Advertisement
E-Paper

শাটার তুলতেই বেরোল চোরাই বাইক

দু’পা এগোলেই ঝাড়খণ্ড, ও পারের চোরাই মোটরবাইক তীব্র আলো জ্বেলে নিশ্চুপে সেঁদিয়ে যাচ্ছে ফরাক্কার গ্রামে। শো-রুমের দেড় লাখি বাইক বিকোচ্ছে জলের দরে। খোঁজ নিল আনন্দবাজার ফরাক্কা এবং তার লাগোয়া এলাকায় সন্দেহজনক মোটরবাইক ধরার পরে পুলিশের খাতায়, ছিল রুমাল হয়ে গেল বেডালের মতো বেশ কিছু ট্রাকের বাইক হয়ে ওঠার নজির রয়েছে।

বিমান হাজরা

শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৯ ০৫:০৭
সপ্তাহ তিনেকের মধ্যে ফরাক্কা এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় ২৪টি চোরাই বাইক।

সপ্তাহ তিনেকের মধ্যে ফরাক্কা এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় ২৪টি চোরাই বাইক।

রামের ঠিকানায় রহিম, শ্যামের ঘাড়ে রহমত!

ছুটন্ত বাইকের নম্বর প্লেট দেখে কপালে ভাঁজ পড়ায় পুলিশ তার মোবাইল অ্যাপে চোখ রাখতেই চমকে উঠেছিল— এ তো পঞ্জাব বড়ি ট্রাকের নম্বর! দিব্যি তা দ্বিচক্র যানের পিছনে ঝুলিয়ে পিচ রাস্তায় পাখি হয়ে উড়ছে মোটরবাইক।

ফরাক্কা এবং তার লাগোয়া এলাকায় সন্দেহজনক মোটরবাইক ধরার পরে পুলিশের খাতায়, ছিল রুমাল হয়ে গেল বেডালের মতো বেশ কিছু ট্রাকের বাইক হয়ে ওঠার নজির রয়েছে। আর সে সূত্র ধরেই কখনও ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া বেওয়া সেতু কখনও বা এনটিপিসি মোড়ের কেদার সেতু এলাকা থেকে একের পর এক চোরাই বাইক ধরেছে ফরাক্কা পুলিশ।

বাইক আটকের পরে জেরা করতেই পিঁপড়ের মতো বেরিয়ে আসতে থাকে কারবারিদের নাম-ঠিকুজি। জেরায় তারা কবুলও করে, মালদহের বৈষ্ণবনগর এবং ফরাক্কা এলাকার ওই কারবারিরা আরটিও অফিসের জাল ছাপ দিয়ে বাইকের নথি নকলেও বেজায় দড়।

এ ভাবেই সপ্তাহ তিনেকের মধ্যে ফরাক্কা এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় ২৪টি চোরাই বাইক। কিছুটা যেন স্বস্তি মেলে পুলিশের। কিছুটা বুঝি নিশ্চিন্তি লাগে— যাক এ বার চোরাই বাইকের দাপট কমবে তা হলে!

দুর্গাপুজোয় বিজয়া দশমীর চাপ কাটিয়ে কিছুটা নিশ্চিন্ত মনেই ফরাক্কা থানায় বসে চলছিল গল্পগুজব। একে একে আসছেন অনেকেই বিজয়ার প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানাতে। আর তখনই বেজে উঠেছিল আইসির মোবাইল। হঠাৎই সাজো সাজো রব থানা জুড়ে। এখনই বেরোতে হবে। থানায় ঘর ভর্তি অভ্যাগতদের বসিয়ে রেখেই ‘একটু আসছি’, বলে বেরিয়ে পড়ল আইসি উদয়শঙ্করের নেতৃত্বে তিনটি গাড়ির কনভয়।

বিজয়া দশমীর পরের দিন কনভয় গিয়ে থামল সোজা হাজারপুরে। সেখানেই সিমেন্ট, হার্ডওয়ার ব্যবসায়ীর গুদামের সামনে এ ভাবে তিন তিনটি পুলিশের গাড়ি দাঁড়াতেই চমকে উঠেছিলেন গ্রামের লোকজন।

ব্যবসায়ীর গুদামের তালা খুলিয়ে ঘরে ঢুকতেই আক্কেল গুড়ুম। গুদামের মধ্যে সার দিয়ে সাজানো মোটরবাইক। পাশেই রাখা সাজানো অজস্র সাইকেল। গুণে দেখা গেল ১০১ টি মোটর বাইক। আর সাইকেলের সংখ্যা ২৪০। বিভিন্ন সূত্রে খবর আসছিল পুলিশের কাছে— নয়নসুখ পঞ্চায়েতের কোথাও বিপুল সংখ্যায় চোরাই বাইক মজুত করে রাখা রয়েছে। সস্তায় সে সব বাইক কেনাবেচাও চলছে। সেই থেকেই নজরে ছিল হাজারপুর। সেই সূত্র ধরেই খবরটা পেতেই বিন্দুমাত্র কালক্ষেপ করেনি পুলিশ।

এ দিকে, বিপুল সংখ্যায় বাইক উদ্ধারের খবর পেয়ে পরের দিন থেকেই ঝাড়খণ্ড, বীরভূম, মালদহ-সহ আশপাশ থেকে বহু বাইক হারানো মানুষজনের ভিড় বাড়তে থাকে ফরাক্কা থানায়। বাইক মেলার চেহারা নেয় ফরাক্কা থানা চত্বর!

এখানেই কি শেষ— হাসছেন থানার বড়বাবু, ‘‘এর যে কোথায় শেষ আর কোথায় শুরু, কে বলতে পারে!’’

Smuggling Crime
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy