E-Paper

খরচ জোগাড়ের দুশ্চিন্তা যাচ্ছে না দুই জিমন্যাস্টের

রাইনা জানিয়েছে, তার বাবা কল্যাণীতে নিরাপত্তা রক্ষীর কাজ করেন। অন্য দিকে অঙ্কৃশের বাবা সেলাই মেশিন মেরামতের কাজ করেন। স্বাভাবিক ভাবেই তাদের পরিবারের পক্ষে এত টাকা দেওয়া সম্ভব নয়।

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় 

শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৯:২৫
অঙ্কৃশ কর্মকার (বাঁ দিকে), রাইনা মজুমদার (ডান দিকে)।

অঙ্কৃশ কর্মকার (বাঁ দিকে), রাইনা মজুমদার (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

যে সময়ে ওদের ডুবে থাকার কথা নিরবচ্ছিন্ন অনুশীলনে, ঠিক তখনই ওরা দরজায় দরজায় ঘুরে বেরাচ্ছে অর্থের জন্য। সে টাকাও বিরাট কিছু নয়। মাত্র তিন লক্ষ টাকা হলেই আগামী ১৫ অক্টোবর নবদ্বীপের রাইনা মজুমদার এবং অঙ্কৃশ কর্মকার ধরতে পারবে উজবেকিস্তান যাওয়ার উড়ান। কিন্তু টাকার অভাবে অ্যাক্রোব্যাটিক জিমন্যাস্টিকসের এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের প্রতিনিধি হয়ে আদৌ অংশগ্রহণ করতে পারবে কিনা, তা নিয়ে ঘোর সংশয়ে নবদ্বীপ তথা রাজ্যের দুই জিমন্যাস্ট।

আগামী ১৮-২০ অক্টোবর উজবেকিস্তানের তাসখন্দে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ত্রয়োদশ সিনিয়র জুনিয়র অ্যাক্রোব্যাটিক জিমন্যাস্টিকস এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ। ফেডারেশন অফ ইন্টারন্যাশনাল জিমন্যাস্টিক (ফিগ) পরিচালিত সেই প্রতিযোগিতায় মিক্সড পেয়ার বিভাগে ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার যোগ্যতা অর্জন করেছে নবদ্বীপের ওই দুই জিমন্যাস্ট। প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে চিন, জাপান, তাইওয়ান, হংকং, কোরিয়া-সহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ। তার আগে গত ২৬-২৭ অগস্ট জিমন্যাস্টিক ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার আয়োজনে মহারাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত ট্রায়ালে ওই ইভেন্টে সবাইকে পিছনে ফেলে ভারতীয় দলে নিজেদের জায়গা পাকা করে নিয়েছে নবদ্বীপ হিন্দু স্কুলের একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া অঙ্কৃশ কর্মকার এবং তারাসুন্দরী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির পড়ুয়া রাইনা মজুমদার।

গত ৩১ অগস্ট জিমন্যাস্টিক ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া চিঠি দিয়ে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতীয় দলে তাদের নির্বাচিত হওয়ার কথা জানানোর পাশাপাশি অংশগ্রহণের খরচ বাবদ মাথা পিছু দেড় লক্ষ টাকার একটি ফর্দও পাঠিয়েছে। যা প্রতিযোগীদের নিজেদের বহন করতে হবে। সেই টাকা জোগাড়ে করতে অনুশীলন শিকেয় তুলে দরজায় দরজায় ঘুরছে দুই জিমন্যাস্ট।

রাইনা জানিয়েছে, তার বাবা কল্যাণীতে নিরাপত্তা রক্ষীর কাজ করেন। অন্য দিকে অঙ্কৃশের বাবা সেলাই মেশিন মেরামতের কাজ করেন। স্বাভাবিক ভাবেই তাদের পরিবারের পক্ষে এত টাকা দেওয়া সম্ভব নয়। রাইনা বলে, “১০ সেপ্টেম্বর থেকে মহীশূরে দশ দিনের প্রস্তুতি শিবির শুরু হবে, আমাদের হাতে একদম সময় নেই। জানি না, আদৌ টাকা জোগাড় করে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারব কিনা।” তবে টাকার অভাবে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে না পারার অভিজ্ঞতা নবদ্বীপের আরও জিমন্যাস্টের আছে। ২০০৭ সালে একই ভাবে নির্বাচিত হয়েও অর্থের অভাবে অ্যাক্রোব্যাটিক জিমন্যাস্টিকসের এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেওয়া হয়নি অভিজিৎ দেবনাথ এবং টিঙ্কু সরকারের।

ইতিমধ্যে অঙ্কৃশ এবং রাইনাকে ২৫ হাজার করে টাকা দিয়েছেন নবদ্বীপের পুরপ্রধান বিমানকৃষ্ণ সাহা। ছাত্র অঙ্কৃশকে অর্থ সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে নবদ্বীপ হিন্দু স্কুল। বৃহস্পতিবার রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের কাছে সাহায্য চেয়ে স্থানীয় বিধায়ক পুণ্ডরীকাক্ষ সাহার চিঠি নিয়ে দেখা করতে কলকাতায় গিয়েছিল দু’জন। বিধানসভার অধিবেশনে ব্যস্ত থাকায় মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা না হলেও তাঁর দফতর আবেদনটি গ্রহণ করেছে।সময় কম, এখনও টাকার ব্যবস্থা হয়নি। রাইনা-অঙ্কৃশ আদৌ তাসখন্দে যেতে পারবে কিনা, সে কথা সময় বলবে।

ভাঙা হল নির্মাণ

শান্তিপুর: আদালতের নির্দেশে একটি বেআইনি নির্মাণ ভাঙল শান্তিপুর পুরসভা। শান্তিপুর শহরে পূর্ত দফতরের জমিতে একটি ফাস্ট ফুডের দোকান ছিল। বেআইনি নির্মাণ বলে তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও হয়। সম্প্রতি আদালত সেই নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ দেয়। বৃহস্পতিবার তা ভেঙে দেয় পুরসভা। ফাস্ট ফুডের দোকানের মালিকের দাবি, অনেক জায়গায় এ রকম জমি দখল করে অনেকেই দোকান করেছেন। ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। শান্তিপুরের পুরপ্রধান সুব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশে বেআইনি নির্মাণ ভাঙা
হয়েছে। আগেও ওঁকে কয়েক বার নোটিস করা হয়েছিল।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Nabadwip Gymnast

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy