Advertisement
E-Paper

দৃষ্টিহীনদের দাবায় কিস্তিমাত দীপ্তজিতের

পুলিশের উদ্যোগে উত্তরণ কাপ ফুটবল প্রতিযোগিতা শেষ হতে না হতেই সপ্তাহের শেষ দু’দিন নবদ্বীপ মাতল দাবায়। নদিয়া জেলা দাবা সংস্থার উদ্যোগে শনি এবং রবিবার নবদ্বীপে অনুষ্ঠিত হল সারা বাংলা দৃষ্টিহীন দাবা প্রতিযোগিতা। একই সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়েছে নদিয়া জেলা দাবা প্রতিযোগিতা, ২০১৫।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৫ ০২:৩৪
দৃষ্টিহীনদের দাবা নবদ্বীপে।

দৃষ্টিহীনদের দাবা নবদ্বীপে।

পুলিশের উদ্যোগে উত্তরণ কাপ ফুটবল প্রতিযোগিতা শেষ হতে না হতেই সপ্তাহের শেষ দু’দিন নবদ্বীপ মাতল দাবায়।

নদিয়া জেলা দাবা সংস্থার উদ্যোগে শনি এবং রবিবার নবদ্বীপে অনুষ্ঠিত হল সারা বাংলা দৃষ্টিহীন দাবা প্রতিযোগিতা। একই সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়েছে নদিয়া জেলা দাবা প্রতিযোগিতা, ২০১৫। গত ১৪-১৫ মার্চ, রাজ্য পর্যায়ের এই প্রতিযোগিতার আয়োজনের সহযোগিতায় ছিল ‘বেঙ্গল চেস অ্যাসোসিয়েশন’, ‘বেঙ্গল চেস অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য ব্লাইন্ড’ এবং ‘টার্নস্টোন গ্লোবাল সংস্থা’। রাজ্যের বিভিন্ন জেলার নানা বয়সের দৃষ্টিহীন দাবাড়ুদের মগজাস্ত্রের লড়াই ঘিরে সরগরম ছিল নবদ্বীপ সাধারণ গ্রন্থাগার অডিটোরিয়াম।

প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নবদ্বীপে গত কয়েক বছর ধরে একাধিক সংগঠন দাবা নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে। এপিসি ব্লাইন্ড স্কুল এবং নদিয়া জেলা দাবা সংস্থা এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। ২০১৩ সালে ইতিহাসের শহর নবদ্বীপের ক্রীড়া ইতিহাসে যুক্ত হয় এক নতুন অধ্যায়। সেই বছর ডিসেম্বরের শেষ পাঁচ দিন ধরে এ রাজ্যের প্রথম অন্ধদের জন্য আন্তর্জাতিক রেটিং সম্পন্ন দাবা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় নবদ্বীপে। বেঙ্গল চেস অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য ব্লাইন্ড এবং নবদ্বীপ এপিসি ব্লাইন্ড স্কুলের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘ন্যাশনাল ওপেন ফিডে রেটিং চেস টুর্নামেন্ট ফর দ্য ব্লাইন্ড’ প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন রাজ্যের প্রায় দেড়শো জন নানা বয়সের দৃষ্টিহীন দাবাড়ু যোগ দেয়। ছিলেন গ্র্যান্ডমাস্টার দিব্যেন্দু বড়ুয়া।

এ রাজ্যে দাবা সব সময়ই ভীষণ ভাবে কলকাতা কেন্দ্রিক। সারা বাংলা দৃষ্টিহীন প্রতিযোগিতায় জিতেছেন রিষড়ার দীপ্তজিত্‌ দে, রানার্স নবদ্বীপের এপিসি ব্লাইন্ড স্কুলের মিরজান শেখ, তৃতীয় স্থানে নবদ্বীপের শঙ্কর চক্রবর্তী। প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন জেলা থেকে ১২০ জন দৃষ্টিহীন দাবাড়ু যোগ দেয়। নদিয়া ছাড়াও পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, দার্জিলিং, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, কলকাতা, হুগলি-সহ বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিযোগিরা এসেছিলেন। এঁদের মধ্যে কয়েক জন ছিলেন আন্তর্জাতিক রেটেড খেলোয়ার। অন্য দিকে, নদিয়া জেলা দাবা প্রতিযোগিতায় ৫২ জন যোগ দেয়। জেতে চাপড়ার অর্ধেন্দু মণ্ডল, রানার্স কল্যাণীর অভিজিত্‌ ঘোষ।

নদিয়া জেলা দাবা সংস্থার সম্পাদক তুষার চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এই দুটি প্রতিযোগিতাই রাজ্যস্তরে পৌঁছানোর প্রাথমিক পর্ব। নদিয়া জেলা দাবা প্রতিযোগিতার জয়ী প্রথম দু’জন বেঙ্গল চ্যাম্পিয়নশিপে খেলার সুযোগ পাবেন।” প্রতিযোগিরা রাজ্যস্তরে পৌঁছে গেলেও আয়োজক সংস্থা কিন্তু সেই তিমিরেই! তুষারবাবু বলেন, “সারা বছর ধরে অনুশীলনের মধ্যে রাখার জন্য যে ধরনের বই, কম্পিউটার, প্রশিক্ষক দরকার তা নেই। তবে খেলোয়াড়দের মধ্যে আগ্রহ বাড়ছে।” এই অবস্থায় প্রতিযোগিতার আয়োজন কত দিন করতে পারবেন, তা নিয়ে সংশয়ে তিনি।

বেঙ্গল চেস অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য ব্লাইন্ড এবং অল ইন্ডিয়া চেস ফেডারেশন ফর দ্য ব্লাইন্ডের সম্পাদক কাঞ্চন গাবা বলেন, “নবদ্বীপে আয়োজিত প্রতিযোগিতার জয়ী প্রথম চার জন পূর্বাঞ্চলীয় দাবা প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে পারবে।” প্রবল ইচ্ছাশক্তিকে সঙ্গী করে এগিয়ে চলেছে নদিয়া জেলা দাবা সংস্থা। সংস্থার চেয়ারম্যান প্রশান্ত সরকারের কথায়, “অর্থাভাব কিস্তিবন্দী করলেও যেন কিস্তিমাত্‌ করতে না পারে।’’

blind chess competition nabadwip diptajeet de
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy