Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

ডিজে হুঙ্কারে চেম্বারে তালা চিকিৎসকের

জেলার সীমান্ত এলাকা, ধুলিয়ানে ডিজে এখনও যেন সহজ-সংস্কৃতি। সন্ধে হলেই পথে ঘাটে, কোনও না কোনও অনুষ্ঠানের আড়ালে ডিজে বক্স না বাজলে যেন সম্পূর্ণতা পায় না।

চলছে ডিজে-র তালে নাচ। নিজস্ব চিত্র

চলছে ডিজে-র তালে নাচ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ধুলিয়ান শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:০২
Share: Save:

ডিজে বক্স বাজানো নিষিদ্ধ করেছে প্রশাসন, তবে সে নিছক খাতায় কলমে! না হলে ধুলিয়ান পুরসভার কমিউনিটি হলে নিত্য ডিজে’র মৌরুসি পাট্টা বসে কী করে? প্রশ্নটা শুনে ঠোঁট উল্টোচ্ছেন পাড়া-পড়শি আর পুর প্রধান সুবল সাহা আমতা আমতা করে বলছেন, ‘‘শুনলাম, বড্ড আওয়াজ। দেখি, বন্ধ করতে বলছি।’’

জেলার সীমান্ত এলাকা, ধুলিয়ানে ডিজে এখনও যেন সহজ-সংস্কৃতি। সন্ধে হলেই পথে ঘাটে, কোনও না কোনও অনুষ্ঠানের আড়ালে ডিজে বক্স না বাজলে যেন সম্পূর্ণতা পায় না।

সে না হয় একরকম, কিন্তু ধুলিয়ানের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের ঘোষপাড়ায় বাসিন্দারা দাবি করছেন, পুরসভার কনিউনিটি হলে ডিজে’র দাপট যেন সরকারি সিলমোহর দেওয়া। এলাকার মাধ্যমিক পড়ুয়াদের পড়াশোনা শিকেয়। অসুস্থ মানুষজন জানলা বন্ধ করে প্রহর গুনছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা এক শিক্ষিকা বলছেন, ‘‘বেলা ১টা নাগাদ শুরু হয় শব্দ তাণ্ডব। তার পরে রাত নিঝুম হলেও ডিজে থামে না। সামনে মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক, এলাকায় পড়ুয়ার সংখ্যা নেহাত কম নয়। রয়েছে একাধিক চিকিৎসকের চেম্বার, রোগীদের আনাগোনাও বন্ধ হওয়ার জোগাড়।’’

স্থানীয় বাসিন্দারা সমবেত ভাবেই ডিজে’র দাপট বন্ধের আর্জি লিখিত ভাবে জানিয়েছেন পুরসভা ও শমসেরগঞ্জ থানায়। সাকুল্যে একশো মিটার দূরে থানা। কিন্তু সাড়া মেলা তো দূরের কথা, অভিযোগ নিতেই প্রবল অনীহা পুলিশের। তাঁদের অভিযোগ, পুরকর্তাদের কাছে প্রায়ই নির্বিকার গলায় বলতে শোনা গেছে, ‘‘কী করব বলুন তো!’’

এক চিকিৎসক বলছেন, “প্রায় প্রতি দিনই কোনও না কোনও অনুষ্ঠান চলছে। এখন তো বিয়ের মরসুম। দুপুর থেকে বাজতে শুরু করে ডিজে, রোগী দেখা মাথায় উঠেছে। অতিষ্ঠ হয়ে এক দিন তো তালাই ঝুলিয়ে দিলাম!’’

প্রাক্তন বিধায়ক তোয়াব আলিও এই এলাকার বাসিন্দা। অতিষ্ঠ তিনিও। তাঁর স্ত্রী রক্তচাপে ভুগছেন। তোয়াব বলছেন, “পাড়ার লোকজন দল বেঁধে বহু বার থানায় ও পুরসভায় গিয়েছে শব্দ তাণ্ডব থেকে বাঁচতে। তার পরেও কেউ তৎপর হয়নি।”

চিকিৎসক তিতাস সরকার বলছেন, “রোগী দেখব কী, শব্দের দাপটে বসে থাকা যায় না। এক দিন, দু’দিন হলে মানিয়ে নেওয়া যায়। কিন্তু প্রতি দিনই এমনটা চললে চেম্বার তুলে দিতে হবে!’’

জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, “রাত বা দিন বলে নয়, লোকালয়ে ডিজে বাজানো যাবে না। আমি শমসেরগঞ্জ থানার পুলিশকে বলছি এলাকার কোথাও ডিজে বাজানো হলে কড়া ব্যবস্থা নিতে।’’ কিন্তু সে কথা পুলিশকর্মীরা শুনতে পাচ্ছেন কি!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sound Box Dhulian
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE