সোমবার সকালে পুরনো কাগজের গুদামে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। রানাঘাটের উদয়পুরে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে পুরনো সামগ্রী মজুতের ওই গুদাম। দমকলের দু’টি ইঞ্জিন প্রায় পাঁচ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। সব মিলিয়ে প্রায় ২০ লক্ষ টাকার সামগ্রীর ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন গুদামের মালিক। তাঁর অভিযোগ, কেউ বা কারা ইচ্ছাকৃত ভাবে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। কী কারণে ওই আগুন, তা এ দিন সন্ধে পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। পুলিশ ও দমকলের তরফে জানানো হয়, আগুন লাগার কারণ জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
রানাঘাট-১ ব্লকের পায়রাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে রয়েছে উদয়পুর। গ্রামীণ সড়কের পাশে টিনের তৈরি একটি গুদাম ঘরে প্রায় আট বছর ধরে পুরনো সামগ্রী মজুত রেখে ব্যবসা করছেন স্থানীয় বাসিন্দা বিজয় দাস। উদয়পুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছেই রয়েছে ওই গুদামটি। সোমবার ভোর প্রায় ছ’টা নাগাদ এলাকার মানুষ জন ওই গুদাম থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখেন। খবর দেওয়া হয় গুদামের মালিককে। প্রথমে এলাকার বাসিন্দারা আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। পরে খবর যায় রানাঘাট থানা ও দমকল কেন্দ্রে।
গুদামে আগুন লাগার খবর পেয়ে তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে আসেন গুদামের মালিক। তত ক্ষণে আগুনের লেলিহান শিখা ক্রমশ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। তবে গুদামের খুব কাছে বসতবাড়ি না থাকায় বড় ধরনের বিপত্তি এড়ানো গিয়েছে। প্রথমে দমকলের একটি ইঞ্জিন আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। কিন্তু পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে আনানো হয় আরও একটি ইঞ্জিন। দু’টি ইঞ্জিনের চেষ্টায় বেলা ১১টা নাগাদ আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ছাড়া, একটি মাটি কাটার যন্ত্রের সাহায্যে গুদামের সামগ্রী বের করে আগুন নেভানো হয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই বলছেন, ওই গুদামে বেশিরভাগই ছিল পুরনো বই-খাতা, কাগজ ইত্যাদি। তাই খুব সহজেই আগুন মুহূর্তের মধ্যে ভয়াবহ আকার নেয়। বিষয়টি নিয়ে ওই গুদামের মালিক ব্যবসায়ী বিজয় বলেন, ‘‘বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না গুদামে। তাই শর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের প্রশ্নই আসে না। তা ছাড়া, রাতে গুদামে কেউ থাকে না। আমার বিশ্বাস, কেউ বা কারা গুদামে ইচ্ছাকৃত ভাবে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘সব মিলিয়ে আমার প্রায় ২০ লক্ষ টাকার ব্যবসায় ক্ষতি হল।’’
রানাঘাট দমকল কেন্দ্রের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে কী কারণে ওই গুদামে আগুন লেগেছিল, তা এখনই নিশ্চিত নয়। তা ছাড়া, অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা গুদামে ছিল কিনা, সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)