বিস্ফোরণের পরে। নিজস্ব চিত্র।
বসত বাড়িতে মজুত রাখা বোম ফেটে উড়ে গেল সেই বাড়ির টিনের ছাদ। মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে বহরমপুরের উপকণ্ঠে মণীন্দ্রনগর পঞ্চায়েতের বানজেটিয়া ২ এর অন্তর্গত বেলতলায়। বিস্ফোরণের ফলে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ঘরের আসবাবপত্র। বোমার আঘাতে আহত বাড়ির বাসিন্দা সত্তরোর্ধ বৃদ্ধা পদ্মরানি মণ্ডলকে উদ্ধার করে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন প্রতিবেশীরা। হাসপাতালে আসার পর থেকেই আহত পদ্মরানি প্রলাপ বকছিলেন। তাঁর শরীরের একাংশ বোমের আঘাতে ঝলসে গিয়েছে। হাসপাতাল সুপার অমিয় কুমার বেরা বলেন, “আহত ওই মহিলা অবস্থা উদ্বেগজনক।”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই বাড়িতে একাই থাকতেন বৃদ্ধা। বৃদ্ধার ছেলে প্রবীর মণ্ডল তৃণমূল কর্মী বলে এলাকায় পরিচিত। স্থানীয়রা জানান, ঘটনার পর প্রবীর এলাকা ছাড়া। পরে গ্রেফতার হয়।
ঘটনাস্থল থেকে দূরে স্ত্রী সন্তান নিয়ে পৃথক বাড়িতে থাকলেও ঘটনার আগে পদ্মরানির কাছে নিত্য আসা যাওয়া ছিল প্রবীরের। বুধবার পলাতক প্রবীরকে সাগরপাড়া থেকে গ্রেফতার করে বহরমপুর থানার পুলিশ। তাঁর পৈতৃক বাড়িতে সেই যে বোম মজুত রেখেছিল, পুলিশের জেরায় প্রবীর তা স্বীকার করেছে বলে দাবি পুলিশের। কিন্তু কী কারণে বোমা মজুত রেখেছিল সে, এর পিছনে কোনও ষড়যন্ত্র ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখছে বহরমপুর থানার পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে জানা যায় প্রবীরদের আদি বাড়ি রানিনগর।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মঙ্গলবার রাত ন’টা নাগাদ এক বিকট আওয়াজ শুনতে পান তাঁরা। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি লাগোয়া এক বাড়ির বাসিন্দা রেণুকা মণ্ডল বলেন, “বিকট শব্দ শুনে ভেবেছিলাম কারও বাড়িতে সিলিন্ডার ফেটেছে। কিন্তু ঘর থেকে বেড়িয়ে দেখি পদ্মরানির বাড়ির টিনের ছাদ উড়ে গিয়েছে। পুরো এলাকা ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে আর নাকে আসছে বারুদ পোড়ার তীব্র গন্ধ।”
কংগ্রেস মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, “বানজেটিয়া অঞ্চলে ওই ব্যক্তি একজন প্রতিষ্ঠিত মাফিয়া। তৃণমূলের মাফিয়াদের বাড়ি যে ছোটখাটো বোমা তৈরির কুটিরশিল্প তা আবার প্রমাণিত হল।” বিজেপি দক্ষিণ মুর্শিদাবাদ সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ বলেন, “তৃণমূলের শাসনে বাংলা এখন বোমগুলির আখড়া হয়ে উঠেছে।” বহরমপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকুমার অধিকারী বলেন, “বিষয়টি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নয়। পুলিশ তদন্ত করে যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেবে। পুলিশ ও প্রশাসনের প্রতি আমাদের আস্থা আছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy