Advertisement
১৯ মে ২০২৪
Murder

শ্বশুর বাড়ি ফিরতে চান না স্ত্রী, রাগে নাবালক ছেলেকেই কুপিয়ে খুন! নদিয়ায় অভিযুক্ত বাবা

রবিবার রাতে নদিয়ার রানাঘাটের বেগোপাড়ায় ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত নাবালকের নাম সায়ন মণ্ডল (১৩)। অভিযুক্ত বাবা পলাতক। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চলছে।

—প্রতীকী ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
রানাঘাট শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৩ ২০:২৪
Share: Save:

পারিবারিক বিবাদের জেরে শ্বশুর বাড়ি ছেড়েছিলেন বধূ। ছেলেকে নিয়ে উঠেছিলেন বাপের বাড়িতে। স্ত্রী-পুত্রকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছিলেন স্বামী। কিন্তু স্ত্রী শ্বশুর বাড়িতে ফিরে যেতে রাজি না হওয়ায় বচসা বেধেছিল দম্পতির মধ্যে। তার চূড়ান্ত পরিণতিতে প্রাণ গেল তাঁদের নাবালক সন্তানের! রাগের বশে ছেলেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপ মেরে খুনের অভিযোগ উঠল বাবার বিরুদ্ধে। প্রৌঢ়ের আক্রমণে গুরুতর জখম হয়েছেন স্ত্রী এবং তাঁর মা-ও। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। রবিবার রাতে নদিয়ার রানাঘাটের বেগোপাড়ায় ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত নাবালকের নাম সায়ন মণ্ডল (১৩)। অভিযুক্ত বাবা পলাতক। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চলছে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, বেগোপাড়ার বাসিন্দা বছর পয়তাল্লিশের অভিজিৎ মণ্ডলের সঙ্গে ওই পাড়ারই মিতালি মণ্ডলের বিয়ে হয় ১৮ বছর আগে। গত কয়েক বছর ধরেই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে তাঁদের মধ্যে দাম্পত্যকলহ চলছিল। মাস কয়েক আগে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে যান মিতালি। স্ত্রী-পুত্রকে বাড়ি ফেরাতে রবিবার সেখানেই যান অভিজিৎ। কিন্তু মিতালি ফিরে যেতে অস্বীকার করেন। তা নিয়ে একপ্রস্ত অশান্তি হয় দু’জনের মধ্যে। অভিযোগ, এর পর রাতে আড়াইটে নাগাদ ধারালো অস্ত্র নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে এসে স্ত্রীর উপরে চড়াও হন অভিজিৎ। সেই সময়ে মাকে বাঁচাতে গিয়ে অস্ত্রের কোপ লাগে ছেলের গায়ে। ঘটনাস্থলে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে নাবালক। পরিবারের অভিযোগ, ছেলেকে কোপ মারার পরেও থামেননি অভিজিৎ। ধারালো অস্ত্র দিয়ে মিতালি ও শাশুড়ি মেনকা মণ্ডলকেও আঘাত করেন তিনি। চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে ছুটে আসেন স্থানীয়েরা। তাঁদের দেখেই ঘটনাস্থল থেকে পালান অভিজিৎ। এর পর পড়শিরাই জখম তিন জনকে রানাঘাট হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া সায়নকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মিতালির গলায় গভীর ক্ষত রয়েছে। তবে রক্তক্ষরণ বন্ধ হওয়ায় তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। অন্য দিকে, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জেরে শাশুড়ির অবস্থা আশঙ্কাজনক। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় রানাঘাট থানার পুলিশ। রেকর্ড করা হয়েছে দুই আহতের বয়ান। সায়নের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত অভিজিতের বোন সোনালি মণ্ডল বলেন, ‘‘অশান্তির জন্য বৌদি বাপের বাড়ি চলে গিয়েছিল। তাই নিয়ে অশান্তি আরও বাড়ে। খবর পেলাম ধারালো অস্ত্র নিয়ে গিয়ে ভাইপোকে খুন করেছে দাদা। বৌদি ও তার মাকেও কুপিয়েছে। তার পর থেকেই আমাদের সঙ্গে আর কোনও যোগাযোগ নেই দাদার।’’

রানাঘাটের এসডিপিও প্রবীর মণ্ডল বলেন, ‘‘তিন জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসার পর এক জনের মৃত্যু হয়েছে। ইতিমধ্যেই মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Murshidabad
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE