প্রতীকী চিত্র।
পুজোর আগল ভাঙা ভিড়ে কোভিড সংক্রমণ যে বাতাসে পাল তোলা নৌকা হয়ে ফিরবে, এ আশঙ্কা ছিলই। হাইকোর্টের রায় আসন্ন সেই সেই শঙ্কায় দিনে যে রাশ টানতে সাহায্য করবে, প্রশাসন থেকে পুজো কমিটির সচেতন কর্মকর্তারা তা মেনে নিচ্ছেন। রাজ্যের অধিকাংশ বড় বাজাটের পুজো অবশ্য কোনও না কোনও রাজনৈতিক দাদার প্রতিপত্তির ছায়ায় জৌলুশ বাড়িয়েছে, মণ্ডপগুলিকে কনটেনমেন্ট জ়োন ঘোযণায় তাঁদের চাপা অসন্তোষও তাই আড়ালে থাকেনি।
তবে, পুলিশ, চিকিৎসক, পুজো কর্তাদের অনেকেই মনে করছেন এটা ‘শাপে বর হয়েছে’! বহরমপুরের এক বড় মাপের পুজোর সর্বময় কর্তা তাই ঘনিষ্ঠদের কাছে কবুল করেছেন, ‘‘এতে ভালই হয়েছে। আমরা ঠাকুর দেখার প্রশ্নে বাধা দিচ্ছি, এ কথা সাধার মানুষ বলতে পারবেন না! তবে এ কথাও খুব ঠিক যে মণ্ডপে ভিড় মানে মুখ ঢাকা করোনাসুর! তা সামাল দেওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব হত না। তাতে পুজো পরবর্তী সময়ে করোনা সংক্রমণ বাড়লে আমাদের ঘাড়েই দোষ চাপত। বলা যেতে পারে এই রায় শাপে বর হল!’’
বিরোধী নেতারা বলছেন, পুজো কমিটিগুলিকে সরকারি অনুদান দিয়ে পরোক্ষে ভিড় ভেঙে পড়াকেই মদত জুগিয়েছিল সরকার। চক্ষুলজ্জা থাকলে হাইকোর্টের রায় মেনে তারা অন্তত একটু সচেতন হবে। পুজোর পরেই করোনা সংক্রমণ যে বাড়বে তা আঁচ করে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জেলায় কোভিড হাসাপাতালে শয্যা সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছিল। মুর্শিদাবাদেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। জেলায় কোভিড শয্যা ৩০০ থেকে বাড়িয়ে পুজোর মুখে তা করা হয়েছে ৩৩০। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার অমিয়কুমার বেড়া বলেন, ‘‘শারোদৎসবে ভিড় বাড়লে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে বাধ্য। পরিস্থিতি আঁচ করে তাই আমরা শয্যা সংখ্যা বাড়িয়ে রাখছি।’’
ভিড় ঠেকাতে হাইকোর্টের রায় শুনে উচ্ছ্বসিত জেলার ব্যবসায়ীরা। তাঁদের অনেকেই জানান, করোনা সংক্রমণ ফের জাঁকিয়ে বসলে রাজ্যে নতুন করে লকডাউন অবশ্যম্ভাবী। আর তা হলে ছোট ব্যবসায়ীদের উঠে দাঁড়ানোর ক্ষমতাই থাকবে না। মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অব কর্মাসের যুগ্ম সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, “সংক্রমণ বাড়লে শুধুই অসুস্থতা বাড়বে ব্যপারাটা এমন সহজ নয়। কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লে দিল্লি যদি রাজ্যে জোর করে লকডাউন ফিরিয়ে আনে তা হলে জেলার আর্থিক অবস্থাটা কী হবে ভাবতে পারছেন।’’ তিনি বলছেন, ‘‘এই রায় তাই সক্কলের মেনে চলা উচিত। তাতে আখেরে সকলের ভাল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy