মৃত রিঙ্কু তরফদারের বুথে পরিবর্ত বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও) হিসাবে পাশের বুথের বাসিন্দাকে নিয়োগ করল নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, রিঙ্কুর বুথে তিনি বাদে বিএলও হওয়ার মতো যোগ্য কেউ ছিলেন না। যে কারণে নতুন বিএলও নিয়োগ করতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে প্রশাসনকে। রিঙ্কুর বুথে এখন মূলত ভোটারদের তথ্য পোর্টালে আপলোড করার কাজ বাকি রয়েছে। ফলে এমন এক জনের খোঁজ করা হচ্ছিল, যিনি মোবাইল থেকে পোর্টালে তথ্য় আপলোডে স্বচ্ছন্দ।
চাপড়া বাঙ্গালঝি গ্রামের ২০১ নম্বর বুথের বিএলও হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছিল বাঙ্গালঝি স্বামী বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের পার্শ্বশিক্ষিকা রিঙ্কু তরফদারকে (৫৩)। ফর্ম বিলি ও সংগ্রহের কাজ তিনি প্রায় গুটিয়ে আনলেও অনলাইন পোর্টালে তথ্য আপলোড করার ক্ষেত্রে তিনি চাপে পড়ে যান। গত শনিবার সকালে তাঁকে ঘরের ভিতর ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বুথে ভোটার সংখ্যা ৬২৯। তার মধ্যে প্রায় ৯৫ শতাংশ ফর্ম সংগ্রহ করা হয়ে গিয়েছে, ১২৩ জনের তথ্য পোর্টালে আপলোডও হয়েছে। চাপড়া ব্লক প্রশাসনের এক কর্তা জানান, ওই বুথে এই কাজ করার যোগ্য বিকল্প কেউ নেই। আবার পাশের বুথ থেকেও এমন কাউকে নিয়োগ করে লাভ নেই যাঁর পক্ষে মোবাইল মারফত পোর্টালে তথ্য আপলোড কঠিন হতে পারে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য পাশের ২০২ নম্বর বুথের বাসিন্দা এক শিক্ষককে পাওয়া গিয়েছে, যাঁকে এই দায়িত্ব দেওয়া চলে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পাশের বুথের বাসিন্দা বছর ছত্রিশের ওই শিক্ষকের নাম রাকেশ কুণ্ডু। তিনি বর্তমানে মান্দিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাঁকে বিএলও-র নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট বুথের বাসিন্দা কোনও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীকেও বিএলও হিসাবে নিয়োগ করা যেত। কিন্তু ওই বুথের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী অন্য বুথের বাসিন্দা হওয়ায় একমাত্র পাশের বুথ থেকে কাউকে নিয়োগ করা ছাড়া প্রশাসনের হাতে বিকল্প ছিল না।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “আমরা এ ক্ষেত্রে অনলাইন পোর্টাল ব্যবহারে সড়গড় কাউকে দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলাম। কারণ হাতে সময় বেশি নেই। যাঁকে নিয়োগ করা হবে, তাঁর প্রশিক্ষণের সময় থাকবে না। ফলে এমন কাউকে পেতে হত যিনি সহজে প্রাযুক্তিক বিষয়টি বুঝে দ্রুত কাজ শুরু করতে পারবেন।”
বিকল্প বিএলও হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পরে রাকেশ কুণ্ডু বলেন, “বিষয়টা একেবারেই সহজ নয়। মাঝপথে একটা কাজ ধরে দ্রুত ও নির্ভুল ভাবে শেষ করতে হবে। তা-ও মাত্র সাত দিনের মধ্যে। তবে দায়িত্ব যখন দেওয়া হয়েছে, আমি আমার সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করব।” জেলাশাসক অনীশ দাশগুপ্ত বলেন, “নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা মেনেই নতুন বিএলও নিয়োগ করা হয়েছে। আশা করছি, আর কোনও সমস্যা হবে না।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)