ডিন পদে নিয়োগপত্র দিয়েও তা স্থগিতের নির্দেশ দিল কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা বিভাগের স্নাতকোত্তর অনুষদের ডিন পদে প্রসেনজিৎ দেবকে নিয়োগের প্রশ্নে যোগ্যতা সংক্রান্ত আপত্তি উঠেছে। সেই প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি সামনে আসতেই আলোড়ন পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে। তবে এই ঘটনা প্রথম নয়। ২০১৫ সালে প্রসেনজিতের অধ্যাপক পদ খারিজ করে তাঁকে ফেরানো হয়েছিল ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদে।
সূত্রের খবর, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অধীনে ‘অ্যাডাল্ট কন্টিনিউইং এডুকেশন অ্যান্ড এক্সটেনশন সেন্টার’ তৈরি হয়। পরে তার নাম হয় ‘লাইফ লং লার্নিং ডিপার্টমেন্ট’। প্রথমে এখানে ডিরেক্টর পদ থাকলেও পরে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন সেই পদের পরিবর্তন আনে। ডিরেক্টর পদে থাকা ব্যক্তিদের শিক্ষাগত যোগ্যতার নিরিখে ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নিয়ম মেনে অধ্যাপক পদপ্রাপ্তি হয়। সেই কাজের জন্য কমিটিও গঠিত হয়। জানা গিয়েছে, প্রসেনজিৎকে প্রথমে অস্থায়ী সময়ের জন্য অধ্যাপক পদে নিযুক্ত করা হয়। পরে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য সেই অধ্যাপক পদ স্থায়ী করেননি। ফলে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রসেনজিৎকে তাঁর পূর্বতন পদ অর্থাৎ ডেপুটি রেজিস্ট্রার পদে ফেরানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। উপাচার্যের পরিবর্তন হলে এক বছরের মধ্যে প্রসেনজিৎ আবার অস্বচ্ছ ভাবে অধ্যাপক পদে ফিরে আসেন বলে একটি সূত্রের দাবি। ২০১৬ সালের জুন মাসে তিনি ফের অধ্যাপক পদে বহাল হন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্রের খবর, অধ্যাপক পদে নিযুক্ত হওয়ার যে মানদণ্ড, শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রয়োজন তাতে খামতি রয়েছে প্রসেনজিতের। নির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে নতুন করে গোটা বিষয়টি সামনে আসতে প্রসেনজিৎকে ডিন পদে নিয়োগ পত্র দিয়েও, তা স্থগিতাদেশের নির্দেশ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে শুধু ডিন পদ নয়, তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় আগামীতে অধ্যাপক পদ থাকা নিয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে জল্পনা রয়েছে।
কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে গত সোমবার প্রকাশিত নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিজ্ঞানের স্নাতকোত্তর অনুষদের ডিন, শিক্ষা বিভাগের স্নাতকোত্তর অনুষদের ডিনের দায়িত্বও পালন করবেন। অর্থাৎ অধ্যাপক নিলাশীষ নন্দীকে স্নাতকোত্তরের বিজ্ঞান ও শিক্ষা বিজ্ঞান দুই বিভাগের ডিনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়ে প্রসেনজিৎকে মঙ্গলবার একাধিক বার ফোন করা হলেও, তিনি সাড়া দেননি। মেলেনি মোবাইল বার্তার জবাব। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কল্লোল পাল বলেন, ‘‘একটি অভিযোগ জমা পড়েছিল। তার ভিত্তিতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম মেনে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। নিয়ম মেনেই আমরা এগোচ্ছি।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)