Advertisement
০৫ মে ২০২৪
TB Patient

যক্ষ্মা নির্মূল করতে রোগী পরিবারের সদস্যকে প্রশিক্ষণ

রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু দিন আগে কেন্দ্রের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

সুদেব দাস
নদিয়া শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:৫১
Share: Save:

যক্ষ্মারোগ নির্মূলে এ বার আক্রান্তদের নিকট আত্মীয় বা পরিবারের সদস্যকেই পালন করতে হবে গুরুদায়িত্ব। তাঁদেরই সমন্বয় রাখতে হবে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সঙ্গে, এমনই এক নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। এর জন্য রোগী পরিবারের এক জন সদস্যকে যক্ষ্মা রোগ সম্পর্কে সচেতন করা এবং কী ভাবে রোগীর দেখভাল করা হবে— সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শও দেবে স্বাস্থ্য দফতর। আগামী দুই বছরের মধ্যে ‘যক্ষ্মা-মুক্ত ভারত’ গড়ার লক্ষ্য আগেই দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে নেওয়া হয়েছিল। নতুন এই উদ্যোগ তারই এক কর্মসূচি বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা।

রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কিছু দিন আগে কেন্দ্রের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়। সেখানে বলা হয়— যক্ষ্মা-আক্রান্ত রোগীর বাড়ি গিয়ে ওষুধ খাওয়ানোর কাজ করবেন আশাকর্মীরা। এর জন্য রোগী পিছু মাসে অতিরিক্ত ৫০ টাকা ও রোগী যক্ষ্মা-মুক্ত হলে দায়িত্বে থাকা আশাকর্মীকে রোগী পিছু দেওয়া হবে ২৫০ টাকা। এর পর গত অগস্ট মাসের শেষের দিকে কেন্দ্রের তরফে এক নির্দেশিকায় বলা হয়— আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবারে ১৪ বছরের ঊর্ধ্বে থাকা এক সদস্যকে রোগীর দেখভালের দায়িত্ব পুঙ্ক্ষানুপুঙ্ক্ষা ভাবে পালন করতে হবে। যদি রোগীর পরিবারে কোনও সদস্য যদি না থাকে, সে ক্ষেত্রে নিকট আত্মীয় বা বন্ধুবান্ধবও ওই দায়িত্ব পালন করতে পারেন বলে জানানো হয়।

ওই সদস্যের গুরুদায়িত্ব কী থাকবে? চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন— রোগীকে সময়মতো ওষুধ খাওয়ানো, ওষুধ খাওয়ার পর শরীরে আর অন্য কোনও সমস্যা দেখা দিচ্ছে কিনা, নির্দিষ্ট সময়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে রোগী পরীক্ষা করাচ্ছেন কিনা, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দেওয়া পরামর্শ রোগী কতখানি মেনে চলছেন, চিকিৎসায় রোগী কতখানি সুস্থতা বোধ করছেন ইত্যাদি বিষয় পর্যবেক্ষণ করার কথাই ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে।

এর আগে যক্ষ্মা দূরীকরণে ‘নিক্ষয়’ অভিযান চালু হয়। তাতে রাজ্যের বেশ কিছু জেলা যক্ষ্মা দূরীকরণের মাপকাঠির নিরিখে সোনা, রুপো ও ব্রোঞ্জ পদক জয় করে। ২০১৫ সালের তুলনায় কাজ কতখানি এগিয়েছে, তার নিরিখেই গত বছর নদিয়া ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলা ব্রোঞ্জ ও সোনা পেয়েছিল। সারা বাংলা প্যারামেডিক্স অ্যান্ড মেডিক্যাল টেকনোলজি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যক্ষ্মা দূরীকরণের ক্ষেত্রে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার যৌথ ভাবে যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, তাতে নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে। তবে এই ক্ষেত্রে শুধুমাত্র প্রশাসন বা স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগই নয়, আক্রান্ত রোগীর পরিবারকেও সংশ্লিষ্ট দফতরকে সহযোগিতা করতে হবে।’’

রোগী পরিবারের এক জন সদস্যের উপরে যক্ষ্মা রোগীর প্রতি দায়িত্ব পালনের নির্দেশিকা জারি করা কতখানি কার্যকরী? অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (রানাঘাট মহকুমা) পুষ্পেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘যক্ষ্মা রোগের চিকিৎসা বাড়িতে বসেই সম্ভব। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, আক্রান্ত রোগী কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠলে ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেন। অনেকে আবার কিছু দিনের মধ্যেই কর্মজীবনে ফিরে যাচ্ছেন। ফলে, সাময়িক রোগ থেকে মুক্তি মিললেও রোগ নির্মূল করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই এই উদ্যোগ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nadia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE