চৈতন্যধাম নবদ্বীপের গঙ্গার তীরে যেন তাঁকে দাহ করা হয়— এমন শেষ ইচ্ছা অনেকেই জানিয়ে যান। প্রিয়জনের সেই ইচ্ছা পূরণ করতে দূরদূরান্ত থেকে মৃতদেহ দাহ করতে আসেন পরিজনেরা। তাই সৎকারের ভিড় দিন-দিন বাড়ছে নবদ্বীপ মহাশ্মশানে। তিনটি বৈদ্যুতিক চুল্লি এবং খান চারেক কাঠের চিতাতেও সামাল দেওয়া যাচ্ছে না চাপ। গড়ে ৪০টি মৃতদেহ দাহ হয় হলেও শীতকালে ওই সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যায়।
আজ, ১ মে থেকে সেই নবদ্বীপ মহাশ্মশানে সৎকারের খরচ এক ধাক্কায় অনেকটাই বেড়ে গেল। বৈদ্যুতিক চুল্লির খরচ বাড়ল ৩০০ টাকা। আনুষঙ্গিক অন্য খরচ নিয়ে এত দিন বৈদ্যুতিক চুল্লিতে দাহ করতে খরচ পড়ত ১১১৫ টাকা। আজ থেকে তা বেড়ে হল ১৪২৫ টাকা। কাঠের চিতায় দাহ করার খরচ আরও বেশি। অতিরিক্ত লাগে অন্তত চার মণ কাঠ। যার দাম প্রায় ১৪০০ টাকা। ডোমেদের পারিশ্রমিক দিতে হয় পাঁচ-ছ’শো টাকা। অর্থাৎ কমপক্ষে আরও দু’হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ রয়েছে।
নবদ্বীপ শ্মশানে বর্তমানে তিনটি চুল্লি চালু রয়েছে। তার মধ্যে দু’টি বেশ পুরনো। ১৯৯৪ সালে নবদ্বীপে প্রথম বৈদ্যুতিক চুল্লির উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। এর পর, ২০২১ সালে প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে চালু হয় তৃতীয় চুল্লি। আধুনিক দূষণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাও চালু হয়। কিন্তু এ সবের কারণে নবদ্বীপ শ্মশানের প্রতি দিনের বিদ্যুৎ ব্যবহার অনেকটা বেড়েছে। কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, খরচ সামলাতেই বাড়ানো হল সৎকারের মাশুল। বৈদ্যুতিক চুল্লিতে দাহ এবং শংসাপত্রের খরচ মিলিয়ে একবারে প্রায় ৪২৫ টাকা বেড়ে গেল। স্বাভাবিক ভাবেই এই বর্ধিত খরচ নিয়ে প্রশ্নও উঠছে।
তবে নবদ্বীপের পুরপ্রধান বিমানকৃষ্ণ সাহার বক্তব্য, “অন্য জায়গায় তুলনায় আমাদের আমাদের এখানে সৎকারের খরচ কম। সারা রাজ্য থেকে আসা মৃতদেহের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। ফলে পুরসভার ব্যয়ও বাড়ছে। এই দর বাড়িয়েও কিন্তু পুরসভার উপর চাপ বিরাট কিছু কমবে না।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)