কল আছে, জল নেই। রানাঘাটের আনুলিয়ায়। নিজস্ব চিত্র
কল আছে, অথচ মিলছে না জল। প্রায় সাত দিন ধরে ‘জল জীবন মিশন’ বা ‘জলস্বপ্ন’ প্রকল্পের জল না পেয়ে সমস্যায় পড়েছেন একাধিক গ্রামে কয়েক হাজার বাসিন্দা। বাধ্য হয়ে অনেকেই জল কিনে খাচ্ছেন। যাঁদের সেই সামর্থ্যটুকু নেই, তাঁরা বাধ্য হয়ে নলকূপের আর্সেনিকযুক্ত জল পান করছে। গ্রাম পঞ্চায়েতকে জানিয়েও সমস্যা মেটেনি বলে অভিযোগ।
রানাঘাট ১ ব্লকের আনুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের মনসাতলায় রয়েছে একটি পাম্পঘর। সপ্তাহখানেক আগে সেখানকার একটি পাম্প বিকল হয়ে যায়। তখন থেকেই বন্ধ পানীয় জলের পরিষেবা। ওই পঞ্চায়েতের অধীনস্থ শ্রীনাথপুর, ঘোষ কলোনি, ঘোড়াগাছা, বিহারীলাল পল্লি প্রভৃতি এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা দেখা দিয়েছে।
‘জলস্বপ্ন’ প্রকল্পের অধীনে গ্রামীণ এলাকায় বাড়ি-বাড়ি পানীয় জলের সংযোগ দেওয়ার কাজে রাজ্যে প্রথম স্থানে রয়েছে নদিয়া জেলা। যদিও জেলায় ১৮৫টি পঞ্চায়েতে সর্বত্র এই কাজ এখনও সম্পন্ন হয়নি। বর্তমানে আনুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতেও পানীয় জলের সংযোগ দেওয়ার কাজ চলছে।
শ্রীনাথপুর এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, এক বছরও হয়নি যে তাঁরা পানীয় জলের সংযোগ পেয়েছেন। এরই মধ্যে সমস্যা দেখা দিয়েছে। প্রতি দিন দিনে চার বার জল মিলত। কিন্তু গত সাত দিন জলই মেলেনি। প্রবীণ বাসিন্দা পরিমল বসাক বলে, “বৃদ্ধ বয়সে দূর থেকে পানীয় জল বয়ে আনা সম্ভব নয়। বাধ্য হয়ে জেনে-বুঝে নলকূপের আর্সেনিকযুক্ত জল খাচ্ছি।” অনেকে আবার বলছেন, আগে চার বার জল দিলেও কল থেকে সুতোর মতো সরু জল বেরোত। দীর্ঘ সময় কলের নিচে পাত্র রেখে দিতে হত। এখন সেটুকুও অমিল।
আনুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শম্পা বিশ্বাস বলেন, “আগে জল সরবরাহের বিষয়টি পঞ্চায়েতের হাতে থাকলেও বর্তমানে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের (পিএইচই) অধীনে রয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্ট দফতরকে জানিয়েছি। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেই জলের সমস্যা মিটছে না।” নদিয়া জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আর্সেনিক ডিভিশন ১-এর ইঞ্জিনিয়ার সুস্মিত বাগচি বলেন, “দ্রুত যাতে সমস্যা সমাধান হয়, আমরা সেই চেষ্টাই করছি।”
প্রশ্ন উঠছে, যে পাম্পের উপর বিস্তীর্ণ এলাকার পানীয় জলের পরিষেবা নির্ভরশীল, সাত দিনেও কেন সেটির যান্ত্রিক ত্রুটি ঠিক করতে পারল না পিএইচই? নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রশাসনিক দফতরের এক কর্তার ব্যাখ্যা, “বাড়ি-বাড়ি পানীয় জলের সংযোগের ক্ষেত্রে জোর দেওয়া হচ্ছে। অথচ জলের উৎস কোথায়, গ্রামীণ এলাকায় কী ভাবে প্রত্যেক বাড়িতে পানীয় জলের পরিষেবা পৌঁছবে, সে সব বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে না দেওয়ার কারণেই এ ধরনের সমস্যাদেখা দিয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy