E-Paper

আগ্নেয়াস্ত্রের ছবি, অমিল জঙ্গি-যোগ

সেই পরীক্ষার রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত ওই যুবককে তারা নিজেদের কাছেই রাখছে বলে কৃষ্ণনগর জেলা পুলিশ সূত্রের খবর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:১২
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

সারা রাত ধরে পাঁচটি তদন্তকারী সংস্থার অফিসারেরা দফায়-দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন দুবাই-ফেরত যুবককে। কিন্তু কৃষ্ণনগরের ওই যুবকের জঙ্গি-যোগের কোনও প্রামাণ্য সূত্র রবিবার রাত পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) ওই যুবকের মোবাইল ফোন ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য নিয়ে গিয়েছে।

কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার অমরনাথ কে বলেন, “একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করছে। কিন্তু প্রাথমিক ভাবে জঙ্গি-যোগের মতো কিছু পাওয়া যায় নি। মোবাইলেও তেমন কিছু মেলেনি। তবে আরও ভাল করে যাচাই করতে ফোনের ফরেন্সিক পরীক্ষা করতে দেওয়া হয়েছে।”

সেই পরীক্ষার রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত ওই যুবককে তারা নিজেদের কাছেই রাখছে বলে কৃষ্ণনগর জেলা পুলিশ সূত্রের খবর।

সম্প্রতি আগ্নেয়াস্ত্র হাতে কয়েক জন যুবকের ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়েছে। গত জানুয়ারিতে তাদেরই এক জনের সঙ্গে কৃষ্ণনগরের এই সংখ্যালঘু যুবকের নিজস্বীও পোস্ট করা হয়েছিল। পহেলগামে জঙ্গি হামলার পর ওই যুবককে তদন্তের আওতায় নিয়ে আসার দাবিতে সরব হন জেলার বিজেপি নেতারা। শনিবার ওই যুবক ও তাঁর বাবা-মাকে কোতোয়ালি থানায় ডেকে জেলা পুলিশের কর্তারা দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করেন। ওই রাতেই তাঁরা জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক ভাবে ওই যুবকের জঙ্গি যোগের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কিন্তু বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা, এনআইএ এবং এসটিএফের অফিসারেরাও রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ করেন। ফিরে যাওয়ার সময়ে এসটিএফ তাঁর মোবাইল নিয়ে গিয়েছে।

পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, গত ৩ জানুয়ারি দালাল মারফত দুবাইয়ে কাজে গিয়েছিলেন ওই যুবক। একটি সোনার গয়না প্রস্তুতকারক সংস্থায় ‘বয়’-এর কাজের কথা বলে নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁকে সাফাইকর্মীর কাজ দেওয়া হয়। ওই কাজ করবেন না বলে সপ্তাহখানেক পরেই তিনি দেশে ফিরে এসে মুম্বইয়ে জামাইবাবুর কাছে ছিলেন। ইদের দিন চারেক আগে কৃষ্ণনগরে ফেরেন। তবে পারিবারিক একটি সমস্যার কারণে নিজের বাড়িতে না থেকে নতুনগ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে থাকছিলেন।

যুবকটি তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, দুবাইয়ে কাজ করতে গিয়ে সেখানে শ্রমিকদের একটি শিবিরে আমজিদ খান নামে পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার এক যুবকের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। পরে সেই যুবক ফেসবুকে তাঁর বন্ধুও হন। সেই বন্ধুর কাছ থেকেই আগ্নেয়াস্ত্র হাতে কিছু লোকজনের ছবি নিজের ফোনে নিয়ে তিনি ফেসবুকে তুলে দিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে তোলা নিজস্বীও দেন। পরে বন্ধুরা সতর্ক করায় তিনি সে সব মুছে দেন।

এ দিন কোতোয়ালি থানায় বসেই ওই যুবক বলেন, “স্মৃতি হিসাবেই আমজিদের সঙ্গে নিজস্বী তুলেছিলাম। পরে কিছু না ভেবেই ছবিগুলো ফেসবুকে দিই। তার জন্য এত বড় বিপদে পড়তে হবে, ভাবিনি।” যুবকের মা বলেন, “মেয়ে-জামাইয়ের জিনিস বন্ধক দিয়ে পাঁচ শতাংশ সুদে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা ঋণ করে ছেলেকে দুবাই পাঠিয়েছিলাম। সেটাই কাল হয়েছে। ও পুরোপুরি নির্দোষ।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Dubai

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy