Advertisement
E-Paper

Christmas: ছোটবেলার কেকের গন্ধ ভোলেননি গোমেজ়রা

বাবা কলকাতার নিউ মার্কেট থেকে কিনে আনতেন কেক তৈরির উপকরণ। বাড়িতে মা-মাসিরা শুরু করে দিতেন কেকের প্রস্তুতি। 

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় 

শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:১৬
বড়দিনের কেক তৈরি হচ্ছে। বুধবার কৃষ্ণনগরের একটি বেকারিতে।

বড়দিনের কেক তৈরি হচ্ছে। বুধবার কৃষ্ণনগরের একটি বেকারিতে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।

চেরি কিংবা কিসমিসের বোঁটা ছাড়ানোর ডাক পড়লেই ছোট্ট গোমেজ বুঝতে পারত, বড়দিন এসে গিয়েছে।

বাবা কলকাতার নিউ মার্কেট থেকে কিনে আনতেন কেক তৈরির উপকরণ। বাড়িতে মা-মাসিরা শুরু করে দিতেন কেকের প্রস্তুতি। গোমেজ়রা দাদা-ভাইয়েরা মিলে কাজু, আমন্ডের খোসা ছাড়িয়ে, টুকরো করে রোদে শুকিয়ে রাখত। তবে পছন্দের কাজ ছিল ‘ব্যাটার’ নিয়ে খানিক দূরে নেমিস দাদুর বেকারিতে গিয়ে বেক করিয়ে আনা। ওভেন থেকে সদ্য বার করা সেই কেকের গন্ধ এখনও নাকে লেগে আছে মধ্য ষাটের জর্জ গোমেজ়ের।

পরবর্তী কালে কৃষ্ণনগরের অন্যতম বড় বেকারিটি গোমেজ় পরিবারের মালিকানায় চলে আসে। প্রায় চল্লিশ বছর ধরে তাঁরা নানা রকম কেক তৈরি করছেন। তবে এখনও বড়দিনের বিচিত্র স্বাদগন্ধের কেকের মধ্যে মায়ের হাতে তৈরি ছোটবেলার সেই ফ্রুট কেক বা ব্রাউন কেকের গন্ধ খুঁজে বেড়ান ৬৩ বছরের জর্জ।

গত বার বড়দিনে আসতে পারেননি অতিমারির জন্য। এ বার একটু আগেই বাড়ি চলে এসেছেন প্রভঞ্জন সরকার। কাতারের এক পাঁচতারা হোটেলের নামী শেফ হলেও বড়দিনের বাড়ির কেকের স্বাদ আর কোথাও খুঁজে পান না প্রভঞ্জন। বলেন, “ময়দা, চিনি, মাখন, ডিম আর কিছু শুকনো ফল। এই সামান্য উপকরণে বাড়ির তৈরি কেকের স্বাদ হাজার টাকা পাউন্ডের কেকেও মিলবে না।”

জর্জ গোমেজ়ের কথায়, “আগে বাবা নিউ মার্কেট থেকে যে শুকনো ফল আনতেন তাতে আসল চেরিই মিলত। এখনকার মতো করমচা নয়। এমনকি অরেঞ্জ পিল পর্যন্ত বাবা নিয়ে আসতেন। ফ্রুটকেকের সমস্ত শুকনো ফল বাড়িতে প্রসেস করা হত।”

ডিম, ময়দা, মাখনের সঙ্গে পোড়া চিনি, বেশি পরিমাণে কালো কিশমিশ আর ‘রাম’ মিশিয়ে তৈরি ঘরোয়া ব্রাউন কেকের কাছে নামী কেক দাঁড়াতেই পারবে না— এমনটাই মত অভিজ্ঞ বেকারি মালিক জর্জের।

এক সময়ে বড়দিনের আগে দিন তিনেক কেক তৈরির চাপ থাকত। এখন ডিসেম্বরের ১৬ তারিখে নভেনা শুরুর সঙ্গে-সঙ্গে কেক তৈরি শুরু হয়ে যায় বিভিন্ন পরিবারে। কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা সমীর স্টিফেন লাহিড়ি বলেন, “এ বার এতই চাপ বেকারিতে যে, আমাকে ভোরবেলায় সময় দিয়েছিল কেক বেক করানোর। তাই করিয়েছি।”

মঙ্গলাপাড়ার সুকান্ত বিশ্বাসের বেকারিতে মাঝরাত পর্যন্ত কেকের কাজ চলছে। তিনি জানান, “এখন অনেকের বাড়ির কেক ফেটিয়ে দেওয়ার কাজটাও করতে হয়। ফলে চাপ আরও বেড়ে গিয়েছে। ১৮ ডিসেম্বর থেকে বেক শুরু হয়েছে। গত বারে সে ভাবে বড়দিন হয়নি। তাই এ বার উৎসাহ প্রবল। নাওয়া-খাওয়ার সময় নেই। খুব ধরে বেক করতে হয়। কেক খারাপ হলে উৎসবটাই মাটি হয়ে যেতে পারে।” গড়ে ৪৫ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা সময় লাগে একটা কেক বেক করতে। আঁচের হেরফের হলে কেক নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই সতর্ক থাকতে হয় সব সময়।

এখন বহু অখ্রিস্টান পরিবারও কেক তৈরি করাচ্ছেন। ফলে চাপ ক্রমশ বাড়ছে। জর্জ গোমেজ় বলেন, “আমরা বাধ্য হয়ে এ বার টোকেন দিয়ে দিচ্ছি। তাতে সময় উল্লেখ করা থাকছে। সেই সময়ে এসে কেক নিতে হবে।”

christmas
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy