Advertisement
E-Paper

ট্রেন-টোটো-ট্রেকার শূন্য জেলায় চলছে নির্ভেজাল ভোগান্তি

দুর্ভোগের এই চেনা ছবিতে অচেনা যোগ, আচমকা একটা বাস কিংবা ট্রেকারের দেখা মিললে। হুড়মুড়িয়ে এগিয়ে গিয়ে চড়া ভাড়ার হুমকিতে পিছিয়ে আসা। 

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৩২
বাসের জন্য অপেক্ষা বহরমপুরে। নিজস্ব চিত্র

বাসের জন্য অপেক্ষা বহরমপুরে। নিজস্ব চিত্র

উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের মাঝে সেতুর মতো জুড়ে থাকা জেলা মুর্শিদাবাদে তিন দিন ধরে ট্রেনের চাকা ঘুরছে না। রাস্তা থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে বাস-টোটো-ট্রেকার। শুধু মাঝে মাঝে পুলিশের জিপ হুঙ্কার দিয়ে ছুটে যাচ্ছে। বাসস্ট্যান্ডে রোদে পিঠ দিয়ে অপেক্ষা, যদি কিছু পাওয়া যায়। নিতান্ত নিরুপায় হয়ে পথে নামা মানুষজনের এ ছবিটা সারা দিন দেখল মুর্শিদাবাদ। দুর্ভোগের এই চেনা ছবিতে অচেনা যোগ, আচমকা একটা বাস কিংবা ট্রেকারের দেখা মিললে। হুড়মুড়িয়ে এগিয়ে গিয়ে চড়া ভাড়ার হুমকিতে পিছিয়ে আসা।

আসফক শেখ পথে নেমেছিলেন ফরাক্কা যাবেন বলে। বলছেন, ‘‘ভাইপোটা অসুস্থ। ফরাক্কায় যাওয়া খুব জরুরি। কিন্তু বহরমপুর থেকে বেরোতেই পারলাম না।’’ কলকাতা থেকে ব্যাগ টেনে, চার ঘণ্টার পথ বারো ঘণ্টায় পৌঁছেও একটা রিকশা না পেয়ে হাঁ করে বসে ছিলেন অপর্ণা বসু। বলছেন, ‘‘এমন জানলে আসতামই না এখন।’’ দূরান্ত থেকে ঘরে ফেরা কিংবা ফিরতে চাওয়া এমনই অগুন্তি মানুষের অপেক্ষা দেখেছে এ দিনও মুর্শিদাবাদ।

ট্রেনের চাকা রবিবাও গড়ায়নি জেলায়। তিন-তিনটে দিন পেরিয়ে গেলেও নয়া নাগরিকত্ব আইন বিরোধী বিক্ষোভের জেরে এ দিনও মুর্শিদাবাদ জুড়ে স্তব্ধ রইল ট্রেন চলাচল। আর, তার জেরে বহরমপুর থেকে ফরাক্কা— যাত্রীরা স্টেশনে এসেও ফিরে গেলেন নিরুপায় হয়ে। লালগোলা স্টেশনে দাঁড়িয়ে আখরুজ্জমান শেখ জানিয়ে গেলেন, ‘‘কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি বাবা, দেখতে যাওয়া হল না। জানি না কবে যেতে পারব!’’

দিনভর ট্রেন চলাচল স্তব্ধ থাকায় এ দিনও উত্তরবঙ্গের সঙ্গে রাজ্যের বাকি অংশের ট্রেন-যোগাযোগ বিচ্ছিন্নই থাকল।

এ দিন সকালেও ফরাক্কার কাছে মণিগ্রাম স্টেশনে আগুন লাগানোর চেষ্টা করে বিক্ষোভকারীরা। ট্রেন না চললেও তিলডাঙা স্টেশনে ভাঙচুরের চেষ্টা হয়। তবে রেল পুলিশ এবং আরপিএফের তৎপরতায় আধ ঘণ্টার মধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে শুধু জঙ্গিপুর মহকুমাতেই গত তিন দিনে দশটি স্টেশনে ভাঙচুর চালিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।

বেলডাঙা স্টেশন এ দিনও ছিল ফাঁকা। লাইনের উপরে দিনভর পড়ে থেকেছে পোড়া টায়ার আর শনিবারের ভাঙচুরের স্মৃতি, চেয়ার-টেবিল, কম্পিউটার, ভাঙা মোটরবাইক। একই চেহারা নিয়ে পড়ে থেকেছে লালগোলা, আজিমগঞ্জ, জিয়াগঞ্জ, লালবাগ কোর্ট কিংবা বহরমপুর শহরের দু-দু’টি স্টেশন। সকাল থেকেই ওই স্টেশনগুলিতে উৎসুক মানুষের ভিড়। দল বেঁধে গত দিনের ভাঙচুর দেখে ফিরে যাওয়ার আগে অনেকেই মোবাইল-ক্যামেরায় তুলে নিয়ে গিয়েছেন তার ছবি। আজিমগঞ্জ-ডাহাপাড়া, লালগোলা স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম জুড়ে সকাল থেকে ক্রিকেটের আসর বসিয়েছিল স্থানীয় ছেলেপুলেরা। এরই মাঝে, বিকেলের দিকে জিয়াগঞ্জ স্টেশনে জড়ো হয়েছিল এক দল বিক্ষোভকারী।

Protest Citizenship Ammendment Act Murshidabad Public Vehicle
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy