমিও রয়েছে। কিন্তু পরিকাঠামোগত এত সুযোগ থাকা সত্ত্বেও হাতে গোনা কয়েকটি সিমেন্ট কারখানা এবং দু’টি বিদ্যুৎ উৎপাদন কারখানা ছাড়া মুর্শিদাবাদে তেমন বড় কারখানা নেই। যার জেরে মুর্শিদাবাদের কয়েক লক্ষ মানুষ পরিযায়ী শ্রমিকের কাজে ভিন্ রাজ্যে কাজে যেতে বাধ্য হন। তাই রাজ্যে শিল্প সম্মেলন হলেই তার দিকে তাকিয়ে থাকেন মুর্শিদাবাদের বাসিন্দারা। কিন্তু একটার পর একটা শিল্প সম্মেলন পার হয়েছে, জেলায় শিল্পে বিনিয়োগ হয়নি। গত বছর শিল্প সম্মেলনে রেজিনগর শিল্পতালুকে ই-বাস কারখানা করার জন্য একটি সংস্থা রাজ্য সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেছিল। তবে আজও তাতে কোনও বিনিয়োগ হয়নি। আর গত সপ্তাহে হয়ে যাওয়া বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে মুর্শিদাবাদে বিনিয়োগের জন্য কোনও চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়নি বলে ব্যবসায়ীদের সংগঠন অভিযোগ তুলেছে। যার জেরে হতাশ মুর্শিদাবাদের বাসিন্দারা।

গত ২১ ও ২২ নভেম্বর কলকাতায় বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন সেক্টরের ২৯ জন ব্যবসায়ী উদ্যোগী উপস্থিত হয়েছিলেন। তাঁদের সঙ্গে গিয়েছিলেন মুর্শিদাবাদ শিল্পকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত জেনারেল ম্যানেজার আহমদুল্লা তালিবও। বুধবার বিকেলে আহমদুল্লা তালিব বলেন, ‘‘আমাদের জেলায় বড় শিল্পে বিনিয়োগের বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। রাজ্য থেকে জানালে তা আমরা জানাতে পারব।’’

মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়ের সাধারণ সম্পাদক স্বপনকুমার ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘গত বছরের মতো এ বছরও আমরা বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে ডাক পেয়েছিলাম। সে বার একটি সংস্থা ই-বাস কারখানা করবে বলে রাজ্য সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেছিল। এ বছর আমাদের চোখের সামনে অন্য জেলার জন্য বিভিন্ন শিল্প সংস্থার সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও মুর্শিদাবাদের জন্য কিছু হয়নি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘বারবার শিল্প সম্মেলন হচ্ছে। তাতে অন্য জেলার শিল্পে কেমন বিনিয়োগ আসছে জানি না। কিন্তু আমাদের জেলায় বড় বিনিয়োগ আসছে না। যার জেরে আমাদের জেলা পিছিয়েই থাকছে। আমাদের জেলায় পর্যটনের বড় সম্ভাবনা রয়েছে। অথচ সেই পর্যটনেও কোনও বিনিয়োগ নেই।’’ বহরমপুরের বাসিন্দা দীপক মণ্ডল বলেন, ‘‘আমাদের জেলায় মাত্র তিন মাসে প্রায় তিন লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক নাম নথিভুক্ত করেছেন। ফলে এতেই বোঝা যাচ্ছে কত মানুষ পরিযায়ী শ্রমিকের কাজে বাইরে যান। এই পরিযায়ী শ্রমিক কমাতে হলে এলাকায় কাজ দিতে হবে। সে জন্য শিল্প দরকার। সেই শিল্প থেকে বার বার বঞ্চিত থাকছে মুর্শিদাবাদ।’’

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে ২০০৮ সালে তৎকালীন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য রেজিনগরে ১৮৭ একর জমির উপরে শিল্পতালুকের শিলান্যাস করেছিলেন। কিন্তু হাতে গোনা দু’এক জন ছাড়া উদ্যোগীরা রেজিনগর শিল্পতালুকমুখী হননি। যার জেরে একপ্রকার খা খা করছে এই শিল্পতালুক। ই-বাস প্রকল্পও কার্যকরী হয়নি, যা নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিল জেলা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Berhampore Mamata Banerjee

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy