Advertisement
E-Paper

উর্দিধারীর মেদ কমাতে থানায় জিম

চেহারা হবে চাবুকের মতো, আর ক্ষিপ্রতা হবে টগবগে। শারীরিক সক্ষমতাই যে পুলিশে চাকরি করার অন্যতম প্রধান শর্ত তা সবাই মানেন। তা না-হলে তাঁরা দুষ্কৃতীদের ধরবেন 

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৮ ০২:১৭

চেহারা হবে চাবুকের মতো, আর ক্ষিপ্রতা হবে টগবগে। শারীরিক সক্ষমতাই যে পুলিশে চাকরি করার অন্যতম প্রধান শর্ত তা সবাই মানেন। তা না-হলে তাঁরা দুষ্কৃতীদের ধরবেন কী করে?

কিন্তু ক্রমাগত রাজ্যের সর্বত্র পুলিশের চেহারার অবনতি ঘটছিল। কয়েক বছর চাকরির পরেই শরীরে থলথলে মেদ এবং পেট চন্দ্রকলার মতো বাড়তে-বাড়তে মাটির জালার মতো! দৌড়ে অপরাধী ধরা দূরে থাক, দু’পা জোরে হাঁটলেই হাঁফ ধরে। তা নিয়ে চলচ্চিত্র থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিও সর্বত্র ব্যঙ্গবিদ্রূপও হয়েছে ঢের। এমনকী কয়েক মাস আগে কলকাতা হাইকোর্টে মামলাও ঠুকে দিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। তার প্রেক্ষিতে পুলিশকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছিল কোর্ট। এ বার পুলিশকর্মীদের ভুঁড়ি কমিয়ে সুঠাম করে তুলতে উদ্যোগী হয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন।

জেলার কিছু থানায় গড়া হচ্ছে জিম। সেখানে নিয়মিত শরীরচর্চার পাশাপাশি ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ মিলবে। তাঁরাই শারীরিক অবস্থা বিচার করে খাবারের চার্ট তৈরি করে দেবেন। মুর্শিদাবাদের রানিনগর, সালার ও সাগরদিঘি থানার ভেতরে জিম তৈরি করা হয়েছে। বাকি থানাগুলিতেও আগামী এক মাসের ভেতরে জিম তৈরি হবে। এক-একটি জিম তৈরিতে ৫০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। ইতিমধ্যে এক ডায়েটিশিয়ানের দেওয়া ফর্ম জেলার থানায়-থানায় এবং পুলিশ লাইনে পাঠানো হচ্ছে।

মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন,“ওজন ঠিক রাখতেই হবে। শরীর ভাল থাকলে কাজে স্ফূর্তি আসবে, মনও ভাল থাকবে।’’ পুলিশ সুপার জানান, শুধু থানার চাকচিক্য বাড়লেই হবে না, যাঁরা সেখানে কাজ করবেন সেই পুলিশ অফিসারদেরও শারীরিক ভাবে সক্ষম হতে হবে। তাই পুলিশে চাকরির আবেদনের জন্য শারীরিক দক্ষতা, উচ্চতা, ওজনের আলাদা মাপকাঠি নির্দিষ্ট থাকে।

পুলিশেরও যে ‘ফিট’ থাকা দরকার তা মানছেন নদিয়ার পুলিশ সুপার রূপেশ কুমারও। তিনি বলেন, ‘‘ফিট থাকার জন্য জিম তো অত্যন্ত জরুরি। আমরা ভাবছি, মুর্শিদাবাদের মতো এমন কোনও বন্দোবস্ত এখানে করা যায় কি না।’’ প্রবীণ পুলিশ কর্মীদের অনেকেই জানাচ্ছেন, অতীতে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের চাকরিতে যোগ দিতেন বিহার ও উত্তরপ্রদেশের লোকেরা। তাঁদের শরীরচর্চা ছিল দেখার মতো। তাঁরা নিয়মিত ভোরে উঠে মুগুর ভাঁজা থেকে শুরু করে খাবার-দাবারে নিয়ন্ত্রণ—সব মেনে চলতেন। পেটানো চেহারা ছিল, কিন্তু বাড়তি মেদ থাকত না। চাকরিতে যোগ দেওয়ার আগে যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে চাকরিতে ঢোকার পড়ে তার চর্চা থাকছে না।

ফিজিক্যাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ রাজেশ প্রামাণিকের কথায়, ‘‘শরীরে, বিশেষ করে পেটে মেদ জমা সবচেয়ে খারাপ। এতে হৃগরোগের আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে শরীরের সক্রিয়তা নষ্ট হয়ে যায়। কোমর, ফুসফুস ও মেরুদণ্ডের উপরে প্রবল চাপ পড়ে। এই ভাবে অন্তত পুলিশের কাজ হতে পারে না।’’

Police Gross
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy