অধীর চৌধুরী এবং বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী তাঁকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মুখ হিসাবে দেখতে চান। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে অধীরের এই ‘ভূয়সী প্রশংসা’র পর শুরু হয়েছে রাজনৈতিক শোরগোল। তৃণমূলের কটাক্ষ, বাংলায় কংগ্রেসের রাজনৈতিক দেউলিয়াপনা প্রকাশ হয়েছে অধীরের কথায়। বিজেপি বলছে, এক জন বিচারপতিকে নিয়ে এমন রাজনৈতিক মন্তব্য করা সমীচীন নয়। কিন্তু তাঁকে নিয়ে অধীরের ‘রাজনৈতিক মন্তব্য’ কী ভাবে দেখছেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি নিজে?
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তিনি মানুষের ভালবাসায় অভিভূত। মুর্শিদাবাদ সফরে এসে তিনি বলেন, ‘‘আমি কখনও ভাবিনি যে, বহরমপুরের মানুষ আমাকে এত ভালবাসবেন। সকাল থেকে কত মানুষ দেখছি! সেই ট্রেন থেকে নামার পর দেখছি যে, স্রোতের মতো মানুষ আসছেন। অভিনন্দন জানাচ্ছেন।’’
বস্তুত, সেই শিক্ষক নিয়োগ মামলার পর থেকে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের একের পর এক রায় নিয়ে শোরগোল হয়েছে। আলোচনা হয়েছে। হয়েছে সমালোচনাও। তবে কোনও বিচারপতিকে নিয়ে জনমানসে এমন ‘উন্মাদনা’ আগে প্রত্যক্ষ করা যায়নি। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় কাজের সূত্রে যেখানেই যান, সেখানেই তাঁকে ছেঁকে ধরেন মানুষ। এ নিয়ে বিচারপতির মন্তব্য, ‘‘আমি ভগবান-টগবান কিছু নই। বিচারব্যবস্থা থেকেই আমি তৈরি হয়েছি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘যদি সত্যি অভিনন্দন কারও প্রাপ্য হয়, তবে সেটা ভারতীয় বিচারব্যবস্থা এবং ভারতীয় সংবিধানের।’’ বিচারপতি আরও বলেন, ‘‘হাই কোর্ট বা জেলা কোর্টে এখন অনেকেই চেষ্টা করছেন। হয়তো শুরুটা আমিই করেছিলাম। এখন অনেকে ‘ফলো’ করছেন।’’ আর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির মন্তব্য নিয়ে কিছু ভাবছেন? সঙ্গে সঙ্গে বিচারপতি বলেন, ‘‘আমি শুনেছি কথাটা (অধীরের)। এটা নিয়ে আমি কিছু বলব না।’’
মুর্শিদাবাদ সফরে এসে আইনি প্রক্রিয়া নিয়েও কথা বলেছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে সত্যকে বার করে নেওয়া, খুবই কঠিন কাজ। তাতে তো সময় কিছুটা লাগেই।” তার পর তাঁর সহাস্য মন্তব্য, “আমাদের এখানে তো এখনও আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স (এআই) আসেনি যে, সুইচ টিপে দিলেই হল।”
উল্লেখ্য, অধীর বলেছেন, রাজ্যের মানুষের আস্থা, বিশ্বাস এবং ভরসা অর্জন করেছেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মুখ করে একটা নির্বাচন হোক। সেই নির্বাচন হলে আমি কায়মনোবাক্যে ওই মানুষটিকে ভোট দিতে লাইনের সবচেয়ে আগে দাঁড়াব। বাংলার মানুষ তাঁকে বিশ্বাস করছে। ভরসা করছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy