Advertisement
E-Paper

ছাত্র-ভর্তি, চাঁদা দাবি টিএমসিপি-র নামে

সোমবার থেকে ওই মেডিক্যাল কলেজে প্রথম বর্ষে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। চলবে আজ, বুধবার পর্যন্ত। সোমবারই অধ্যক্ষের ঘরে ঢোকার মুখে চেয়ার-টেবিল পেতে টিএমসিপি ইউনিটের নাম করে দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের কিছু ছাত্র চাঁদা তোলা শুরু করে।

শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৪৩
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে চলছে চাঁদা আদায়। —নিজস্ব চিত্র

মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে চলছে চাঁদা আদায়। —নিজস্ব চিত্র

সোমবার থেকে ওই মেডিক্যাল কলেজে প্রথম বর্ষে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। চলবে আজ, বুধবার পর্যন্ত। সোমবারই অধ্যক্ষের ঘরে ঢোকার মুখে চেয়ার-টেবিল পেতে টিএমসিপি ইউনিটের নাম করে দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের কিছু ছাত্র চাঁদা তোলা শুরু করে। ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের তারা জানিয়ে দেয়, ফর্ম পেতে গেলে ওই চাঁদা দিতেই হবে। মঙ্গলবারও তারা একই ভাবে চাঁদা তুলেছে। এ দিন খবর সংগ্রহে গেলে সাংবাদিক ও চিত্রগ্রাহকদের তারা হেনস্থাও করে।

মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অজয় রায় বলেন, ‘‘কাউকে কোনও চাঁদা না দেওয়ার কথা জানিয়ে মাইকে প্রচার করা হচ্ছে। এখন তার পরেও যদি কোনও অভিভাবক চাঁদা দেন, তা হলে সেটা তাঁদের বিষয়।’’ তাঁর দাবি, বিষয়টি কানে আসার পরেই সোমবারই ওই ছাত্রদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘এ দিন ওরা ফের কী করে বসল, খোঁজ নিয়ে দেখছি। তবে আমার কাছে কেউ কোনও অভিযোগ জানায়নি।’’

চাঁদা আদায়কারীরা অবশ্য টাকা তোলার কথা অস্বীকার করছে না। দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র তথা তথাকথিত টিএমসিপি ইউনিটের ‘জেনারেল সেক্রেটারি’ তুহিন খানের ব্যাখ্যা, ‘‘হস্টেলের বাথরুমে ভাঙা দরজা, বেসিন বা কল নষ্ট হয়ে গেলে সারাতে হয়। অনেক সময়ে দুঃস্থ সহপাঠীদের বইও কিনে দিতে হয়। তাই টাকা তোলা হচ্ছিল।’’ তাঁরা জানান, হস্টেল উন্নয়ন খাতে পাঁচশো টাকা আর সংগঠনের নামে বাকি পাঁচশো টাকা নেওয়া হচ্ছে। তুহিনের দাবি, ‘‘তবে কাউকে জোর-জবরদস্তি করা হয়নি।’’

কিন্তু যে ফর্ম কলেজের দেওয়ার কথা, কিছু ছাত্র তা নেওয়ার ব্যাপারে শর্ত আরোপ করছে কী করে? ওই কলেজে এসএফআইয়ের ইউনিট সম্পাদক অর্পণ চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘কলেজ কর্তৃপক্ষের একাংশের সঙ্গে যোগসাজসেই ওরা চাঁদা তুলছে। গত বছর আমরা প্রতিবাদ করায় বন্ধ করেছিল। এ বার আবার তুলছে।’’ এই অভিযোগের কোনও সদুত্তর অবশ্য কলেজের তরফে মেলেনি।

ওই টাকা কোথায় যাবে তা নিয়েও ছাত্রছাত্রীদের একাংশ সন্দিহান। এক তৃতীয় বর্ষের ছাত্র জানান, সরকারি হস্টেলে ফি হিসেবে তাঁদের থেকে বছরে ১৪৪ টাকা করে নেওয়া হয়। টিউবওয়েল বা বেসিন খারাপ হলে তাঁরা নিজেরাই চাঁদা তুলে তা সারাই করেন। টিএমসিপি নামধারী ছাত্রদের হস্টেলের কেয়ারটেকারের দায়িত্ব কে দিল, সেই প্রশ্নও তুলছেন তাঁরা।

টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি ভীষ্মদেব কর্মকার অবশ্য দাবি করেন, ‘‘ওখানে আমাদের কোনও সংগঠন নেই। যারা নিজেদের টিএমসিপি বলছে, তারা আমাদের কেউ নয়।’’

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী পাল্টা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর আমলে শিক্ষার উন্নয়ন হোক আর না হোক, শিক্ষাঙ্গনে তোলা-রাজ তৈরি হয়েছে। সিন্ডিকেট রাজের মতো তোলাবাজিতেও জড়িয়ে পড়ছেন মুখ্যমন্ত্রীর ছোট ছেলেরা।’’

ডিএসও-র জেলা সভাপতি সাবির আলির অভিযোগ, এ দিনই কলকাতায় ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে টিএমসিপি-র চাঁদা তোলা রুখতে গিয়ে তাঁদের এক সদস্য মার খেয়েছেন। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালেও কলেজেও একই ঘটনা ঘটছে।

Medical college Donation College student
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy